আসসালামু আলাইকুম।হুজুর দয়া করে ক্ষমা করবেন।বিরক্ত হবে প্লিজ।পয়েন্ট আকারে উত্তর গুলো পেলে ইনশাআল্লাহ সব দূর হয়ে যাবে।
তালাকের ওয়াসওয়াসা আমাকে ছাড়ছেই না।আমি সব সময় ওয়াসওয়াসায় ভোগী।কোন কিছু নিশ্চিত জানলেও ওয়াসা ছাড়ে না।নতুন করে সন্দেহ তৈরি হয়।এর ফলে নিশ্চিত বিষয়টি আবার দূর্বল হয়ে যায়।সঠিক প্রমাণ ছাড়া কোন ভাবেই দূর হয় না।বার বার নেটে সার্চ করে নিশ্চিত হই।কিন্তু আটকে যাই তখন যখন আমার সন্দেহকে আর প্রমাণ করা সুযোগ থাকে না।
এই পর্যন্ত আমার সাথে যা হয়েছে।
(ঘটনা ১)
প্রথমে ওয়াসওয়াসা আসে যে মনে মনে তালাক দিলে হয় কি না।জানলাম হয় না।কয়েকদিন শান্ত থাকি।
(ঘটনা ২)
আবার ওয়াসওয়াসা আসে, আমি মনে মনে চিন্তার সময় বলে ফেলিছিলাম কি না,বললেও কি বলে ছিলা।শর্ত দিয়েছিলাম নাকি শর্ত ছাড়া।আবার এও মনে হয় আসলে আমি শুধু একাকি চিন্তাই করেছিলাম বলছিলাম না।এ-ব্যাপারে জানলাম এইভাবে নিশ্চিত ভাবে না জানলে তালাক হয় না।আরো কিছু দিন নিশ্চিত থাকি।
(ঘটনা ৩)
আবার ওয়াসওয়াসা আসে, যে আমি তো তালাকের বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্ন কথা, 'যা স্ত্রীকে উদ্যেশ্য করে লিখলে বা বললে তলাকা হয়ে যায়'সেই গুলো লিখে জানার জন্য গুগুলে, সাইটে, সার্চ করি,প্রশ্ন লিখি,মেসেঞ্জারে প্রশ্ন পাঠাই,অনেক সময় শব্দ করেও হয়ত মাসয়ালা পড়ি।এজন্যও তালাক হয়ে গেলে কি না।জানলাম এইভাবেও লিখা বা বলার দ্বরা তালাক হয় না।
এখানে প্রশ্ন (ঘটনা ১,২,৩) এর বিষয়ে আমি যা জানলাম।অর্থাৎ এই সূরত গুলোতে তালাক হয় না।আমার জানা কি ঠিকা আছে?
(ঘটনা ৪)
এইভাবে কিছু দিন পর আমার স্ত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া আগের একটি ঝগড়ার কথা মনে পরে।যদিও সেই দিনই আমি নেটে গিয়ে এই সার্চ করি এবং আমার জ্ঞান অনুযায়ী নিশ্চিত হই তালাক হয়নি।জ্ঞান অনুযায়ী বলতে তখন আমার জ্ঞান ছিল নির্দিষ্ট করে স্ত্রীকে উদ্যেশ্য করে তালাক শব্দ না বললে তালাক হয় না।স্ত্রীও আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছিল যে কথাগুলোর দ্বারা হয়ে যাবে কি না।আমি তখন বলেছিলাম কিছুই হয়নি।আবার ঘাটনার দিনই যখম আমরা মিলে যাই তখন একবার মজা করে বলেছিল হেসে হেসে বলেছিলা আমাকে আবার বিয়ে করতে হবে।আমি হয়ত বলেছিলা আরে নাহ্ কিছুই হয়নি।
তখন আমার কেনায়া,বাইন,তালাকে মজলিশ এতো কিছু জানা ছিল না।ইদানিং এই সব বিষয় জানার কারনেই আগে ঝগড়াটির বিষয়ে নতুন করে ভাবনা আসে।এজন্য আমি কুরআনের জুতি সাইটে ঘটনাটি ঠিক এইভাবে লিখে ফতুয়া জানতে চাই।
"স্ত্রীর আমার অপছন্দ নিয় একটি কাজ করে ফেলে প্রায় ৫ মাস আগে।
আমি তখন তাকে ভয় দেখানোর উদ্যেশ্যে, তালাকের কোন নিয়ত ছাড়া।
বলি যে,
আম্মা বাড়িতে আসলে সব শেষ করে দিব,তোমাকে আর ভাল লাগে না।তোমার যোনিতে আমার টা আর লাগব না (গ্রামের খারাপ ভাষায় বলেছিলাম)।অর্থাৎ তোমার সাথে আর সহবাস করব না এই রকম কথা সব গুলো ভবিষ্যৎ বাক্যে বলেছিলাম । সে ভয়ে আমাকে শান্ত করার চেস্টা করে,সেই দিনেই আমরা মিলে যাই।সে মোটেও তালাক চাই নি।
এখন আমি কেনায়া তালাকের কথা জানতে পারি এখন আমার ভয় হচ্ছে। আমার মনে তালাকের কিঞ্চিত নিয়তও ছিল না।‎
হুজুর আমাদের কোন ক্ষতি হল?"
উমায়ের কুব্বাদী হুজুর ফতোয়া দিলেন,তালাক হয়নি।কিন্তু ইল্লা কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।
তার পরেও আমার ওয়াসয়াসা কমেনি।আমার মনে হচ্ছে যে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হওয়া দরকার যে সেদিন এইগুলো ছাড়া অন্য কিছু বলেছিলাম কি না।তার পর থেমে থেমে ৫-৬ বার জিজ্ঞেস করি তাকে জিজ্ঞেস করি, বলে আপনি এর ছাড়া আর কিছু বলেন নি।এমনকি তাকে প্রশনটিও দেখিয়ে বলি যে দেখত প্রশ্নটি করা ঠিক আছে কিনা।সে বলে ঠিক আছে।কিন্তু হেসে হেসে একবার বলে যে হ্যা অন্যকিছু বলেছিলেন।আমি বলি কি বলে ছিলাম বল প্লিজ আমার টেনশন হচ্ছে।তখন সে বলে আরে নাহ্ কিছু বলেন নি।এমনিই দেখলাম আপনি কি করেন।
তারপর স্ত্রীর উপস্তিতিতে এই সাইটের আরো কিছু মাসয়ালা পড়ে তাকে শুনাই বুঝাই।যদি সতর্ক ছিলাম আমার দ্বারা যেন তালাক শব্দ উচ্চারণ না হয়।
(ঘাটনা ৪) এর আলোকে কয়েকটি প্রশ্ন জানতে চাচ্ছি,কারণ উমায়ের কুব্বাদি হুজুরের কাছে প্রশ্ন করার সময় এই প্রশ্ন গুলো উল্যেখ করিনি,মজা করে যে এইগুলো বলেছিল তা জানাই নি।
(ক)স্ত্রী যে মজা করে বলেছিল, আবার বিয়ে করুন।আমি উত্তরে হয়ত বলেছিলাম আরে নাহ্ কিছু হয়নি।তার এই কথাটির দ্বারা কোন তালাক হবে?
(খ)একবার যে সে মজা করে বলেছিল "হ্যা অন্যকিছু বলেছিলেন" পরক্ষনেই আবার বলে না বলেন নি।আসলে আমি দেখছিলাম আপনি কি করেন।
(গ)স্ত্রীর উপস্থিতিতে তাকে শুনিয়ে এইভাবে সাইটের তালাক বিষয়ে মাসয়ালা গুলো তাকে বুঝানোর জন্য পড়ে তাহলে এবং উল্যেখ্য সেইখানে এমন বাক্যও আছে যা স্ত্রীকে উদ্যেশ্য করে তালাক হয়ে যাবে।তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে?
(ঘ)"আম্মা বাড়িতে আসলে সব শেষ করে দিব" এটি কি কেনায়া বাক্য নাকি ভবিষ্যৎ সূচক বাক্য?
এখন মাঝে মাঝে তালাকের নিয়ত ছিল কি সন্দেহ হচ্ছে।যদিও আগে উমায়ের হুজুররের কাছে প্রশ্ন করার সময় কিঞ্চিৎ নিয়তও ছিল না।তাকে সাবধান করর জন্যই বলেছিলাম।
(ঘটনা ৫)
দ্বীনে ফেরার আগে একটি মেয়েয়ের সাথে প্রেম ছিল।দ্বীনে ফেরার পর আলহামদুলিল্লাহ বাদ দিয়েছি।
সে শুনতে পারে আমি বিয়ে করি।এই জন্য বারবার ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করে।
এক পর্যায়ে আমি বিরক্ত হয়ে বলি যে তুমি যদি আমার বিয়ে করা বউ হইতা তাহলে তালাক দিয়ে দিতাম,হয়ত এভাবেও বলেছিলাম যে তোমাকে তালাক দিলাম।এ কথা শুনে সে খুব কস্ট পায়।সে সময়েই বা কয়েকদিন পর আমাকে বলে যে তুমি না বলেছিলে আমি বিয়ে করা বউ হলে তালাক দিবে।তোমার তো বিয়ে করা বউ আছে তাহলে তাকে দাও।
ঘটনাটি অনেক দিন আগের হওয়ায় তার পর আমি উত্তরে ঠিক কি বলেছিলাম কিছুতেই মনে পড়ছে না।সিউর মনে হচ্ছে যে তখন আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেই নি।কেনই বা দিব।
কিন্তু আমার ওয়াসওয়াসা হচ্ছে যে..আমি যদি এই ভাবে বলে থাকি যে, ''ঠিক আছে দিব নে,অমুক কাজ করলে দিব" বা আরো কিছু যা বললে তালাক হবে অথাবা শর্ত হয়ে যাবে।
ঘটনা ৫ এর আলোকে প্রশ্নঃ-
(ক)আমি কি করব ওই মেয়েকে কি জিজ্ঞেস করব?নাকি তালাক হয়নি ভেবে নিব?এই মেয়ের সাথে আমার কোন কথা হয় না।সে খুব বাজে মেয়ে।আমার বার বার ইচ্ছে করে যে তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করি যে, আসলে সেই দিন সে কি বলেছিল আর আমি কি বলেছিলাম।কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে সে যদি আবার সুযোগ নিয়ে উল্টাপাল্টা বলে?
আসলে এই পুরো ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমি তালাকের হয়েছে কি না সে বিষয়ে চিন্তাও করিনি।
যদি আমি উত্তরে এমন কিছু বলতাম যা বললে হয়ে যাবে।তাহলে তো আগেই টেনশন করতাম।
এখন এই গুলো নতুন করে মাথায় এসেছে কেনায়া,শর্ত যুক্ত তালাক ইত্যাদির মাসয়ালা পড়ার কারণে।
(ঘটনা ৬)
শাক দিয়ে আমি খাচ্ছি।সাথে ঘরের বিড়ালটিও ছিল।আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম শাক দিয়ে ভাত দিলে বিড়াল খাবে?সে বলল- না খাবে না।আমি বলেছি- খাবে দেই।সে বলছে যদি না খায়?ঠিক তখনই আমি মনে মনে ভাবি, ফেলি শাক দিয়ে না খাইলে তুমিও নাই।মুখে বলিনি ভয় পেয়ে যাই মুখে যেন চলে না আসে।
তার পর ঠিক এই কথাটি বলি আমার স্পট মনে আছে -
''না খাইলে তো নাই ,কি আর করা''
এই কথাটি বলার সময় নিয়ত ছিল কি না বলতে পারছি না।
(ঘটনা ৬) এর আলোকে আমার প্রশ্নঃ-
(ক)আমার এই কথাটি ''না খাইলে নাই কি আর করা'' বলার সময় হয়ত মনে মনে ছিল ''না খাইলে তুমি নাই''।
এটাকে কি নিয়ত ধরব?
(খ)নিয়ত সহকারে কথাটি ঘটনা প্রেক্ষিতে '' না খাইলে কি আর করা'' বললেও কি তালাক হয়ে যাবে?
অবশ্য তখন আমি বিড়ালটিকে আর শাক দিয়ে খাবার দিয়ে চেক করি নি। খাবে কি না।
(গ) আমি বা অন্য কেউ যদি বিড়ালটিকে শাক দিয়ে খাবার দেয় তাহলে কি কোন সমস্যা হবে?
সকাল থেকে আমার খুব টেনশন হচ্ছে।
সব দিক থেকে বিবেচনা করে আমাকে কিছু পরামর্শ দিন।
তালাকের ক্ষেত্রে সন্দেহকে প্রমান করার জন্য কি চেস্টা করব?নাকি বাদ দিয়ে দিব?
আমার আগে এমনও মনে হত এতো সন্দেহের উপর থেকে লাভ কি।যদি কোন কারণে হয়ে যায়?যদি সত্যি সত্যিই হিয়ে যায় আর আমার মনে না থাকে?
মাতার একটা পাশ থেকে এই সব চিন্তা ছেড়ে যাচ্ছে না।এমনকি স্ত্রীর সাথে থাকলেও এই গুলো মাথায় আসে।
আল্লাহ্ তা'য়ালা আমাকে সহ সকল ওয়াসওয়াসা গ্রস্থদের সাহাযা করুন।উম্মতের জন্য আপনাদের খেদমত কেউ কবুল করুন।