আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
326 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (30 points)
edited by
আসসামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লা।
১।কোন মেয়েকে তার স্বামী তালাকের অধিকার দিয়েছে।তার স্বামী যদি তালাক চাই বা দিবে বলে।এরপর স্ত্রী যদি বলে তুর সাথে সম্পর্ক নাই,আর যোগায়োগ করবি না,তুই হারাম আমার জন্য।নিজেকে বা নিজের নফসকে তালাক না দিয়ে স্বামীকে উদ্দেশ্যে করে  এসব বললে।আর এসব কথা নিজের দিকে ইন্গিত না করে বললে কি সমস্যা হবে ওদের।রাগের মাথায় স্ত্রী বললে?মোট কথা স্ত্রী নিজেই জানে না নিজেকে তালাক দেওয়ার কথা আর নিজেকে তালাক না দিয়ে এসব কথা স্বামীকে বললে কিছু হয়? নিজের  দিকে ইন্গিত না করে বললে কিছু হয়?

২।মুখ ও ঠোট না নেড়ে কাউকে কথার উত্তর "হুম" বলার আগে থেকে যদি করো মনে ওয়াসওয়াসার কারনে তালাকের চিন্তা ঘুরে তাহলে কি তালাক হবে? অন্যজনের কথার উত্তর দিয়েছে,কিন্তুু ভয় হচ্ছে ওর।আর মুখ দিয়ে কেউ তালাকের কথা না বলে মনে আসলে হ্যা বললে কি তালাক হয়?জানার জন্য প্রশ্ন করলাম।

৩।একজন ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত মানুষ যদি ভাবে পরে শব্দ হবে যে ওটা তালাকের কিন্তুু তালাকের কথা উচ্চারন করে না।ওয়াসওয়াসার কারনে  সেরকম ভাবে ভয়ে মানে শব্দটা তালাকের তাহলে কি তালাক হয়?আমি প্রশ্নটা জানার জন্য জিগ্যেস করেছি।

৪।একজন স্ত্রী সে মারাত্বক ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত।কেনায়া তালাক সম্পর্কে জানার পর থেকে আরো বেশি।সাধারন অনেক কথাও আছে যা কেনায়া বাক্যের মত।সে সবসময় স্বামীকে জিগ্যেস করে কোন তালাকের নিয়তে বলেছে কিনা যতবার বলে ততবার জিগ্যেস করে।স্বামী বলে না বলে নি নিয়তে।স্বামী বিরক্ত হয়ে যায় রেগে যায় আর এসব কথা জিগ্যেস না করতে বলে।আর স্বামী বলেছিল কোনদিন ছেড়ে দিবে না।সে কি করবে ভবিষ্যৎ এ কেনায়া বাক্য বললে স্বামী তার কি আর জিগ্যেস করা উচিত হবে? তার কি গুণাহ হবে জিগ্যেস না করলে? সে বুঝতে পারে না কোন নিয়তে বলে। ভয়ে থাকে,কিন্তুু স্বামী রেগে যায় জিগ্যেস করলে।

৫।এসব প্রশ্ন আমার সাথে মিল নাই পুরোপুরি।তবু আমি জানার জন্য আর সন্দেহ নিয়ে প্রশ্ন করেছি।আপনাদের প্রশ্ন করায় কি আমার বৈবাহিক জীবনে কোন সমস্যা হবে? নিজের দিকে ইন্গিত করি নি।শুধু জানার জন্য করেছি।আর পুরোপুরি মিল নাই একটু একটু মিল। ৩নং টা কোন এক মেয়েকে ইন্গিত করে লিখতে চেয়েছিলাম আরেকরকম ভাবে সেটা আমার ঘটনা লিখতে চেয়েছিলাম।কিন্তুু একটু করে লিখে আর লিখি নাই।কারন প্রশ্নটা কিভাবে করব বুঝতেছিলাম না।এতে কি আমার সমস্যা হবে?এখন যেটা লিখছি ৩ নং এ সেটা আমার ঘটনা নই।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

তালাকের কথা চিন্তা করল কিন্তু সে শব্দ করে উচ্চারন করল না, বা তার  জিহবা নড়ল না, অর্থাৎ সে মনে মনে বলল, তাহলে তালাক পতিত হবে না। কারণ শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

 

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললোহে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেনরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেনঅতঃপর বললেনহে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যেসে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধতালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহতালাকরাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেনএই হাদীসটি হাসান-গারীব।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

. তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম, তোর সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, আর যোগাযোগ করবি না’। তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।

২. না, এতে কোনো তালাক পতিত হবে না।

৩. না, এতেও কোনো তালাক পতিত হবে না।

৪. না, এভাবে স্বামীকে বার বার জিজ্ঞাসা করে বিরক্ত করা ঠিক হবে না।

৫. না, এতে আপনার বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...