আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
739 views
in পবিত্রতা (Purity) by (41 points)
আসসালামুয়ালাইকুম। হযরত আমি মোঃ নাছির ঊদ্দীন। আমার ফরজ গোসল সম্পর্কে কয়েকটি  জিনিস জানার বিসয়ঃ
(১) মাঝে মাঝে নাইট কোচে বাস জার্নি করি। তো সেই অবস্থায় ফজরের পূর্বে যদি লক্ষ্য করা যায় যে, গোসল ফরজ হয়েছে কিন্তু গোসল করার কোন ব্যবস্থা নেই।  সেই অবস্থায় ফজরের নামাজ কিভাবে পড়ব?
(২) বাসায় থাকাকালীন কখনো ফজরের ওয়াক্ত শেষ হবার ৫-৭ মিনিট আগে জাগা পেলাম। অনুঅভূত হলো যে গোসল ফরজ হয়েছে। কিন্তু গোসলে গেলে নামাজের ওয়াক্ত থাকবে না। সেই অবস্থায় কি করণীয়?
(৩) আমরা একবার কলেজ থেকে ট্যুরে যাই। আসরের সময়। তো সেই সময় আমার এক বন্ধুকে নামাজে আসার জন্য বললাম। সে বলল যে গোসল ফরজ হয়েছে। কিন্তু সেখানে গোসল করার কোন ব্যবস্থা ছিল না। এখন আবার বাসায় ফিরতে ফিরতে নামাজের সময় থাকবে না। এক্ষেত্রে কি করণীয়। নাপাক অবস্থায় কোন বিশেষ ক্ষেত্রে নামাজ পড়ার অনুমতি আছে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  
,
পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হচ্ছে পানি। আল্লাহ তাআলা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি প্রাকৃতিক নিয়মে সরবরাহ  করে রেখেছেন। তারপরও অবস্থার আলোকে যদি পানি না পাওয়া যায় বা কেউ অসুস্থ হয়ে পানি ব্যবহারে একেবারে অপারগ হয়, সে সময়ে গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করবে। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُم مَّرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ مَا يُرِيدُ اللَّـهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَـكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অর্থ : যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো, অতঃপর পানি না পাও, তাহলে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। আল্লাহ তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করো।(সুরা মায়েদা : ৬)
,
তায়াম্মুম করা কখন বৈধ?

১- পানির অনুপস্থিতিতে
আল্লাহ তাআলা বলেন, (فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ) {অতঃপর পানি না পাও, তবে তায়াম্মুম করো।}

২- পানি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করতে অপারগ হলে

যেমন অসুস্থ অথবা বৃদ্ধ ব্যক্তি যে নড়াচড়া করতে পারে না এবং তার কাছে এমন ব্যক্তিও নেই যে তাকে অজু করার ব্যাপারে সাহায্য করবে।

৩ - পানি ব্যবহার করার ফলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে
যেমন :
ক - অসুস্থ ব্যক্তি যদি পানি ব্যবহার করে তবে তার অসুস্থতা বেড়ে যাবে।
খ – প্রচন্ড ঠান্ডায় যদি পানি গরম করার মতো কিছু না থাকে এবং পানি ব্যবহার করলে অসুস্থতা বেড়ে যাবে এ ধারণার পাল্লা ভারি থাকে, এ অবস্থায় তায়াম্মুম করার অনুমতি রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক, প্রচন্ড ঠান্ডা থাকার কারণে তায়াম্মুম করে নামাজের ইমামতি করার পর, আমর বিন আস রাযি. এর কাজকে নাকচ করে না দেয়া এ ক্ষেত্রে প্রমাণ। (বর্ণনায় আবু দাউদ)

গ - কোনো ব্যক্তি যদি পানি থেকে দূরে কোথাও অবস্থান করে এবং তার সাথে পান করার মতো সামান্য পানি থাকে আর অন্য পানি হাজির করতে অপরাগ হয়।
(সাধারণত এই কারন গুলোই সমাজে বেশি পাওয়া যায়,তবে ইহা ছাড়াও আরো কিছু কারন আছে,তবে তাহা বর্তমান আমাদের দেশে প্রায় অনুপস্থিত।) 
,

সব সময়ই মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ। এক্ষেত্রে তীব্র লজ্জা কিংবা গোসলের পরিবেশ নাই মনে করা শরিয়তসম্মত ওজর নয়। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/১৫১)
,
عَنْ نَوْفَلِ بْنِ مُعَاوِيَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ فَاتَتْهُ الصَّلَاةُ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ                                                                                         .أَهْلَهُ وَمَالَهُ
হজরত নওফেল বিন মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল ﷺ বলেছেন, যার নামাজ কাজা হয়ে গেল, যেন তার পরিবার ও সম্পদ সবই ধ্বংস হয়ে গেল। (মুসনাদে আহমাদ : ২৩৬৪২)
,
(১.২.৩) প্রশ্নে উল্লেখিত সব ছুরতেই  ফরজ নামাজের ওয়াক্ত থাকবেনা,ওয়াক্ত চলে যাবে,,
এই কারন দেখিয়ে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবেনা।
ফরজ গোসল করেই নামাজ আদায় করতে হবে । 
যদিও নামাজ কাজা হয়ে যাক,তারপরেও গোসল করার পর নামাজ আদায় করতে হবে।
,
অপবিত্র অবস্থায় নামাজ পড়ার কোনো ছুরত নেই। 

★নুরুল ইযাহ গ্রন্থে এসেছে
وليس من العذر   خوف الجمعة والوقت
অনুবাদঃঃ জুময়ার নামাজ শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় এবং নামাজের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার ভয়,তায়াম্মুম বৈধ কারী ওযর নয়। 
এই কারনে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবেনা।    
(নুরুল ইযাহ,  মাকতাবাতুল ফাতাহ বাংলাদেশ ৪৪ নং পৃষ্ঠা)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...