আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
342 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালামুয়ালাইকুম

দলীয় ভাবে যিকির করা কি জায়েজ?

যারা দলীয়ভাবে যিকির করে তারা মনে করে যেখানে ৪০জন এক সাথে জিকির করে বা দোয়া করে সেখানে একজন হলেও আল্লাহর প্রিয় বান্দা থাকে  আর সে যখন দোয়া করে তার সাথে সবার দোয়া কবুল করা হয়,,, এই কথা টি কতটুকু সঠিক কোরআন হাদিসের আলোকে জানতে চাই ( একজন মানুষ কে দ্বীনের বুঝ দিয়ার জন্য জানতে চাওয়া)
একজন ছেলে মানুষ যে দিন নফল রোজা রাখে সে দিন মাগরিবের নামাজটি  পড়তে পারে না কারণ ছেলেটির বাবা ইফতার করে বাসায় নামাজ পড়তে বলে আর এই কথা না শুনলে রেগে যায় ঐই অবস্থায় যদি বাসার ছেলেরা এক সাথে বাসায় জামাতে নামাজ পড়ে তাহলে কি তার জামাতে নামাজ পড়া যে ওয়াজিব এটা আদায় হবে?

একজন মেয়ের শশুর পা ধরে সালাম না করায় তার শশুর মনে কষ্ট নিয়েছে এখন যদি শুধু শশুর মন খারাপ না করার জন্য সালামের উদ্দেশ্য ছাড়ায় শুধু শশুর এর মন রাখার জন্য শুধু পা টা ধরে তাহলে কোন ভুল হবে?

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
জিকিরের মজলিস কায়েম করে জিকির করা জায়েজ আছে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنِ الْأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، أَنَّهُ قَالَ: أَشْهَدُ عَلَى أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «لَا يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا حَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمِ السَّكِينَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ»

হযরত আবূ হুরায়রা ও হযরত আবূ সাঈদ রাঃ দুইজনই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন যে, যে জামাত আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে, ফেরেশতারা উহাকে চারিদিক থেকে ঘিরে নেয়। আল্লাহর রহমাত তাদেরকে ঢেকে নেয়। তাদের উপর সকীনা নাজিল হয়। আর আল্লাহ তাআলা নিজ মজলিসে (গর্ব করে) তাদের আলোচনা করেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১৮৭৫]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ،

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে;আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৪০৫]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، قَالَ: خَرَجَ مُعَاوِيَةُ، إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ. قَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: وَاللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ، وَمَا كَانَ أَحَدٌ بِمَنْزِلَتِي مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقَلَّ حَدِيثًا عَنْهُ مِنِّي، إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ عَلَى حَلْقَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ وَنَحْمَدُهُ لِمَا هَدَانَا لِلإِسْلاَمِ وَمَنَّ عَلَيْنَا بِهِ، فَقَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: آللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ لِتُهْمَةٍ لَكُمْ، إِنَّهُ أَتَانِي جِبْرِيلُ وَأَخْبَرَنِي أَنَّ اللَّهَ يُبَاهِي بِكُمُ الْمَلاَئِكَةَ

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মু’আবিয়াহ (রাযিঃ) মাসজিদে গেলেন। তিনি (মাসজিদে কিছুলোক বসা দেখে তাদেরকে) বললেন, তোমাদের কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আমরা বসে বসে আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার যিকরই কি বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ আল্লাহ তা’আলার যিকরই আমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেন, শোন! তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে শপথ করাইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমার চেয়ে কম হাদীস বর্ণনাকারীও কেউ নেই।
একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথীদের এক দরবারে পৌছে বললেনঃ তোমাদেরকে কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বলেন, এখানে বসে আমরা আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি এবং তার প্রশংসা করছি, কেননা ইসলামের দিকে তিনিই আমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন এবং ইসলামের মাধ্যমে আমাদের প্রতি বিরাট অনুগ্রহ করেছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! এটাই তোমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে কি? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ! আমাদেরকে শুধুমাত্র এটাই বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেনঃ তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে কসম দেইনি। জিবরীল (আঃ) আমার কাছে এসে আমাকে জানিয়েছেন যে, আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সম্মুখে তোমাদের নিয়ে গর্ব করছেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩৩৭৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০১]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
জিকিরের মজলিস কায়েম করে জিকির করা জায়েজ আছে। 

বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামগন বলেছেন, এক্ষেত্রে সকলে একসাথে সমস্বরে সুরের সাথে সুর মিলিয়ে জিকিরের সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই এ পদ্ধতির জিকিরকে সুন্নাত বলার কোন সুযোগ নেই।

যদি নির্দিষ্ট কোন হক্কানী পীর সাহেব প্রশিক্ষণ হিসেবে এভাবে জিকির করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে তা প্রশিক্ষণ হিসেবে করাতে কোন সমস্যা নেই। তা বিদআতের সংজ্ঞায় পড়বে না। কিন্তু এভাবে দলবদ্ধ জিকিরকে সুন্নাহ মনে করলে অবশ্যই তা বিদআত হবে।

(০২)
প্রতি ৪০ জনে একজন একজন হলেও আল্লাহর প্রিয় বান্দা থাকে,এটি সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে কেহ কেহ বলে থাকেন।   
তবে এটি কুরআন হাদীসে নেই।

(০৩)
বাসায় এভাবে জামাতের অভ্যাস না গড়ে তোলে মাঝে মাঝে ওযর বশত জামাত জায়েজ হবে।  
এতে জামায়াতের ফজিলত আদায় হবে।

(০৪)
উল্লেখিত ছুরতে এমনটি করা যাবে।
তবে উভয়েরই শাহওয়াত থেকে হেফাজতে থাকতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
...