জিকিরের মজলিস কায়েম করে জিকির করা জায়েজ আছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنِ الْأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، أَنَّهُ قَالَ: أَشْهَدُ عَلَى أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «لَا يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا حَفَّتْهُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمِ السَّكِينَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ»
হযরত আবূ হুরায়রা ও হযরত আবূ সাঈদ রাঃ দুইজনই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন যে, যে জামাত আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে, ফেরেশতারা উহাকে চারিদিক থেকে ঘিরে নেয়। আল্লাহর রহমাত তাদেরকে ঢেকে নেয়। তাদের উপর সকীনা নাজিল হয়। আর আল্লাহ তাআলা নিজ মজলিসে (গর্ব করে) তাদের আলোচনা করেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১৮৭৫]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ،
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে;আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৪০৫]
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ، قَالَ: خَرَجَ مُعَاوِيَةُ، إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ. قَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: وَاللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ، وَمَا كَانَ أَحَدٌ بِمَنْزِلَتِي مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقَلَّ حَدِيثًا عَنْهُ مِنِّي، إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ عَلَى حَلْقَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: مَا يُجْلِسُكُمْ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللَّهَ وَنَحْمَدُهُ لِمَا هَدَانَا لِلإِسْلاَمِ وَمَنَّ عَلَيْنَا بِهِ، فَقَالَ: آللَّهِ مَا أَجْلَسَكُمْ إِلاَّ ذَاكَ؟ قَالُوا: آللَّهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلاَّ ذَاكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ لِتُهْمَةٍ لَكُمْ، إِنَّهُ أَتَانِي جِبْرِيلُ وَأَخْبَرَنِي أَنَّ اللَّهَ يُبَاهِي بِكُمُ الْمَلاَئِكَةَ
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মু’আবিয়াহ (রাযিঃ) মাসজিদে গেলেন। তিনি (মাসজিদে কিছুলোক বসা দেখে তাদেরকে) বললেন, তোমাদের কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আমরা বসে বসে আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার যিকরই কি বসিয়ে রেখেছে? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ আল্লাহ তা’আলার যিকরই আমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেন, শোন! তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে শপথ করাইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমার চেয়ে কম হাদীস বর্ণনাকারীও কেউ নেই।
একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথীদের এক দরবারে পৌছে বললেনঃ তোমাদেরকে কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বলেন, এখানে বসে আমরা আল্লাহ তা’আলার যিকর করছি এবং তার প্রশংসা করছি, কেননা ইসলামের দিকে তিনিই আমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন এবং ইসলামের মাধ্যমে আমাদের প্রতি বিরাট অনুগ্রহ করেছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর শপথ! এটাই তোমাদেরকে বসিয়ে রেখেছে কি? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ! আমাদেরকে শুধুমাত্র এটাই বসিয়ে রেখেছে। তিনি বললেনঃ তোমাদের মিথ্যা বলার সন্দেহে আমি তোমাদেরকে কসম দেইনি। জিবরীল (আঃ) আমার কাছে এসে আমাকে জানিয়েছেন যে, আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সম্মুখে তোমাদের নিয়ে গর্ব করছেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩৩৭৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৭০১]
জিকিরের মজলিস কায়েম করে জিকির করা জায়েজ আছে।
বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামগন বলেছেন, এক্ষেত্রে সকলে একসাথে সমস্বরে সুরের সাথে সুর মিলিয়ে জিকিরের সরাসরি প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই এ পদ্ধতির জিকিরকে সুন্নাত বলার কোন সুযোগ নেই।
যদি নির্দিষ্ট কোন হক্কানী পীর সাহেব প্রশিক্ষণ হিসেবে এভাবে জিকির করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে তা প্রশিক্ষণ হিসেবে করাতে কোন সমস্যা নেই। তা বিদআতের সংজ্ঞায় পড়বে না। কিন্তু এভাবে দলবদ্ধ জিকিরকে সুন্নাহ মনে করলে অবশ্যই তা বিদআত হবে।
প্রতি ৪০ জনে একজন একজন হলেও আল্লাহর প্রিয় বান্দা থাকে,এটি সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে কেহ কেহ বলে থাকেন।