আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in সালাত(Prayer) by (50 points)
আসসালামু আলাইকুম

১. আমার বাবা মা সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়তে চেয়েছেন।কিন্তু উনারা নিয়ম আর দুয়া ভুলে যাচ্ছিলেন। তখন আমার বাবা,মা,ছোট ভাই সালাতে দাঁড়াল এবং আমি ওদের পাশে বসে সালাতের শুরু থেকে শেষ সবকিছু পড়ে দিচ্ছিলাম। আর ওরা আমার থেকে শুনে শুনে সালাতে তেলাওয়াত করছিল। এভাবে কি সালাত হয়েছে???

২. সালাতে সুরা ফাতিহা পড়তে ভুলে গেলে কি করণীয়?

৩. সালাত ভঙ্গের একটি কারণ পড়ছি -- আমলে কাছির করা.।  এটা মানে কি?

৪. আমি মেয়ে। আমি সালাত পড়তে দাঁড়ালে এবং সবকিছু জোরে জোরে পড়লে,আমার থেকে শুনে কি আমার বাবা মারা সালাত আদায় করতে পারবে? মানে আমি ইমামতি করছি না। শুধু তেলাওয়াত গুলো একটু জোরে পড়লে যাতে উনারা শুনে বুঝতে পারেন কি পড়তে হবে

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আল মাওসুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ গ্রন্থে আছেঃ

الموسوعة الفقهية الكويتية (32/ 15):
"وإن فتح المصلي على غير إمامه فسدت صلاته؛ لأنه تعليم وتعلم، فكان من جنس كلام الناس، إلا إذا نوى التلاوة، فإن نوى التلاوة لاتفسد صلاته عند الكل، وتفسد صلاة الآخذ، إلا إذا تذكر قبل تمام الفتح، وأخذ في التلاوة قبل تمام الفتح فلاتفسد، وإلا فسدت صلاته، لأن تذكره يضاف إلى الفتح"
সারমর্মঃ  
কোনো মুছল্লি যদি নিজের ইমাম ব্যাতিত অন্য কাউকে লোকমা দেয়,তাহলে তার নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা এটি শিক্ষা দেয়া ও শিক্ষা গ্রহন করা। সুতরাং এটি মানুষের কালামের অন্তর্ভুক্ত। 
কিন্তু যদি তিলাওয়াতের নিয়ত করে,তাহলে (লোকমা দাতা) মুছল্লির নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা
লোকমা গ্রহনকারী ইমামের নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 
কিন্তু যদি লোকমা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই তার সেটি স্বরন আসে,এবং সে নিজে নিজেও তিলাওয়াত শুরু করে দেয়,তাহলে তার নামাজ ফাসেদ হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবা মা ছোট ভাই যদি নিজেই তাসবিহ পাঠ না করে আসলেই আপনার বলে দেয়া তাসবিহ শুনে শুনে পাঠ করে থাকে,তাহলে তাদের এই নামাজ হয়নি।

আর যদি তারা নিজেরাই সেটি পাঠ করে থাকে,আপনার বলে তাসবিহ বলে দেয়াত আগেই তারা প্রত্যেকবার তাসবিহ পাঠ শুরু  করে,তাহলে তাদের নামাজ হয়ে গিয়েছে।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا السَّائِبِ، مَوْلَى هِشَامِ بْنِ زَهْرَةَ يَقُولُ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وسلم:مَنْ صَلَّى صَلَاةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ فَهِيَ خِدَاجٌ فَهِيَ خِدَاجٌ فَهِيَ خِدَاجٌ غَيْرُ تَمَامٍ قَالَ: فَقُلْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، إِنِّي أَكُونُ أَحْيَانًا وَرَاءَ الْإِمَامِ قَالَ: فَغَمَزَ ذِرَاعِي، وَقَالَ: اقْرَأْ بِهَا يَا فَارِسِيُّ فِي نَفْسِكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلي الله عليه وسلم يَقُولُ: " قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: قَسَمْتُ الصَّلَاةَ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي نِصْفَيْنِ: فَنِصْفُهَا لِي، وَنِصْفُهَا لِعَبْدِي، وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ " قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلي الله عليه وسلم: " اقْرَءُوا يَقُولُ الْعَبْدُ (الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: حَمِدَنِي عَبْدِي، يَقُولُ: (الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ)، يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَثْنَىعَلَيَّ عَبْدِي، يَقُولُ الْعَبْدُ (مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ)، يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: مَجَّدَنِي عَبْدِي، يَقُولُ الْعَبْدُ (إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ)، يَقُولُ اللَّهُ: هَذِهِ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ، يَقُولُ الْعَبْدُ (اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ، صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ، وَلَا الضَّالِّينَ)، يَقُولُ اللَّهُ: فَهَؤُلَاءِ لِعَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ "

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল, যার মধ্যে ‘কুরআনের মা’ অর্থাৎ সূরাহ ফাতিহা পাঠ করল না, তার ঐ সালাত ত্রুটিপূর্ণ, তার সালাত ত্রুটিপূর্ণ, তার সালাত ত্রুটিপূর্ণ, অসম্পূর্ণ।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি যখন ইমামের পিছনে থাকি, তখন কিভাবে পড়ব? তিনি আমার বাহু চাপ দিয়ে বললেন, হে ফারসী! তুমি মনে মনে পাঠ করবে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ বলেন, আমি সালাতকে (অর্থাৎ সূরাহ ফাতিহাকে) আমার ও আমার বান্দাহ‘র মধ্যে দু‘ ভাগ করে নিয়েছি। যার এক ভাগ আমার জন্য, আরেক ভাগ আমার বান্দাহ‘র জন্য এবং আমার বান্দাহ আমার কাছে যা চায়, তাকে তাই দেয়া হয়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা সূরাহ ফাতিহা পাঠ করো। বান্দাহ যখন বলে, ‘‘আল হামদু লিল্লাহি রব্বিল ‘আলামীন’’- তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দাহ আমার প্রশংসা করেছে। অতঃপর বান্দাহ যখন বলে, ‘‘আর-রহমানির রহীম’’- তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দাহ আমার গুণগান করেছে। বান্দাহ যখন বলে, ‘‘মালিকি ইয়াওমিদ্দীন’’- তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দাহ আমাকে সম্মান প্রদর্শন করেছে। অতঃপর বান্দাহ যখন বলে, ‘‘ইয়্যাকা না‘বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন’’- তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে সীমিত এবং আমার বান্দাহ যা প্রার্থনা করেছে- তাই তাকে দেয়া হবে। অতঃপর বান্দাহ যখন বলে, ‘‘ইহদিনাস সিরাত্বাল মুস্তাকীম, সীরাতালাযীনা আন‘আমতা ‘আলাইহিম গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাযযল্লীন’’- তখন আল্লাহ বলেন, এর সবই আমার বান্দাহ‘র জন্য আমার বান্দাহ আমার কাছে যা চেয়েছে, তাকে তাই দেয়া হবে।
সহীহ : মুসলিম (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব), তিরমিযী (অধ্যায়ঃ সূরাহ ফাতিহার তাফসীর, হাঃ ২৯৫৩), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ ইফতিতাহ, হাঃ ৯০৮) ইবনু মাজাহ সংক্ষেপে (অধ্যায়ঃ সালাত ক্বায়িম, অনুঃ ইমামের পেছনে ক্বিরাআত পাঠ, হাঃ ৮৩৮) সকলে ‘আলা সূত্রে।

الفتاوى الهندية (ج:1، ص:126، ط: دار الفكر):
’’(ثم واجبات الصلاة أنواع) (منها) قراءة الفاتحة و السورة إذا ترك الفاتحة في الأوليين أو إحداهما يلزمه السهو و إن قرأ أكثر الفاتحة و نسي الباقي لا سهو عليه و إن بقي الأكثر كان عليه السهو إماما كان أو منفردا، كذا في فتاوى قاضي خان. و إن تركها في الأخريين لا يجب إن كان في الفرض و إن كان في النفل أو الوتر وجب عليه، كذا في البحر الرائق، و لو كررها في الأوليين يجب عليه سجود السهو بخلاف ما لو أعادها بعد السورة أو كررها في الأخريين، كذا في التبيين.‘‘
সারমর্মঃ
যদি ফরজের ১ম দুই রাকাতে অথবা ১ম দুই রাকাতের কোনো এক রাকাতে সুরা ফাতেহা ছেড়ে দেয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।    

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে,আর সুন্নাত ওয়াজিব নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
কেহ যদি এই রাকাত গুলোতে সুরা ফাতেহা পড়তে ভুলে যায়,তাহলে  সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।

আর যদি ফরজ নামাজের ৩য় বা ৪র্থ রাকাতে কেহ সুরা ফাতেহা পড়তে ভুলে যায়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।
      
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এটি যদি ফরজের  
৩য় বা ৪র্থ রাকাতে হয়,তাহলে নামাজ হয়ে যাবে,সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।

আর যদি ১ম দুই রাকাতের কোনো রাকাতে হয়,বা  সুন্নাত ওয়াজিব নফল নামাজের কোনো রাকাতে হয়,সেক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে। 

(০৩)
আমলে কাছির সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

(০৪)
না,এভাবে আপনার বাবা মারা সালাত আদায় করতে পারবেনা।
তবে আপনার নামাজ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...