উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো পিতার উপার্জন যদি হারাম হয়, তাহলে সন্তানের নিজের সামর্থ থাকলে পিতার হারাম উপার্জন ভোগ করা জায়েজ নয়।
সুতরাং আপনার যদি সামর্থ থাকে, সেই সাথে ঈমানহারা হবার শংকা না থাকে, তাহলে নিজেই কামাই করে জীবন চালানো আপনার জন্য জরুরী।
আর হ্যাঁ, গোনাহের কাজে পিতামাতার আনুগত্ব করা জায়েজ নয়। তবে তাদের মনে এছাড়া কষ্ট না দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। বাকি দ্বীনের বিষয়ে কোন ছাড় নেই।
তাই আপনি সাধ্যানুপাতে পিতাকে বুঝান। যদি না বুঝে থাকে, তাহলে আপনি নিজেই উপার্জন করে জীবন চালাতে চেষ্টা করুন। তবে পিতা মাতার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না। যোগাযোগ রাখুন। তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করুন।
আপনার জন্য আমাদের মন থেকে দুআ থাকবে। আল্লাহ তাআলা আপনার ধর্মীয় জীবনকে সুন্দর ও শান্তিময় করে দিন। ধৈর্য ধরতে সক্ষম নন এমন পরীক্ষা থেকে আল্লাহ তাআলা আপনাকে হিফাযত করুন। আমীন।
,
হাদীস শরীফে এসেছে
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، كتاب الكراهية-5/342، رد المحتار-6/247)
যার সারমর্ম হলো যদি জানা যায় যে সেটার অধিকাংশই হারাম,তাহলে সেটা গ্রহন করা যাবেনা।
مسألة إذا كان الحرام أو الشبهة في يد أبويه فليمتنع عن مؤاكلتهما فإن كانا يسخطان فلا يوافقهما على الحرام المحض بل ينهاهما فلا طاعة لمخلوق في معصية الله تعالى فإن كان شبهة وكان امتناعه للورع فهذا قد عارضه أن الورع طلب رضاهما بل هو واجب فليتلطف في الامتناع فإن لم يقدر فليوافق وليقلل الأكل بأن يصغر اللقمة ويطيل المضغ ولا يتوسع فإن ذلك عدوان (احياء علوم الدين- 2/147)
যার সারমর্ম হলো যদি বাবার উপার্জন হারাম হয়,তাহলে সেখান থেকে খাবার গ্রহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তারা যদি জোড় করে, তাহলেও তাদের কথা অনুযায়ী খাওয়া যাবেনা।
★এক্ষেত্রে উত্তরাধিকারের মাসয়ালা হলোঃ
যতটুকু সম্পদ হারাম তা ব্যতিত হালাল মালের উত্তারিধকার সন্তানগণ হবে। যে পরিমাণ টাকা হারাম তা মূল মালিকের কাছে ফেরত পাঠাতে হবে, সক্ষম না হলে দান করে দিতে হবে।
وفى رد المحتار ج: 2 ص: 292 (طبع سعيد) ان المراد ليس هو نفس الحرام ام لأنه ملكه بالخلط وانما الحرام التصرف فيه قبل اداء بدله….. نعم لا يباح الانتفاع به قبل أداء البدل فى الصحيح من المذهب، وكذا فى الطحطاوى على الدر المختار-4/192.
وفى الهندية- ج/349 (طبع مكتبة رشيدية) والسبيل فى المعاصى ردها وذلك ههنا برد المأخوذ ان تمكن من رده بان عرف صاحبه…. الخ. وفى رد المحتار-5/99 (طبع سعيد) والحاصل أنه ان علم أرباب الأموال وجب رده عليهم والا فان علم عين الحرام لا يحل له ويتصدق به بنية صاحبه… وبعد اسطر …… ومفاده الحرمة وان لم يعلم أربابه وينبغى تقييده بما اذا كان عين الحرام ليوافق ما نقلناه اذ لو اختلط بحيث لا يتميز لملكه ملكا خبيثا لكن لا يحل له التصرف فيه ما لم يؤد بدله الخ
এসব টাকা তার মুল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
وفى الدر المختار-6/182 (سعيد) ويجب رد عين المغصوب فى مكان غصبه ويبرأ بردها ولو بغير علم المالك….. أو يجب رد مثله ان هلك وهو مثلى،
وفى رد المحتار-6/385- ويردونها على أربابها ان عرفوهم والا تصدقوا بها لان سبيل الكسب الخبيث التصدق اذا تعذر الرد على صاحبه،
যদি তার মুল মালিককে না চিনে,বা খুজে না পায়,তাহলে সেটা ছদকাহ করে দিবে।
মিরাছ হবার জন্য উক্ত সম্পদের মালিক হতে হয়, আর আপনার পিতা হারাম মাল নিজের করায়ত্বে রাখলেও তার মালিক তিনি প্রকৃত অর্থে ছিলেনই না, তাই এর মিরাছও জারি হবে না।
,
আপনি যদি স্বাবলম্বি না হোন,
তাহলে আপনি স্বাবলম্বী হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আপনার বাবার বাসায় থাকা-খাওয়া চালিয়ে যেতে পারবেন। যখন আপনার বৈধ কোনো চাকুরীর ব্যবস্থা হয়ে যাবে যা দ্বারা আপনি আপনার নিজ প্রয়োজনকে পূর্ণ করতে সক্ষম হবেন।তখন থেকে আপনার বাবার হারাম উপার্জন থেকে খাওয়া আর আপনার জন্য জায়েয হবে না।
যদি সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ভয় করেন,তখন আপনার খাওয়া বাবৎ যত টাকা খরছ হওয়ার কথা,হিসেব করে ততটাকা আপনি আপনার পিতাকে যেকোনো বাহানায় দিয়ে দিবেন।তাহলে আপনার জন্য আপনার পিতার হারাম উপার্জন থেকে খাওয়া বৈধ হয়ে যাবে।