আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (65 points)
১. একজন মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলো যার আমলনামায় ধরি সাওয়াব প্রায় ৭০% আর গুনাহ  ৩০%
তো এই অবস্থায় এই যে ৩০% গুনাহ নিয়ে মারা গেলো তাহলে কি ঐ ব্যক্তি কবরে কেয়ামত পর্যন্ত আযাব ভোগ করতে থাকবে.... সামান্যতম গুনাহ আমলনামায় থাকলেও কি কবরে ঐ ব্যক্তি কিয়ামত পর্যন্ত আযাব ভোগ করবে?

২.নিস্পাপ হয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য আমাদের কি করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে মহান আল্লাহ তায়ালার ইখতিয়ারে রয়েছে।
তিনি চাইলে শাস্তি দিতে পারেন,চাইলে শাস্তি নাও দিতে পারেন।

(০২)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
নিষ্পাপ হয়ে যাওয়ার অনেক আমল আছে।
সেই আমল গুলো করতে হবে।
পাশাপাশি বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে।
শরীয়তের সমস্ত বিধান মেনে চলতে হবে,বান্দার হক যেনো নষ্ট না হয়,সেদিক লক্ষ্য করতে হবে। 

নিষ্পাপ হয়ে যাওয়ার অনেক আমল আছে।
যেমনঃ
★হজ্জ করলে পাপ থেকে নিষ্পাপ হওয়া যায়। আবূ হুরায়রাহ্ হতে বর্ণিত, নাবী (সা.) বলেছেন :

مَنْ حَجَّ لِلّٰهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه

‘‘যে ব্যক্তি রাফাছ ও ফিস্ক থেকে বিরত থেকে আল্লাহর উদ্দেশে হাজ্জ (হজ্জ) করলো, সে এমন নবজাতক শিশু, যাকে তাঁর মা এ মুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে।’

(সহীহুল বুখারী : ১৫২১, সহীহ মুসলিম : ১৮২০।)

★রোগাক্রান্ত হলে আল্লাহর প্রশংসা করা :
একদিন শাদ্দাদ বিন আওস ও সুনাবিহী এক রোগীকে দেখতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ সকালে তুমি কেমন আছ?’ লোকটি বলল, (আল্লাহর) নি‘আমতে আছি। শাদ্দাদ বলল, পাপসমূহ মাফ হয়ে যাওয়া এবং গুনাহসমূহ ঝরে যাওয়ার সুসংবাদ নাও। আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সা.) বলেছেন :

إِنَّ اللّٰهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ إِنِّىْ إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدًا مِنْ عِبَادِىْ مُؤْمِنًا فَحَمِدَنِىْ عَلٰى مَا ابْتَلَيْتُه فَإِنَّه يَقُومُ مِنْ مَضْجَعِه ذٰلِكَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه مِنَ الْخَطَايَا وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا قَيَّدْتُ عَبْدِىْ وَابْتَلَيْتُه وَأَجْرُوا لَه كَمَا كُنْتُمْ تُجْرُونَ لَه وَهُوَ صَحِيْحٌ

‘‘আল্লাহ বলেন, ‘আমি যখন আমার কোন মু’মিন বান্দাকে (রোগ-বালা দিয়ে) পরীক্ষা করি এবং সে ঐ রোগ-বালাতে আমার প্রশংসা করে, তখন সে তার ঐ বিছানা থেকে সেই দিনকার মত নিষ্পাপ হয়ে ওঠে, যেদিন তার মা তাকে ভূমিষ্ঠ করেছিলেন।’ রবব তাবারাকা ওয়া তা‘আলা (কিরামান কাতিবীনকে) বলেন, আমি আমার বান্দাকে (অনেক ‘আমল থেকে) বিরত রেখেছি এবং রোগগ্রস্ত করেছি। সুতরাং তার জন্য সেই ‘আমলের সাওয়াব লিখতে থাক, যে ‘আমলের সাওয়াব তার সুস্থ অবস্থায় লিখতে।’’
(মুসনাদ আহমাদ : ১৭১১৮; সহীহুত তারগীব : ৩৪২৩, হাদীসটি সহীহ, সিলসিলা আস-সহীহাহ্ : ১৬১১।)

ফিলিস্তিনে অবস্থিত বায়তুল মাকদিসে সলাত আদায় করা। নাবী (সা.) বলেছেন :

أَنَّ سُلَيْمَانَ بْنَ دَاوُدَ عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلاملَمَّا بَنٰى بَيْتَ الْمَقْدِسِ سَأَلَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ خِلَالًا ثَلَاثَةً سَأَلَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حُكْمًا يُصَادِفُ حُكْمَه فَأُوتِيَه وَسَأَلَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ مُلْكًا لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِنْ بَعْدِه فَأُوتِيَه وَسَأَلَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حِينَ فَرَغَ مِنْ بِنَاءِ الْمَسْجِدِ أَنْ لَا يَأْتِيَه أَحَدٌ لَا يَنْهَزُه إِلَّا الصَّلَاةُ فِيهِ أَنْ يُخْرِجَه مِنْ خَطِيئَتِه كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه

সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আ.) যখন বায়তুল মাকদিস নির্মাণ করলেন, তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার কাছে তিনটি বস্তু চাইলেন : তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করলেন এমন ফায়সালা যা তাঁর ফয়সালার মোতাবেক হয়। তা তাকে প্রদান করা হল। আর তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট চাইলেন এমন বিশাল রাজ্য, যার অধিকারী তার পরবর্তী আর কেউ হবে না। তাও তাকে দেয়া হল। আর যখন তিনি মাসজিদ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করলেন তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করলেন, যে ব্যক্তি তাতে শুধু সলাতের জন্য আগমন করবে, তাকে যেন পাপ থেকে ঐ দিনের মত মুক্ত করে দেন যেদিন সে তার মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।’’
(সুনান আন্ নাসায়ী : ৬৯৩; সুনান ইবনু মাজাহ : ১৪০৮, হাদীসটি সহীহ।)

★উযূ করে সলাত পূর্ণ খুশু খুজুর সহিত সমস্ত শর্তের সহিত সালাত  আদায় করা :

নবী (সা.) বলেছেন :

مَا مِنْكُمْ رَجُلٌ يُقَرِّبُ وَضُوءَه فَيَتَمَضْمَضُ وَيَسْتَنْشِقُ فَيَنْتَثِرُ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِه وَفِيهِ وَخَيَاشِيمِه ثُمَّ إِذَا غَسَلَ وَجْهَه كَمَا أَمَرَهُ اللهُ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِه مِنْ أَطْرَافِ لِحْيَتِه مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ يَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا يَدَيْهِ مِنْ أَنَامِلِه مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَمْسَحُ رَأْسَه إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا رَأْسِه مِنْ أَطْرَافِ شَعْرِه مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ قَدَمَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا رِجْلَيْهِ مِنْ أَنَامِلِه مَعَ الْمَاءِ فَإِنْ هُوَ قَامَ فَصَلّٰى فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنٰى عَلَيْهِ وَمَجَّدَه بِالَّذِى هُوَ لَه أَهْلٌ وَفَرَّغَ قَلْبَهُ لِلّٰهِ إِلَّا انْصَرَفَ مِنْ خَطِيئَتِه كَهَيْئَتِه يَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّه

‘‘তোমাদের কোন ব্যক্তির কাছে যখন উযূর পানি পেশ করা হয়, এরপর সে কুলি করে ও নাকে পানি দেয় ও তা পরিষ্কার করে। তখন তার মুখমণ্ডলের মুখ গহববর ও নাকের সকল গুনাহ ঝরে যায়। তারপর যখন সে আল্লাহ পাকের নির্দেশ অনুসারে মুখম-ল ধোয় তখন মুখমণ্ডলের চারিদিক থেকে সকল গুনাহ পানির সাথে ঝরে যায়। এরপর যখন দুই হাত ধোয় কুনুই পর্যন্ত, তখন তার উভয় হাতের গুনাহসমূহ আঙ্গুল দিয়ে পানির সাথে ঝরে পড়ে। এরপর উভয় পা গোড়ালি পর্যন্ত ধৌত করলে উভয় পায়ের গুনাহগুলো আঙ্গুল দিয়ে পানির সাথে ঝরে পড়ে। এরপর যদি সে দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করে আল্লাহর প্রশংসা ও স্ত্ততি বর্ণনা করেও যথাযথভাবে তাঁর অন্তরকে আল্লাহর জন্য একাগ্র করে নেয়, তাহলে সে গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে সেদিনের মত যে দিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’’
সহীহ মুসলিম : ১৯৬৭।

অন্য এক বর্ণনায় আছে,
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأَ فَيُسْبِغُ الْوُضُوْءَ ثُمَّ يَقُوْمُ فِىْ صَلَاتِه فَيَعْلَمُ مَا يَقُوْلُ إِلَّا إِنْفَتَلَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمَّه مِنَ الْخَطَايَا لَيْسَ عَلَيْهِ ذَنْبٍ

‘‘যখনই কোন মুসলিম পূর্ণরূপে উযূ করে সলাত আদায় করতে দাঁড়ায় এবং যা বলছে তা বুঝে (অর্থাৎ জেনে মনোযোগ সহকারে তা আদায় করে), তখনই সে প্রথম দিনের শিশুর মতো (নিষ্পাপ) হয়ে সলাত সম্পন্ন করে।’
মুসতাদরাক ‘আলাস্ সহীহায়ন : ৩৫০৮; তাবারানী : ১৪৩৭০, সহীহুত তারগীব : ১৯০, হাদীসটি সহীহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...