পোস্ত হলো এক ধরনের তৈলবীজ যা আফিম থেকে পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন সভ্যতার লোকজন এই ছোট বৃক্কের মত দেখতে বীজটি চাষ করে আসছে। এই বীজগুলো আস্ত অথবা গুঁড়ো অবস্থায় বিভিন্ন খাদ্যে একটি মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি পিষে পোস্তদানার তেল তৈরি করা হয়।
,
পোস্ত হল শুকনো ফলের বীজ। আর ওই ফলটিরই কাঁচা অবস্থায় খোসার নির্যাস হল আফিম। তাই অাফিমের মাদক মরফিন আর কোডাইন—কিছু পরিমাণে রয়ে যায় পোস্ত বীজেও (৪-২০০ এমজি/কেজি)। পোস্ত আর অাফিমের সম্পর্কটা অবিচ্ছেদ্য বলেই আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভাবে পোস্ত চাষ নিষিদ্ধ।
সরকারি তত্ত্বাবধান ছাড়া পোস্ত চাষ করা যায় না। চিন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানের মতো আরও অনেক দেশে পোস্ত চাষে মানা রয়েছে।
পোস্তর বাদাম-বাদাম যে গন্ধটা, তা আসে বেশ কিছু এসেনশিয়াল তেল থেকে—যার মধ্যে ওলেইক ও লিনোলেইক অ্যাসিড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওলেইক অ্যাসিড ও পোস্তর ডায়েটারি ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
.
ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা মেটায়। পোস্তদানার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (থায়ামিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলিক অ্যাসিড ইত্যাদি) শরীরের বিপাকক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। আয়রন, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়ামের মতো বেশ কিছু উপকারী খনিজের উপস্থিতি রয়েছে পোস্তে। কপার রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। হার্ট রেট ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে পটাশিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত রাখে। আয়ুর্বেদে অনিদ্রা রোগে পোস্ত খেতে বলে। মুখের আলসারে পোস্ত ওষুধ। শরীরকে ঠান্ডা করতেও।
★ডাক্তাররা বলেন যে এর অনেক কার্যকারিতা আছেঃ
পোস্ত ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের ভালো উত্স। এ ছাড়া এতে প্রচুর ফাইবার আর ফ্যাটি এসিড আছে।
মুখের আলসার রোধ করে
শরীরে খুব গরম বেড়ে গেলে মুখে আলসার বা ঘা দেখা দিতে পারে। পোস্তদানা শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে, মুখের আলসার হতে বাধা দেয়। পোস্ত বাটার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে মুখের আলসার থেকে হওয়া ব্যথায় দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
পোস্ততে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গরম ভাতের সঙ্গে পোস্ত বাটা খাওয়া যেতে পারে।
ঘুমাতে সাহায্য করে
যাদের ইনসমনিয়া আছে তারা পোস্ত বাটা আর চিনি মিশিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেতে হবে। দ্রুত ঘুম আসবে।
হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখে
ফ্যাটি এসিড থাকায় রক্তে কোলেস্টেরল কমে। ফলে হূদ্যন্ত্র ভালো থাকে। হার্ট ডিজিজ বা হার্ট অ্যাটাক রোধ করতে রোজকার খাবারের তালিকায় এটা রাখা যেতে পারে।
হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
ক্যালসিয়াম আর ফসফরাস থাকায় হাড় শক্তিশালী হয়। জয়েন্ট পেইন বা হাড় ফুলে গেলে দ্রুত আরাম পাওয়ার জন্য পোস্ত বাটা আক্রান্ত স্থানে লাগানো যেতে পারে।
ত্বক সংক্রমণ হতে দেয় না
বিভিন্ন রকমের ত্বকের রোগ যেমন—চুলকানি বা র্যাশে পোস্ত খুব দ্রুত আরাম দেয়। পোস্ত বাটার মধ্যে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশান। এরপর আক্রান্ত স্থানে মোটা করে লাগিয়ে রাখা যেতে পারে।
ক্যালসিয়াম, আয়রন আর কপার থাকায় মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা ভালো থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পোস্তে প্রচুর পরিমাণে জিংক থাকায় দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
,
★★সুতরাং শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পোস্তদানা খাওয়া যেতে পারে।
তবে শর্ত হলো সরকারি কোনো বিধিনিষেধ থাকা যাবেনা,এবং শরীরের যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
احل لكم الطيبات
তোমাদের জন্য সমস্ত ভালো জিনিস হালাল করা হয়েছে।
★তবে এর খোসা থেকে যে আফিম বানানো হয়,সেটা খাওয়া যাবেনা।