আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
284 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (3 points)
খেতে খেতে সন্তানের পেট ভরে গেছে,তারপর ও যদি মা বাবা খাওয়ার জন্য জোর করে তখন সন্তানের জন্য করণীয় কি?
খাওয়ার সময় পেটের ৩ ভাগের ১ ভাগ বাতাস চলাচলের জন্য খালি রাখা কি ওয়াজিব?

1 Answer

+1 vote
by (598,650 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মোটামোটি ভাবে পরিতৃপ্ত হয়ে খাবার গ্রহণ খাবার করা মুবাহ।তবে এর চেয়ে বেশী পেঠভরে খাবার গ্রহণ করা হারাম। 

আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ তে বর্ণিত রয়েছে-
"من آداب الأكل : الاعتدال في الطعام ، وعدم ملء البطن ، وأكثر ما يسوغ في ذلك أن يجعل المسلم بطنه أثلاثا : ثلثا للطعام وثلثا للشراب وثلثا للنفس ؛ لحديث : (ما ملأ آدمي وعاء شرا من بطن ، بحسب ابن آدم أكلات يقمن صلبه ، فإن كان لا محالة ، فثلث لطعامه ، وثلث لشرابه ، وثلث لنفسه) . ولاعتدال الجسد وخفته ؛ لأنه يترتب على الشبع ثقل البدن ، وهو يورث الكسل عن العبادة والعمل . ويُعرف الثلث بالاقتصار على ثلث ما كان يشبع به . وقيل : يعرف بالاقتصار على نصف المد ، واستظهر النفراوي الأول لاختلاف الناس . وهذا كله في حق من لا يضعفه قلة الشبع ، وإلا فالأفضل في حقه استعمال ما يحصل له به النشاط للعبادة ، واعتدال البدن
খাওয়ার আদব:
পেঠ না ভরে মধ্যপন্থার খাবার গ্রহণ করা, এজন্য সর্বোত্তম পদ্ধতি হল, পেঠকে তিন ভাগে বিভক্ত করা।এক ভাগ খাবারের জন্য, এক ভাগ পাণীয়র জন্য, এবং এক ভাগ শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য। হাদীসে এসেছে, পিঠ সোজা হয়,এতটুকু পরিমাণ খাদ্যই মানুষের জন্য যথেষ্ট। যদি এদ্বারা যথেষ্ট না হয়, তাহলে পেঠকে তিন ভাগে বিভক্ত করা।এক ভাগ খাবারের জন্য, এক ভাগ পাণীয়র জন্য, এবং এক ভাগ শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য রাখা।
যাতেকরে শরীর হালকা-পাতলা থাকে, কেননা উদর পূর্তি থাকলে শরীর ভার হয়ে যায়। শরীর বেশ ভারি হলে ইবাদত ও কাজে সমস্যা তৈরী করে। পেঠের তিন ভাগের এক ভাগ পরিমাণ খাদ্য পরিতৃপ্তি মূলক খাদ্যর জন্য যথেষ্ট। কেউ কেউ নিসফে মুদ পরিমাণ খাদ্যকে পরিতৃপ্তি মূলক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।ইমাম নাফরাওয়ী প্রথম ব্যখ্যাকেই গ্রহণযোগ্য মনে করেন,কেননা সকল মানুষের পেঠ সমান নয় যে,কোনো এক নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য দ্বারা নির্ধারিত করা হবে। এই সমস্ত আলোচনা ঐ ব্যক্তির জন্য যে অল্প পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করলেও দুর্বল হবে না।নতুবা ঐ পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করাই উত্তম যে পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের ধারাবারিক গতি ঠিক থাকে ও ইবাদতে প্রফুল্লতা তৈরী হয়।
(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৫/৩৩২)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي الفتاوى الهندية : الأكل على مراتب :
فرض : وهو ما يندفع به الهلاك ، فإن ترك الأكل والشرب حتى هلك فقد عصى .ومأجور عليه ، وهو ما زاد عليه ليتمكن من الصلاة قائما ، ويسهل عليه الصوم .ومباح ، وهو ما زاد على ذلك إلى الشبع لتزداد قوة البدن ولا أجر فيه ولا وزر ويحاسب عليه حسابا يسيرا إن كان من حل .وحرام ، وهو الأكل فوق الشبع إلا إذا قصد به التقوي على صوم الغد ، أو لئلا يستحي الضيف فلا بأس بأكله فوق الشبع .
খাদ্য গ্রহণ কয়েকভাবে হতে পারে।
(১) ফরয:
ঐ পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করা ফরয, যে পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করলে শারিরিক ক্ষতি থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। যদি কেউ এই পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকে , যেজন্য সে ধংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে যায়, তাহলে সে যেন নাফরমানিতে লিপ্ত হল।তবে যদি কেউ প্রফুল্লতার সাথে ইবাদত তথা নামায রোযা পালন করার জন্য এত্থেকেও বেশী খাদ্য গ্রহণ করে, তাহলে সে এজন্য সওয়াব পাবে।

(২) মুবাহ:
উপরে বর্ণিত খাদ্যর চেয়ে অতিরিক্ত এমন খাদ্য যা পরিতৃপ্তির কাছাকাছি থাকে, এ পর্যায়ের খাদ্য গ্রহণ করা মুবাহ। এ প্রকারের খাদ্যে কোনো লাভও নাই এবং লোকশানও নাই। হালাল থেকে পরিতৃপ্তি পর্যন্ত খাদ্য গ্রহণ করলে হালকা পাতলা হিসেব নেওয়া হতে পারে।

(৩) হারাম:
পরিতৃপ্তিরও অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা। তবে যদি আগামি দিনের রোযা রাখার ইচ্ছা হয়, অথবা মেহমানের সাথে খাদ্য গ্রহণ করতে যেয়ে মেহমানকে খাদ্য গ্রহণের সুযোগ দিতে গিয়ে পরিতৃপ্তির চেয়েও বেশী খাদ্য গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা হারাম হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি কোনো বিষয়ে মাতাপিতার কোনো ফায়দা না থাকলে,অন্যদিকে সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে,তাহলে এমন বিষয়ে মাতাপিতার উক্ত বিধিনিষেধের উপর নফল/মুস্তাহাব-কে তারজিহ দেয়াই উত্তম হবে।সুতরাং পেঠভরে খাবার খাওয়ার মাতাপিতার আদেশকে না মেনে তখন মুস্তাহাব বিষয়ের উপর আমলই উত্তম হবে।হ্যা অবশ্যই মাতাপিতার সাথে উত্তম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। তাদেরকে হেকমতের সাথে নরম ভাষায় মুস্তাহাবের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বুঝাতে হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...