প্রথমে পুরো ঘটনাটা বলছিলাম না সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন করেছিলাম।তাই পুরোটা লিখে আাবার প্রশ্ন করছি দয়া করে সবটা ভালভাবে পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন।
আমাকে আমার স্বামী একদিন বলছিল তোমাকে পরিত্যাগ করার কথা কখনো ভাবিনা তবে যদি তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও,নামাজ না পড়ো, রোজা না রাখো,*দ্বীনের কোনো ব্যাপারে বিদ্বেষ/অস্বীকার করো,শরীয়তের*,,,,(শরীয়তের পরে কি বলেছিলো মনে নেই) তাহলে তুমি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা/করে দেব(করে দেব এটা নাও বলতে পারে) সরাসরি তালাক শব্দ ব্যবহার করেনি এটা নিশ্চিত)। কিভাবে বলছিলো আমার সব কথা মনে নেই তবে বেদ্বীন যদি হয়ে যাও এ কথাটা স্পষ্ট মনে আছে আর নামাজ না পড়ো,রোজা না রাখো এদুটো বাক্যের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হলেও সন্দেহ হচ্ছে এদুটো বলছিলো কিনা?আর আমার কথ যদি ভুল হয় তাই ভয়ে নিশ্চিত বলতে পারিনা আর তালাকের ব্যাপারটা তো খুব সিরিয়াস।তাই আমার সব ভালোভাবে মনে না থাকায় আমি তাকে উক্ত ঘটনার পরের দিনই জিজ্ঞেস করি কিভাবে কি সেদিন বলছিলেন যতটুকু মনে আছে ততটুকুই বলেন।শর্ত জিনিস টা এমন করলেই বা মনের ভুলে করলেও পতিত হয়ে যায়।আর শরিয়তের সব বিধানতো মানতে পারিনা ভুলে লঙ্গন হতে পারে।ওজন বশত নামাজ পড়তে নাও পারি। তখন সে আমায় উত্তর দেয়-
"তুমি যদি দ্বীন থেকে দুরে সরে যাও বেদ্বীন হয়ে যাও তাহলে তোমার সাথে সম্পর্ক রাখবো না।এমনিতেই তো থাকবে না(বেদ্বীন হয়ে গেলে এমনিতেই সম্পর্ক ভেঙে যায়)।সে বলে আমার প্রত্যেকটা কথার মূল কথা ছিলো দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়ার।যেমনঃ যদি তুমি নামাজ পরিত্যাগ করো,পর্দা পরিত্যাগ করো,ইসলামের মৌলিক বিধান পরিত্যাগ করো, দ্বীনের ব্যাপারে যদি বিদ্বেষ করো।আর যদি আমি কিছু বলি তাহলে সাথে সাথে বলবা।পরে ডাউট দিবানা।আমার হুবহু মনে নাও থাকতে পারে রেকর্ড করে রাখবা।তখন আমি বলি আমার তো অনিচ্ছায় হয়ে যাতে পারে।তখন সে বলে নামাজ মিসটেক হতে পারে আমি তো নামাজ মিসটেক হওয়ার কথা বলিনি নামাজ অস্বীকারের কথা বলতিছি মানে যদি তুমি কোনোদিন বেদ্বীন হয়ে যাও দ্বীনকে তোমার কাছে অপছন্দনীয় লাগে।তুমি যদি অমুসলিম হয়ে যাও শিরকে পতিত হও।আমি যে কথাগুলো বলছি তার মুল কথা একটিই ছিলো তুমি যদি দ্বীন থেকে দূরে সরে যাও।কাফের মুশরিক হও।এখন আমি তখন কি বাক্য বা কি শব্দ ব্যবহার করছি তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।সে আবার বলে আমি শেষবারের বলছি কান খুলে শুনে নাও তুমি যদি দ্বীন থেকে সরে যাও,কাফের মুশরিক মুরতাদ হও,তুমি দ্বীনে নাই এ রকম যদি কোনো কারন হয় তাহলে তোমাকে ত্যাগ করবো।সাধারনত কোনো কবীরা গুনাহর কারনে তোমাকে ত্যাগ করতে চাইনা।তখন জিজ্ঞেস করি আাপনার কি তখন এই নিয়তই ছিলো।আপনি তখন কি বলেছিলেন আপনার কি কিছু মনে নেই।সে উত্তর দেয় আমিতো এই কথাগুলোই বলেছিলাম যে তুমি যদি নামাজ পরিত্যাগ করো।একটা হলো নামাজ কাযা করা এটা বলি নাই বলছি যদি তুমি নামাজ পরিত্যাগ করো,পর্দা পরিত্যাগ করো,দ্বীন ইসলাম থেকে বের হয়ে যাও দ্বীন ইসলামকে অপছন্দ করো এ কথা গুলোই আমি বলছি হয়তো দু একটা কতা কম আর বেশি।মানে আমার যতগুলো কথা কথা ছিলো সবগুলো কথার মেইন কথা হলো যে কাজগুলো করলে মানুষ দ্বীন থেকে বের হয়ে যায় মুশরিক হয় মুরতাদ হয়।তুমি আবার আমায় জিজ্ঞেস করো কি ছিলো তখন?তখনতো এই নিয়ত ছিলো।(সে সেদিন কি বলেছিলো সে কথাগুলো তার হুবহু মনে নাই তবে সে যে কথা গুলো তখন বলেছিলো তখন এই নিয়তে ঐ কথাগুলো বলেছিলো)।প্রত্যেকটা কথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো এটা যদি কেউ নামাজ পরিত্যাগ করে,পর্দা পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে তাহলে সে কি হয় তুমিই বলো তার মাসয়ালা কি হয়?নামাজ যদি কেউ পরিত্যাগ করে পরিত্যাগ মানে বুঝো নামাজকে যদি কেউ অস্বীকার করে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করি নামাজ না পড়া মানে কি যদি কেউ নামাজকে কেউ পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে এরকম।তখন সে বলে নামাজ যদি কেউ পরিত্যাগ করে,রোজা যদি কেউ পরিত্যাগ করে,পর্দা যদি কেউ পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে,দ্বীন ইসলামের কোনো মৌলিক বিধান যদি কেউ অস্বীকার করে পরিত্যাগ করে তাহলে সে কি হয় সে কি কাফের হয় না।?
সে উপরের সব কথা গুলো সে দিন বলা সে সব শর্তের মূল কথা হিসেবে বলেছেন করণ শর্তগুলো তার হুবহুু মনে নাই(সেদিনের সেসব শর্তের আলোকে উনার সাথে আমার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে এমনটা হয় বলছিলেন হতোনা)।কিন্তু তিনি সেদিন সেটা তার মনে নেই হুবহু।আর আমি যা শুনেছিলাম সেটার ব্যাপারে পুরোপুরি শিওর না কিছুটা নিশ্চিত আবার কিছু কিছু অনিশ্চিত।এখন প্রশ্ন হলো-
১.যদি "তুমি নামাজ না পড়ো"এ শর্তের আলোকে যদি আমি কোনো ওয়াক্তের নামাজ দেরী হওয়ায় পরবর্তী ওয়াক্ত আসার আগেই কাযা আদায় করে নি নামাজ পড়া একদম বাদ না দিই তাহলে কি উক্ত শর্তের কারণে তালাক হবে?এখানে নামাজ না পড়ো বলা হয়েছে।নামাজ না পড়া আর কাজা আদায় করা কি একই কথা?আর যেহেতু তালাক শব্দ ইউজ করেননি এ কারনে এক তালাকে বায়েন হবে?
২.রোজার ব্যাপারে তো শরীয়তে ছাড় আছে কিছু হালতে রোজা না রাখলে সমস্যা নেই পড়ে কাযা করা যায়।এখন আমি যদি সেসব হালতেও রোজা না রাখি তাহলে কি উক্ত শর্ত পতিত হবে যে " যদি তুমি রোজা না রখো"। এবং তালাক হয়ে যাবে?
৩.আমার স্বামীকে পরেরদিন জিজ্ঞেস করায় উত্তরে সে যে আগের দিন বলা শর্তগুলোর মূলকথা হিসেবে যে কথাগুলো বর্ননা করেছে সে কথাগুলো কি তালাকের শর্ত হিসেবে ধর্তব্য হবে?আর আগের দিন বলা শর্তগুলোর স্বীকারোক্তি হিসেবে ধরা হবে?
৪.হায়েজ অবস্থায় তো নামাজ পড়বোনা রোজাও রাখবো না তখনও কি এ শর্ত কার্যকর হবে?আর শিরকে লিপ্ত হওয়ার যে শর্ত দিয়েছে "যদি শিরকে লিপ্ত হও" এখানে রিয়া বা ছোট শিরক করলেও কি তালাক শর্তানুযায়ী হয়ে যাবে?নাকি শুধু আল্লাহর সাথে সরাসরি শিরককে বুঝিয়েছে?কারন শিরক ব্যাপারটা তো বোঝা কঠিন কখন যে মনের ভুলে হয়ে যায়।আর দ্বীনের মৌলিক বিধান বলতে কি বোঝায়?
৫.প্রথম যেদিন উনি শর্তের কথা বলেছিলের সেদিন পর্দা পরিত্যাগের কথা বলেলনি স্পষ্ট মনে আছে কিন্ত পরেরদিন যখন আমি ঐদিনকার কথা জিজ্ঞেস করি তখন সে পর্দা পরিত্যাগের কথা উল্লেখ করেন।এখন আমি যদি জরুরী প্রয়োজনে নিকাব খুলতে হয় বা অনিচ্ছাকৃত কেউ আমায় দেখে ফেলে তাহলে কি শর্তানুযায়ী তালাক হয়ে যাবে?নাকি একেবারে পরিপূর্ণ পর্দা পরিত্যাগ করলে তালাক হবে?.
৬.আমার স্বামীর বক্তব্য মোতাবেক আমার উপর তালাকের কোন কোন শর্ত আরোপ হবে(আমি বুঝতে পারছিনা)?সেতো ঐদিনকার কথা হুবহু বলতে পারেননি ওভারওয়াল ভাবে উদ্দেশ্যের কথা বলেছে?এখন তরা প্রথমে ও পরে বলা কথাগুলোর ভিত্তিতে শরীয়ত অনুযায়ী কি ফয়সালা আসবে বলে আপনার মনে হয়? আমার উপর কি বিধান আরোপিত হবে?একটু বিস্তারিত বলবেন
৭.আমি প্রথমে বলছি আমি প্রথমদিন যে শর্তগুলো শুনছি সে গুলোর কিছু কিছু কথার ব্যাপারে কিছুটা অনিশ্চিত এখন আমি কি করবো আর উনিও হুবহু বলতে পারেননি শর্তের কথা। উনি শুধু বলছেন উক্ত কথা গুলো তার সেদিনকার বলা কথাগুলোর মূলকথা তবে কয়েকটা কথা বলার আগের তিনি বলেছেন যে আমিতো একথাগুলোই বলেছি?এখন আমি তার কোন কথাগুলোকে শর্ত হিসেবে ধরবো আগের না পরের বলা কথাগুলো?আর আপনি তো বলছেন যে, যে শর্ত মুখে বলবে সে অনুযায়ী তালাক হবে মনের উদ্দেশ্য ধর্তব্য হবেনা। কিভাবে উপরে তার বলা প্রথমে ও পরের শর্তগুলো এড়িয়ে চলতে পারি?একটু পরামর্শ দিবেন দ্বীনী বোন হিসেবে প্লিজ,,,,
৮.আমার আজ ঘুম থেকে দেরিতে ওঠার কারনে ফজরের নামাজ পড়তে দেরী হয়েছে সূর্যোদয় হয়ে গেছিলো হয়তো কিন্তুু ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথেই উঠে নামাজ পড়েছি বাদ দিই নি।"আসলে শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠে যাই তারপর আমার একটা ফোনে কল বেজে ওঠে আরেকটায় এলার্ম বাজে। ফজরের ওয়াক্ত শুরু হতে অল্প একটু সময় বাকি ছিলো হয়তো তাই অলসতা করে ঘুমে সমস্যা হবে ভেবে ফোন দুটো সাইলেন্ট করে অবার ঘুমিয়ে যাই।ভাবি যে টাইমলি উঠে মনে হয় নামাজ পড়তে পরবোনি হয়তো। নামাজ কাজা হয়ে এটা হয়তো চাইনি আমি(এটায়ও কনফিউশন)।এখন "তুমি নামাজ না পড়ো" শর্তানুযায়ী কি তালাক হয়ে গেছে?নামাজ না পড়া আর কাজা আদায় করা কি একই কথা?
৯.স্বামী যদি বলে, আমি এমন ভাব করবো যে "তুমি এই কাজ টা করবা কিনা বলো যদি না করো তাহলে এখনি তোমায় তালাক" আসলে এটা আমি তোমায় ভয় দেখানোর জন্য বলি যাতে তুমি এই কাজ টা করো। কিন্তুু কোনো শর্তের কথা বলেনি তাহলে এখানে কি একথা দ্বারা শর্তযুক্ত তালাক পতিত হবে? বা শর্ত ছাড়া তালাক পতিত হবে?
পরিশেষে বলছি আমি আর পরছিনা এতো পেরেশানি নিতে পাগল হয়ে যাচ্ছি একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলছে।এত শর্ত কিভাবে মেইনটেইন করে চলবো?আমি কি ঘর সংসার করা বাদ দিবো?তার কাছ থেকে তালাক নিবো?কিন্তুু তাকে আমি ছাড়তে চাই তাকে ছাড়া আমি জীবনে কোনোদিন ভালো থাকবো না।আমিই বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলছি। স্বামীকে আর কিছু জিজ্ঞেস করাও সম্ভব না।তাতে সমস্যা কমার পরিবর্তে আরো বাড়ে।উপরে কথাগুলোর ব্যাপারে একটু পরামর্শ দিন আমায় প্লিজ,,,