আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
301 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (87 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১/ অনেকে পোষা বিড়াল কে স্পে বা নিউটার করায় যাতে তারা প্রসবক্ষম না হয় এবং অন্য বিড়াল এর প্রতি আকর্ষিত হয়ে চলে না যায়। এটা করানো কি জায়েজ হবে?

২/ হাঙ্গর কি মাছ। এটা কি জায়েজ খাওয়া?

৩/ পানিতেই মারা গেছে এমন মাছ খাওয়া কি যায়?

৪/ কাঠবিড়ালি কি খাওয়া জায়েজ?

৫/ সকল দুয়া কি কবুল হয়? কখনো এমন কি হয় যে দুয়া কবুল হয় না?

৬/ আল্লাহ এর কাছে কি যেকোন দুয়া করা যাবে?

জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রানীকে খাসি বানানো (বন্ধাত্বকরণ করানো) গোশত আর চর্বির দিক লক্ষ্য করে পছন্দনীয়। 
এটার তার (প্রানীর) জন্য দোষ নয়,বরং এটি তার মূল্যের আধিক্যতার মাধ্যম।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/৬৩৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُضَحِّيَ اشْتَرَى كَبْشَيْنِ عَظِيمَيْنِ سَمِينَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مَوْجُوءَيْنِ فَذَبَحَ أَحَدَهُمَا عَنْ أُمَّتِهِ لِمَنْ شَهِدَ لِلَّهِ بِالتَّوْحِيدِ وَشَهِدَ لَهُ بِالْبَلاَغِ وَذَبَحَ الآخَرَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَعَنْ آلِ مُحَمَّدٍ ـ صلى الله عليه وسلم ـ .

আয়েশা (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর ইচ্ছা করলে দু’টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের ও ছিন্নমুষ্ক মেষ ক্রয় করতেন। অতঃপর এর একটি নিজ উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তাঁর নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানী করতেন।
ইবনে মাজাহ ৩১২২.আহমাদ ২৫৩১৫, ২৫৩৫৮, ইরওয়া ১১৩৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

উক্ত হাদিসে موجوءين শব্দটি الوجاء শব্দ থেকে উৎকলিত। খাত্তাবী প্রমুখ এর অর্থ বলেছেন, খাসি করা।


★★প্রয়োজনের স্বার্থে গরু, ছাগল, ভেড়া, উট, দুম্বা ইত্যাদি পুরুষ প্রাণীর অণ্ডকোষ কেটে খাসি করায় কোন দোষ নেই। কেননা, খাসি করা হলে তাতে প্রাণী মোটাতাজা করা সহজ হয় এবং সেগুলোর গোস্তও সুস্বাদু হয়। 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যেহেতু বিড়ালের গোশত খাওয়া জায়েজ নেই,তাই তাকে খাসি বানানো (বন্ধাত্বকরণ করানো) এর ক্ষেত্রে 
গোস্ত সুস্বাদুর বিষয়টি নেই,তাই এতে তাকে খাসি বানানোর প্রয়োজনীয়তা নেই।
প্রয়োজনীয়তা না থাকার কারনে অনুমোদনও নেই।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত কারন তথা যাতে তারা প্রসবক্ষম না হয় এবং অন্য বিড়াল এর প্রতি আকর্ষিত হয়ে চলে না যায়,এই কারনে বিড়ালকে বিড়াল কে স্পে বা নিউটার করানো (খাসি বানানো) জায়েজ হবেনা।

আরো জানুনঃ 

(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
وَ ہُوَ الَّذِیۡ سَخَّرَ الۡبَحۡرَ لِتَاۡکُلُوۡا مِنۡہُ لَحۡمًا طَرِیًّا وَّ تَسۡتَخۡرِجُوۡا مِنۡہُ حِلۡیَۃً تَلۡبَسُوۡنَہَا ۚ وَ تَرَی الۡفُلۡکَ مَوَاخِرَ فِیۡہِ وَ لِتَبۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِہٖ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۴﴾ 

আর তিনিই সাগরকে নিয়োজিত করেছেন যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পার এবং যাতে তা থেকে আহরণ করতে পার রত্নাবলী যা তোমরা ভূষণরূপে পরে থাক; এবং তোমরা দেখতে পাও, তার বুক চিরে নৌযান চলাচল করে এবং এটা এ জন্যে যে, তোমরা যেন তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
(সুরা নাহল ১৪)

ইমাম মারগিনানি (রহ.) লিখেছেন, জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া কোনো প্রাণী খাওয়া যাবে না। কেননা মহান আল্লাহ নিকৃষ্ট বস্তু হারাম করেছেন, আর মাছ ছাড়া পানির সব প্রাণীই নিকৃষ্ট। (হেদায়া ৪/৩৫৩)

★বিশেষজ্ঞদের কাছে মাছ হিসেবে যে জলজীব পরিচিত, শরিয়তের দৃষ্টিতে সেটিই মাছ বলে গণ্য হবে এবং তা খাওয়াও হালাল হবে। আর যে জলজীব মাছ বলে পরিচিত নয়, তা হালাল হবে না। 

মুফতি আমিমুল ইহসান (রহ.) লিখেছেন, ‘মাছ হলো মানুষের মধ্যে যে জলজ প্রাণীকে মাছ বলে গণ্য করা হয়। এটি এমন এক জলজ প্রাণী, যার অসংখ্য প্রকারভেদ ও আকৃতি রয়েছে।’ (আত্তারিফাতুল ফিকহিয়্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)

★যেহেতু বিশেষজ্ঞরা হাঙ্গরকে মাছ বলে আখ্যায়িত করেন,তাই হাঙ্গর মাছ খাওয়া জায়েজ।  

(০৩)
যে মাছ মানুষের কোন হস্তক্ষেপ ছাড়া নিজে নিজে মরে পানিতে ভেসে উঠে সে মৃত মাছ খাওয়া জায়েজ নয়।
তবে মানুষের আঘাতে, কিংবা ঔষধ দেওয়ার কারণে যদি মাছ মরে যায়, তাহলে সে মাছ খাওয়া যাবে।

(০৪)
পাখি দুই প্রকার : 
প্রথমত,  পাখিকুলের মধ্যে যেসব পাখি থাবা ও নখরবিশিষ্ট হয় যেমন- চিল, শকুন, বাজ, ঈগল ইত্যাদি খাওয়া মাকরুহে তাহরিমি। এটিও নিষিদ্ধের অন্তর্ভুক্ত। 

আর যেগুলো নখরবিশিষ্ট নয়, অর্থাৎ যা শুধু ঠোঁটের সাহায্যে খাবার গ্রহণ করে- এগুলো খাওয়া হালাল। এর মধ্য থেকে ওই সব কাক, যা শুধু নাপাকি ভক্ষণ করে সেগুলোও মাকরুহ; কিন্তু যেসব কাক বেশির ভাগ শস্যদানা, পোকামাকড় খায় সেগুলো হালাল।

★সুতরাং কাঠবিড়ালি খাওয়া হালাল।  

(০৫)
আল্লাহ আমাদের সব দোয়াই কবুল করেন। কিছু দোয়ার ফলাফল তাড়াতাড়ি দেন, কিছু দোয়ার ফলাফল আখিরাতের জন্য জমা রেখে দেন। 

★তবে কিছু কারনে বান্দার দোয়া বিফলে যেতে পারে।
১.ইখলাসহীনতা।
২. দোয়া কবুলের জন্য তাড়াহুড়া। 

রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে এবং এ কথা না বলে যে আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)

৩. গুনাহ ও রক্তের বন্ধন ছিন্ন করার দোয়া।

৪. দোয়ায় অমনোযোগিতা।

৫. গুনাহে অবিচলতা ।

৬. হারাম ভক্ষণ।

(০৬)
আল্লাহর কাছে বৈধ যেকোনো দোয়া করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...