আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
249 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

وَعَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ - رضي الله عنه - قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ. أَخْرَجَهُ ابْنُ خُزَيْمَةَ

ওয়ায়িল বিন হুজর থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে সলাত আদায় করেছিলাম, তিনি স্বীয় ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে তাঁর সিনার উপর স্থাপন করলেন। ইবনু খুযাইমাহ ৪৭৯  (বুলুগুল মারাম:২৭৮)

 প্রশ্ন১: উপরের হাদিস কি সহীহ?

প্রশ্ন:২:আবু হানিফা বুকের উপর হাত বাধার ফতোয়া দিয়েছেন (শুধু মহিলাদের ক্ষেত্রে) সেটা কোন হাদিস গ্রন্থের কত নং  সে হাদিসটা জানতে চাই। ইমাম শাফেঈ এর মতে নামাজে কোথায় হাত বাধতে হবে সেটার হাদিসসমূহ জানতে চাই।

প্রশ্ন৩: নামাজে নাভীর উপর হাত বাধার বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমানিত হাদিসসমূহ জানতে চাই।

প্রশ্ন ৪: সিহাহ সিত্তাহতে আবু দাউদে নাভীর নিচের হাত বাধাকে যঈফ বলা হয়েছে?কিন্তু মুসান্নাফ ইবনে শাইবাতে নাভীর নিচের হাত বাধার কথার হাদীস সহীহ বলে চালানো হয় তা কোন কোন বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিসরা (যেমন আসকালানী/দারাকুতনী/হাকেম/আলবানী/হাম্বল/বায়হাকী...) সহীহ বলেছেন নাকি বিশ্বের নামকরা মুহাদ্দিসরা কেউ সহীহ বলেন নি সেটা দলিলসহ জানতে চাই?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
হযরত ওয়াইল রা. বলেছেন,
صليت مع رسول الله صلى الله عليه و سلم ووضع يده اليمنى على يده اليسرى على صدره

আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামায পড়লাম। তিনি তার ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন।

অনেক মুহাদ্দিসিনে কেরামগন দের মতে  
এ হাদীসটি সহীহ নয়। কারণ:
এর সনদে মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈল আছেন। তিনি সুফিয়ান ছাওরী থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। মুয়াম্মালকে ইমাম বুখারী মুনকারুল হাদীস বলেছেন। তিনি একথাও বলেছেন, আমি যাকে মুনকারুল হাদীস বলবো, তার সূত্রে বর্ণনা করা বৈধ হবে না। তাছাড়া ইবনে সা’দ বলেছেন, ثقة كثير الغلط তিনি বিশ্বস্ত, তবে অনেক ভুল করতেন। আবূ যুরআ রাযী বলেছেন, في حديثه خطأ كثير তার হাদীসে অনেক ভুল; আবূ হাতেম রাযী বলেছেন, صدوق كثير الخطأ يكتب حديثه তিনি সাদূক বা সত্যনিষ্ঠ, তবে প্রচুর ভুল করতেন, তার হাদীস লিপিবদ্ধ করা যায়। (আল জারহু ওয়াত তাদীল, ৮/৩৭৪) দারাকুতনী বলেছেন, ثقة كثير الخطأ তিনি বিশ্বস্ত তবে অত্যধিক ভুলের শিকার। ইবনে মাঈন এক বর্ণনায় বলেছেন, সুফিয়ানের ক্ষেত্রে তিনি প্রমাণযোগ্য হওয়ার উপযুক্ত নন। (দ্র. তারীখে ইবনে মুহরিয, ১/১১৪) মুহাম্মদ ইবনে নসর বলেছেন, তিনি কোন বর্ণনার ক্ষেত্রে নিঃসঙ্গ হলে ভেবে চিন্তে দেখতে হবে, কেননা তিনি প্রচুর ভুলের শিকার ছিলেন। (দ্র. তাহযীবুত তাহযীব)
,
ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান আল ফাসাবী উল্লেখ করেছেন যে, সুলায়মান ইবনে হারব বলেছেন, 

وقد يجب على أهل العلم أن يقفوا عن حديثه ويتخففوا من الرواية عنه فإنه منكر يروي المناكير عن ثقات شيوخنا وهذا أشد فلو كانت هذه المناكير عن ضعاف لكنا نجعله له عذرا 

আলেমগণের উচিৎ, তার হাদীস গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক থাকা ও কম করে বর্ণনা করা। কারণ তিনি আপত্তিকর হাদীস বর্ণনা করতেন আমাদের বিশ্বস্ত উস্তাদগণ থেকে। এটা খুবই অন্যায়। কারণ এসব আপত্তিকর বর্ণনা যদি দুর্বলদের থেকে হতো তবে আমরা তাকে মাযুর বিবেচনা করতাম। (আল মারিফা ওয়াত তারীখ, ৩/৫২)

আস সাজী বলেছেন, صدوق كثير الخطأ وله أوهام يطول ذكرها 
তিনি সাদূক বা সত্যনিষ্ঠ, তবে প্রচুর ভুলের শিকার, সেগুলোর পরিমাণ এত বেশী যে,উল্লেখ করলে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে। (তাহযীবুত তাহযীব)
ইবনে হাজার আসকালানীও ফাতহুল বারী গ্রন্থে বলেছেন, وكذلك مؤمل بن إسماعيل في حديثه عن الثوري ضعف 

অর্থাৎ একইভাবে (সুফিয়ান) ছাওরী হতে মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈলের বর্ণনায় দুর্বলতা আছে। (দ্র, ৯খ, ২৮৮পৃ, ৫১৭২ হাদীসের অধীনে)

তাছাড়া স্বয়ং আলবানী রহ.ও মুয়াম্মাল কর্তৃক বর্ণিত সহীহ ইবনে খুযায়মার দুটি হাদীসকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। হাদীস দুটির নম্বর হলো ১১০৫ ও ১১৩৬।
,
মুয়াম্মালের দুজন সঙ্গী মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ ফিরয়াবী (আলমুজামুল কাবীর তাবারানী ২২/৩৩) ও আব্দুল্লাহ ইবনুল ওয়ালিদ (মুসনাদে আহমদ ৪/৩১৮; নাসাঈ, হাদীস নং ৮৮৯) (দুজনই বিশ্বস্ত রাবী) সুফিয়ান রহ.থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাদের বর্ণনায় ‘বুকের উপর’ কথাটি নেই।

আলবানী রহঃ আবুশ শায়খের উদ্ধৃতি তো দিয়েছেন। কিন্তু তার বর্ণনাটি পেশ করেন নি। অথচ উক্ত বর্ণনায় আছে, رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم وضع يده على شماله عند صدره. 
অর্থাৎ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম, তিনি ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে বুকের কাছে রাখলেন।
এ হাদীসের সনদেও মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈল আছেন। তাহলে তার বর্ণনায় ইযতিরাব বা অসংগতি পাওয়া গেল। কখনও বলেছেন বুকের উপর, কখনও বুকের কাছে।

এ হাদীসটি মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈল সুফিয়ান সাওরী থেকে বর্ণনা করেছেন, অথচ সুফিয়ান সাওরী রহ. নিজেই নাভীর নীচে হাত বাঁধতেন।
(সংগৃহীত)

তবে এই হাদীস সহীহ হওয়ার ব্যাপারে কিছু মুহাদ্দিসিনে কেরামগন দের মত রয়েছে।

আলবানী রহঃ হাদীসটি সম্পর্কে সহীহ ইবনে খুযায়মার টীকায় মন্তব্য করেছেন:

إسناده ضعيف لأن مؤملا وهو ابن اسماعيل سيئ الحفظ لكن الحديث صحيح جاء من طرق أخرى بمعناه وفي الوضع على الصدر أحاديث تشهد له

অর্থাৎ ‘এর সনদ দুর্বল। কেননা মুয়াম্মাল: তিনি ইসমাঈলের পুত্র: দুর্বল স্মৃতিশক্তির অধিকারী। তবে সমার্থক অন্যান্য সূত্রে বর্ণিত হওয়ায় হাদীসটি সহীহ। আর বুকের উপর হাত রাখার ক্ষেত্রে অনেক হাদীস রয়েছে, যা এর সমর্থন করে। সহীহ ইবনে খুযায়মা, ১/২৪৩ হাদীস নং ৪৭৯; আবুশ শায়খ, তাবাকাতুল মুহাদ্দিসীন বিআসবাহান, ২/২৮৬; বায়হাকী ২/৩০, হাদীস নং ২৩৩৬।’
(সংগৃহীত)

(০২)
শরীয়তে গ্রহণযোগ্য দলীল হল ৪টি। যথা- কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস।
এ ৪টি দলীলের মাধ্যমেই ইসলামী শরীয়ত পূর্ণতা পেয়েছে। এর কোন একটি মাধ্যমে কোন আমল প্রমাণিত হলেই তা দলীলসমৃদ্ধ হিসেবে সাব্যস্ত হয়ে যায়।
নারীরা নামাযে কোথায় হাত বাঁধবে? এ বিষয়ে কুরআনে এ সংক্রান্ত কোন আয়াত নেই।
কুরআনে না পেয়ে হাদীসের দিকে যাওয়া হয়। হাদীসের ভান্ডারের মাঝে কোন হাদীসে নারীরা কোন স্থানে হাত বেঁধে নামায আদায় করবেন তা আলাদাভাবে বর্ণিত হয়নি।
তাই এখন শরীয়তের ৩য় দলীল ইজমার দিকে যাওয়া হবে। এ বিষয়ে ইজমা খুঁজে পাওয়া যায়।
হযরত আব্দুল হাই লক্ষ্ণৌবী রহঃ লিখেছেনঃ
اما فى حق النساء فاتفقوا على ان السنة لهن وضع اليدين على الصدر، (السعاية-২/১৫৬)
আর মহিলাদের ক্ষেত্রে সকলেই ঐক্যমত্ব যে, তাদের ক্ষেত্রে সুন্নত হল তাদের উভয় হাতকে বুকের উপর রাখবে। {আসসিয়ায়াহ-২/১৫৬}
,
সুতরাং বুঝা গেল, নারীদের বুকের হাত বাঁধার মাসআলাটি ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। আর ইজমা শরীয়তে দলীল।
(সংগৃহীত)
,
★শাফেয়ী রহঃ এর মাযহাব মতে সীনার উপর হাত বাধা সুন্নাত।
তাদের নিকট সহীহ ইবনে খুযাইমার হাদীস দলিল।

(৩.৪)
হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নীচে রেখেছেন। সনদসহ রেওয়ায়েতের আরবী পাঠ এই-

حدثنا وكيع، عن موسى بن عمير، عن علقمة بن وائل بن حجر، عن أبيه قال : رأيت النبي صلى الله عليه وسلم  يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫১

এই বর্ণনার সনদ সহীহ। ইমাম কাসেম ইবনে কুতলূবুগা রাহ. (৮৭৯ হি.) বলেন- وهذا اسناد جيد
এটি একটি উত্তম সনদ।
(আততা’রীফু ওয়াল ইখবার রিতাখরীজি আহাদীছিল ইখতিয়ার-হাশিয়া শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা।)

ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. (২৩৮ হি.) বলেছেন, ‘নাভীর নিচে হাত বাঁধা রেওয়ায়েতের বিচারে অধিক শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক নিকটবর্তী।’

تحت السرة أقوى في الحديث تحت السرة أقوى في الحديث وأقرب إلى التواضع

 তাবেয়ী আবু মিজলায লাহিক ইবনে হুমাইদ রাহ. (মৃত্যু : ১০০ হি.-এর পর) নামাযে কোথায় হাত বাঁধবে-এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘ডান হাতের পাতা বাম হাতের পাতার পিঠের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৩

এই রেওয়ায়েতের সনদ সহীহ।
সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই -
حدثنا يزيد بن هارون قال : أخبرنا الحجاج بن حسان قال : سمعت أبا مجلز ـ أو سألته ـ قال : قلت كيف أصنع؟ قال : يضع باطن كف يمنيه على ظاهر كف شماله ويجعلها أسفل من السرة.
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.ও (মৃত্যু : ৯৬ হি.) এই ফতোয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬০

এই রেওয়ায়েতের সনদ হাসান। সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই-

حدثنا وكيع، عن ربيع، عن أبي معشر، عن إبراهيم قال : يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.

ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আশশাইবানী রাহ. (১৮৯ হি.) বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. নাভীর নিচে হাত বাঁধতেন। এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা এই নিয়মই অনুসরণ করি এবং এটিই (ইমাম) আবু হানীফার সিদ্ধান্ত।’-কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২১

সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

قال محمد : أخبرنا الربيع بن صبيح، عن أبي معشر، عن إبراهيم : أنه كان يضع يده اليمنى على يده اليسرى تحت السرة. قال محمد : وبه نأخذ وهو قول أبي حنيفة رحمه الله. (كتاب الصلاة، باب الصلاة قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى سترة)

প্রসঙ্গত আগেই বলা হয়েছে যে, সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল হচ্ছে হাত বাঁধা সংক্রান্ত মারফূ হাদীসসমূহের ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান রাহ. ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ-এর সূত্রে হাত বাঁধার মরফূ হাদীস বর্ণনা করার পর এই নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন।

রেওয়ায়েতটি এই-

أخبرنا أبو حنيفة، عن حماد عن إبراهيم أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يعتمد بإحدى يديه على الأخرى في الصلاة، يتواضع لله تعالى. قال محمد : ويضع بطن كفه الأيمن على رسغه الأيسر، تحت السرة، فيكون الرسغ في وسط الكف، (كتاب الأثار، كتاب الصلاة، باب الصلاة قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى سترة)

ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে এক হাতের উপর অন্য হাত বাঁধতেন। এভাবে তিনি আল্লাহর সামনে বিনীত হতেন।’
(ইমাম) মুহাম্মাদ বলেন, ‘ডান হাতের তালু বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে, নাভীর নিচে; সুতরাং কব্জি থাকবে হাতের তালুর মাঝে।’-কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২০

ইমাম তবারানী রাহ. হুজর আবুল আম্বাসের সূত্রে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর এই বিবরণ উল্লেখ করেছেন। তাতে আছে, ‘তিনি তার ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন এবং তা রাখলেন পেটের উপর।’
সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

حدثنا أبو مسلم الكشي ثنا حجاج بن نصير ثنا شعبة عن سلمة بن كهيل قال : سمعت حجرا أبا العنبس يحدث عن وائل الحضرمي أنه صلى مع رسول الله صلى الله عليه وسلم ...، ثم وضع يده اليمنى على اليسرى وجعلها على بطنه.

-আলমুজামুল কাবীর ২২/৪৪, হাদীস : ১১০
তেমনি সুনানে দারেমী ও আলমু’জামুল কাবীর তবারানীতে আবদুল জাববার ইবনে ওয়াইলের সূত্রে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর যে বিবরণ বর্ণিত হয়েছে, তাতে আছে, ‘তিনি ডান হাত বাম হাতের উপর কব্জির কাছে রাখলেন।’ সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

قال الإمام الدارمي في السنن (باب وضع اليمين على الشمال في الصلاة) : أخبرنا أبو نعيم، ثنا زهير، عن أبي إسحاق، عن عبد الجبار بن وائل، عن أبيه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم يضع يده اليمنى على اليسرى قريبا من الرسغ. انتهى
  ورواه الطبراني بطريق عبدان بن أحمد، ثنا عمرو بن عثمان الحمصي، ثنا إسماعيل بن عياش، عن يونس بن أبي إسحاق عن أبي إسحاق به.

-সুনানে দারেমী ১/২২৮; আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ২২/২৫, হাদীস : ৫২

নাভীর নিচে হাত বাঁধার বিষয়ে জয়ীফ সনদে বর্ণিত কিছু রেওয়ায়েতও আছে। তবে রেওয়ায়েতগুলোর বিষয়বস্ত্ত উপরে বর্ণিত হাদীস, আছার ও আমলে মুতাওয়ারাছ দ্বারা সমর্থিত।

★হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নাহ হচ্ছে নামাযে হাতের পাতা হাতের পাতার উপর নাভীর নিচে রাখা।’-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৬
সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই-
حدثنا محمد بن محبوب، حدثنا حفص بن غياث، عن عبد الرحمن بن إسحاق، عن زياد بن زيد، عن أبي جحيفة أن عليا رضي الله عنه قال : السنة وضع الكف على الكف في الصلاة تحت السرة.
 قال المزي في تحفة الأشراف ٨/٤٥٨، هذا الحديث في رواية ابي سعيد بن الأعرابي، وابن داسة وغير واحد عن أبي داود، ولم يذكره أبو القاسم.

★আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘নামাযে হাতের পাতাসমূহ দ্বারা হাতের পাতাসমূহ নাভীর নীচে ধরা হবে।’
সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-
حدثنا مسدد، حدثنا عبد الواحد بن زياد، عن عبد الرحمن بن إسحاق الكوفي، عن سيار أبي الحكم، عن أبي وائل قال : قال أبو هريرة رضي الله عنه : أخذ الأكف على الأكف في الصلاة تحت السرة.
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৮, তাহকীক : শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাহ; তুহফাতুল আশরাফ, হাদীস : ১৩৪৯৪
এই দুই রেওয়ায়েতের সনদে আবদুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক একজন রাবী আছেন। ইমাম তিরমিযী রাহ. তার সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে হাসান বলেছেন। দেখুন : জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৪৬২; আরো দেখুন : হাদীস ২৫২৭
আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে হাদীসটি (২৫২৬) বর্ণনা করার পর ইমাম তিরমিযী বলেন, কোনো কোনো মনীষী এই আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের স্মৃতিশক্তি সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন। আরবী পাঠ-
ا هذا حديث غريب وقد تكلم بعض أهل العلم في عبد الرحمن هذا من قبل حفظه وهو كوفي، وعبد الرحمن بن إسحاق القرشي مديني وهو أثبت من هذا. انتهى
উল্লেখ্য, শায়খ আলবানী রাহ.ও আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে শাওয়াহেদের (অন্যান্য বর্ণনার সমর্থনের) কারণে সিলসিলাতুস সহীহায় উল্লেখ করেছেন। দেখুন : সিলসিলাতুস সহীহা হাদিস

★আনাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘তিনটি বিষয় (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) নবী-স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত: ইফতারে বিলম্ব না করা, সাহরী শেষ সময়ে খাওয়া এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখা।’
ثلاث من أخلاق النبوة : تعجيل الأفظار، وتأخير السحور، ووضع اليد اليمنى على اليسرى في الصلاة تحت السرة.
-আলমুহাল্লা ৩/৩০; আলজাওহারুন নাকী ২/৩১
(সংগৃহীত)

★★★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নাভীর নীচে এবং নাভীর উপরে হাত বাধা সম্পর্কে  উভয় ধরণের রেওয়ায়ত বর্ণিত রয়েছে।আপনি পূর্ব থেকে কোনো মাযহাবকে অনুসরণ করে থাকলে সে মাযহাবের ব্যখ্যা অনুযায়ী আ'মল করবেন।এটাই স্বাভাবিক। এবং সেটাই আপনার জন্য সুন্নাহ।আর যদি পূর্ব থেকে কোনো মাযহাবকে অনুসরণ না করে থাকেন।অথবা হানাফি মাযহাবকে অনুসরণ করে থাকেন,তাহলে  নামাযে নাভির নিচেই হাত বাধবেন।
,
বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 112 views
...