আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
355 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)
কোন আলেমের কাছে প্রয়োজনীয় মাস-আলা জেনে নিলে বা শিখে নিলে

আমি সেটা পরিচিত কাউকে জানাতে পারবো?

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكَ مِنْ رَّبِّكَ،  وَ اِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَه .
হে রাসূল! আপনি পৌঁছে দিন, যা আপনার কাছে আপনার রবের তরফ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। যদি তা না করেন, তবে তো আপনি আল্লাহর রেসালা-পয়গাম পৌঁছালেন না। -সূরা মায়েদা (৫) : ৬৭

উপরোক্ত আয়াত থেকে প্রতিয়মান হয় যে,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম দায়িত্ব হল,দ্বীনের প্রচার ও প্রসার।

আর তালীম ও তরবিয়তকে নবুওতের ফারায়েজে মানসাবি (নবুওতের পদগত দায়িত্ব) হিসাবে ঘোষণা করে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
لَقَدْ مَنَّ اللهُ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ اِذْ بَعَثَ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَكِّیْهِمْ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَة .
মুমিনদের উপর আল্লাহ বড় অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে এমন একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যিনি তাদের সামনে আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করে শোনান, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন, তাদেরকে কিতাব ও হিকমতের তালীম প্রদান করেন। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৬৪

আল্লাহ তাআলার দরবারে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কী কী মৌলিক কাজের জন্য একজন নবী পাঠানোর আরজি পেশ করেছেন, তা কুরআন মাজীদে এসেছে এইভাবে-
رَبَّنَا وَ ابْعَثْ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِكَ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُزَكِّیْهِمْ ، اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ.
হে আমাদের রব! তাদের মাঝে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যিনি তাদের সামনে আপনার কালাম তিলাওয়াত করে শোনাবেন, কিতাব ও হিকমতের তালীম প্রদান করবেন এবং তাদের তাযকিয়া করবেন। -সূরা বাকারা (২) : ১২৯

নবীজী নিজেই ইরশাদ করেন-
إِنّ اللهَ لَمْ يَبْعَثْنِي مُعَنِّتًا، وَلَا مُتَعَنِّتًا، وَلَكِنْ بَعَثَنِي مُعَلِّمًا مُيَسِّرًا.
কাউকে কষ্টে নিক্ষেপকারী বা কারো পদস্খলনকামী হিসাবে আল্লাহ আমাকে পাঠাননি। আমাকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন সহজকারী ও শিক্ষকরূপে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১০৪

অন্য হাদীসে এসেছে-
خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ ذَاتَ يَوْمٍ مِنْ بَعْضِ حُجَرِهِ، فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَإِذَا هُوَ بِحَلْقَتَيْنِ، إِحْدَاهُمَا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ، وَيَدْعُونَ اللهَ، وَالْأُخْرَى يَتَعَلّمُونَ وَيُعَلِّمُونَ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: كُلّ عَلَى خَيْرٍ، هَؤُلَاءِ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ، وَيَدْعُونَ اللهَ، فَإِنْ شَاءَ أَعْطَاهُمْ، وَإِنْ شَاءَ مَنَعَهُمْ، وَهَؤُلَاءِ يَتَعَلّمُونَ وَيُعَلِّمُونَ، وَإِنّمَا بُعِثْتُ مُعَلِّمًا فَجَلَسَ مَعَهُمْ.
একবার নবীজী কামরা থেকে বের হয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন মসজিদে দুটি হালকায় দ্বীনী কাজ হচ্ছিল। এক হালকার লোকেরা কুরআন মাজীদ পাঠ করছিলেন এবং দুআ করছিলেন। আরেক হালকার লোকেরা দ্বীন শিখছিলেন এবং শিক্ষা দিচ্ছিলেন। নবীজী বললেন, উভয় হালকা নেক কাজে রয়েছে। এরা কুরআন পাঠ করছে দুআ করছে। আল্লাহ চাইলে তাদের বাসনা পূরণ করবেন বা করবেন না। আর এরা দ্বীন শিখছে শেখাচ্ছে। ‘আমি তো শিক্ষক হিসাবে প্রেরিত হয়েছি’-এই বলে নবীজী শিক্ষার মজলিসে বসে পড়লেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২২৯

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
يَحْمِلُ هَذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُولُهُ، يَنْفُونَ عَنْهُ تَحْرِيفَ الْغَالِينَ، وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِينَ، وَتَأْوِيلَ الْجَاهِلِينَ.
প্রত্যেক প্রজন্মের নির্ভরযোগ্য নেককার উত্তরসূরীরা (পূর্বসূরীদের কাছ থেকে) এই দ্বীনী ইলম ধারণ করবে। আর তারা গুলুকারীদের (বাড়াবাড়ির) বিকৃতি, ইসলাম বিরোধী বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার এবং মূর্খ-জাহেলদের অপব্যাখ্যা বিদূরিত করবে (দ্বীনের স্বরূপ সংক্ষরণ করবে)। -শরহু মুশকিলিল আছার, বর্ণনা ৩৮৮৪

নবীজী ইরশাদ করেন-
مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ.
তোমাদের কেউ গর্হিত কিছু দেখলে হাত দিয়ে (শক্তি প্রয়োগ করে) পাল্টে দিবে, এই সামর্থ্য না থাকলে জবান দিয়ে চেষ্টা করবে, তাও না পারলে হৃদয় দিয়ে ঘৃণা করবে। আর এটা ঈমানের দুর্বলতম দাবি। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৯


বিদায় হজ্বে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
بلغوا عني ولو أية 
তুমি যদি একটি আয়তও জানো,তবে সেটা আমার পক্ষ্য থেকে প্রচার করো।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি কোনো মাস'আলা জানার পর সেটার দাওয়াত দিতে পারবেন।তবে কোথাও পূর্ব থেকে কোনো সুন্নত বা ইমামের অনুসরণ হয়ে থাকলে, সেখানে ভিন্ন সুন্নত বা ইমামের মতামতকে প্রচার করা যাবে না।কেননা তখন ফিতনার সূচনা হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (49 points)
জাযাকাল্লাহ শাইখ।খুবই সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা'আলা আপনার ইলমে আরো বারাক্বাহ বাড়িয়ে দিবেন ইনশা-আল্লাহ।(আমীন)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...