উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সর্ব প্রথম আল্লাহর প্রশংসা আদায় করছি,যিনি রহম ও করম করে আপনাকে দ্বীনের পথে নিয়ে এসেছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আপনারা যেহেতু হারাম রিলেশন থেকে বের হয়ে এসেছেন।
আল্লাহ তায়ালা আপনাদের চিরকাল দ্বীনের উপরে রাখুন।
আমিন।
হ্যাঁ আপনারা দুজনেই পরিবারের সম্মতির জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে এই অপেক্ষার কারনে যেনো কেহ শরীয়তের খেলাফ কোনো কাজে জড়িয়ে না পড়ে।
কেহ যেনো অন্যকে নিয়ে কুচিন্তা না করে।
,
কোনো মহিলার মাঝে দ্বীনদারী, উন্নত চরিত্র, জ্ঞান-গরিমা, মেধা, যোগ্যতা, সৌন্দর্য ইত্যাদি দেখে পছন্দ হলে তাকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করা যাবে। কারণ একজন ভালো স্ত্রী একজন পুরুষের জীবনের বিশাল প্রাপ্তি- তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এতে সে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে লাভবান হবে।
 মহান আল্লাহ আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য এ দুআ শিক্ষা দিয়েছেন:
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাদেরকে থেকে রক্ষা কর জাহান্নামের আগুন থেকে।” (সূরা বাকারা: ২০১)
আর ভালো স্বামী/স্ত্রী, সুসন্তান, অর্থ-সম্পদ, ভালো চাকুরী, উপকারী বন্ধু, সৎ প্রতিবেশী, সুস্বাস্থ্য ইত্যাদি সবই দুনিয়াবি কল্যাণ। সুতরাং সব কল্যাণকর বিষয় পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করায় কোনো দোষ নেই।
তবে এ জন্য দুটি শর্ত রয়েছে:
১) আপনি যাকে স্ত্রী হিসেবে পেতে চান অবশ্যই তার দ্বীনদারী ও চরিত্র সম্পর্কে আগে নিশ্চিত হবেন তারপর দুআ করবেন।
২) সে ব্যক্তির সাথে আপনার বিবাহ বৈধ কি তা নিশ্চিত হতে হবে। যদি তার সাথে আপনার বিবাহ বন্ধন বৈধ হয় অর্থাৎ তাকে বিয়ে করতে শরীয়তের কোন বাধা না থাকে তাহলে তাকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য দুআ করতে পারবেন। যেমন: সে যেন বংশগত, দুগ্ধ পান বা বৈবাহিক সূত্রে আপনার মাহরামদের অন্তর্গত না হয়। কেননা মাহরাম হলে আপনার সাথে তার বিবাহ বন্ধন বৈধ নয়।
– অথবা আপনি যদি অন্য কারো স্ত্রী হয়ে থাকেন তাহলে তো তার নিকট থেকে শরীয়ত সম্মত পদ্ধতিতে তালাক হওয়া পর্যন্ত অন্য কারো সাথে আপনার বিবাহ বন্ধন অবৈধ।
,
★আপনারা শরয়ী সীমারেখার আওতায় থেকে এক জন আরেকজনকে পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারবেন।
তবে দোয়ার মধ্যে অবশ্যই এমন কথা থাকতে হবে যে হে আল্লাহ এই মেয়েটি/ছেলেটি যদি দ্বীন,দুনিয়া,আখেরাত সব দিক থেকেই আমার জন্য কল্যাণ জনক হয়,তাহলে আমাদের দ্রুত বিবাহের ব্যবস্থা করে দিন।
হে আল্লাহ আর যদি ঐ ছেলে/ মেয়ে যদি দ্বীন,দুনিয়া,আখেরাত সব দিক থেকেই আমার জন্য অকল্যাণ জনক হয়,তাহলে আমার অন্তর থেকে তার মুহাব্বত দূর করে দিন।
এবং তার অন্তর থেকে আমার মুহাব্বত দূর করে দিন।
আমার জন্য ভালো কিছুর ফায়সালা করুন।
এক্ষেত্রে আপনারা নামাজ পড়ে এই দোয়া পড়তে পারেন
اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي
وَمَعِيشَتِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي، وْ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ، فَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعِيشَتِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي، ، وْ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ، فَاصْرِفْهُ عَنِّي، وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ،
এ দুআর যেখানে “হাজাল আমর” শব্দটি আসবে, সেখানে মনে মনে যে কাজটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন, সেটি উচ্চারণ করবে আরবীতে বা মনে মনে সে বিষয়টি ভেবে নিবেন।
★এখানে ঐ বিবাহের কথা বলবেন।
হাদীস শরীফে ইস্তেখারা করার কথা এসেছে
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الاِسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلاَّمُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعِيشَتِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي، أَوْ قَالَ: فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ، فَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعِيشَتِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي، أَوْ قَالَ: فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ، فَاصْرِفْهُ عَنِّي، وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ، قَالَ: وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ. (سننر الترمذى، رقم الحديث-480
আলোচ্য হাদীসটিতে ইস্তেখারার দোয়া বলা হয়েছে।
চাইলে পুরোপুরি ইস্তেখারার নিয়তে এই দোয়া পড়তে পারেন।
،
(উল্লেখ্য কোনো কোনো উলামায়ে কেরামদের মতে নির্দিষ্ট মেয়েকে বিবাহের জন্য দোয়া করা জায়েজ নেই।তাই সতর্কতামূলক নির্দিষ্ট মেয়ের সাথে বিবাহের জন্য দোয়া না করাই ভালো।)