আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
271 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (34 points)
edited by
মুফতি ওয়ালি উল্লাহ হুজুরের কাছে প্রশ্ন।

আসসালামু আলাইকুম হুজুর। কষ্ট করে আমার কথাগুলো বুঝবেন দয়া করে বিরক্ত হবেন না।আমি জানিনা বুঝিয়ে বলতে পারলাম কিনা।
১।কেউ যদি " আজ রাতেই হবে মনে হচ্ছে বাচ্চা, এই কথার সাথে যদি তালাকের নিয়ত চলে আসে। এইটা বলতে গিয়ে মনে মনে ভাবে আজ রাতেই হবে মনে হচ্ছে তালাক।
কিছুক্ষণ পর    যদি আবার সে ভেবে ফেলে সে প্রথমে ভেবেছিল আজ রাতেই হবে *****। তাহলে কি ***** না দিলেও পতিত হয়ে যাবে রাতেই??

২।  কেউ মনে মনে তালাকের একটা বিষয় নিয়ে ভাবার সময় যদি ভাবে," সে সময় কি তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিয়ে দিলাম নাতো?" এই কথা ভাবার সময় খাতায় কিছু লিখার সময় "হ্যাঁ"লিখছিল অন্য কারনে। তাহলে এই হ্যাঁ লিখার কারণে কি মনে মনে আসা প্রশ্নের উত্তর হয়ে যাবে?? মানে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিলামনা তো? এই প্রশ্নের উত্তর  হয়ে যাবে না তো? মূলত যে সময়ের কথা ভাবছিল তখন মিথ্যা  স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়নি, তাও কি এই অন্য  কারনে বা অন্যমনস্ক হয়ে হ্যাঁ লিখার জন্য মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়ে যাবে??
 অন্যমনস্ক হয়ে হ্যাঁ লিখছিল কিন্তু মনে আসা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য না। তাহলে সমস্যা  হবে কিনা??

৩।আপনার কাছে কেউ প্রশ্ন করতে গিয়ে তালাকের সুস্পষ্ট শব্দ স্টার দিয়ে অর্থাত ***** এইভাবে লিখার পর যদি মনে মনে  ভুল করে নিজের কথা ভেবে ফেলে মনে মনে। কিন্তু লিখার সময় কোন নিয়ত করেনি, নিজের কথা ভেবে লিখেনি আপনার কাছে প্রশ্ন করতে গিয়ে লিখছিল। কিন্ত লিখার পর সাথে সাথেই যদি মনে মনে ভেবে ফেলে নিজের কথা বা নিজেকে দেওয়ার কথা ভেবে ফেলে।।তাহলে কি পতিত হয়ে যাবে তার নিজের উপর??লিখার সময় ভয়ে ভয়েই লিখেছে। লিখার পর যখন লিখাটা মনে মনে ভাবতে গেছে তখন নিজের কথা ভুল করে মনে মনে ভেবে ফেলে। সে মুখে কিছুই বলেনি। মনে মনে ভেবেছে। সে একজন মহিলা এবং তার তালাকের অধিকার আছে।

৪।  মহিলারা কি শুধু সুস্পষ্ট  **** বলে নিজের উপর নিতে পারে?? নাকি পুরো কথাটাই মুখে বলতে হবে বা লিখতে হবে? মানে নিজের উপর তালাকের  নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ বলতে হবে?? নাকি শুধু ***** বলেও নিজের উপর নিতে পারবে?

৫। হুজুর  যদি কোন মহিলা উদাহরণ দিতে গিয়ে শুধু " তালাক " শব্দটি লিখে বা স্টার দিয়ে ***** এইভাবে লিখে।  এবং লিখার পরে যদি মনে মনে নিজেকে দেওয়ার কথা ভেবে ফেলে তাহলে কি তাই পতিত হয়ে যাবে? লিখার সময় নিজের জন্য লিখেনি উদাহরণ স্বরূপ লিখেছিল, লিখার কিছুক্ষণ পর  মনে মনে ভাবার সময় যদি নিজের কথা ভাবে তাহলে হুকুম কি??,

৬। হুজুর আমার সন্দেহ হয় কোন কারনে বা ভুল করে আমার ****** হয়ে গেল কিনা? এখন আমি ইস্তিখারা সালাত আদায় করতে পারি চিন্তা মুক্ত হবার জন্য?  এবং সঠিকভাবে করতে পারলে আমার মনে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই কি আল্লাহর ফয়সালা বলে মেনে নিবো??

 হুজুর দয়া করে বলেন আমি কিভাবে এইসব থেকে বাচতে পারি।  খুবই অশান্তিতে থাকি আমি। এইভাবে অশান্তিতে থাকলে আর যদি সবকিছুতেই সন্দেহ হয় তাহলে সারাজীবন সংসার করবো কিভাবে?আমার খালি মনে হয় নাজানি আমার সংসারের কোন ক্ষতি হয়, না জেনে যাতে হারামের মধ্যে বসবাস না করি৷ আল্লাহর কাছে যাতে অপরাধী না হয়ে যাই৷ ভয়ে থাকি তাই, আর আমার স্বামীর থেকে আমি আলাদা হতে চাইনা কখনোই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিতসুচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক না দিলে সেই রাতে তালাক পতিত হবেনা।
উক্ত নিয়ত মনে আসার দ্বারা কোনো সমস্যা হবেনা।
,
(০২)
এই হ্যাঁ লিখার কারণে মনে মনে আসা প্রশ্নের উত্তর হয়ে যাবেনা।
"মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিলামনা তো" এই প্রশ্নের উত্তর  হয়ে যাবে না। 

(০৩)
এতে কোনো তালাক হবেনা। 
হবেনা।

(০৪)
নিজের উপর তালাকের নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ বলতে হবে।

(০৫)
এতে তালাক হবেনা।
পেরেশানী হবেননা।

(০৬)
আপনার কোনো ইস্তেখারার নামাজ পড়তে হবেনা।
আপনার কোনো তালাক হয়নি। 
এই ব্যাপারে আর টেনশন করবেননা।
পরামর্শ থাকবে তালাক সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা না পড়ার।
এ সংক্রান্ত কোনো আলোচনা কাহারো সাথে করবেননা।  
তালাকের বিষয় মনে আসতেই দিবেননা।
বিষয়টি মাথায় আসলেই অন্য কথা/কাজে মনোযোগী হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...