আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমার প্রশ্ন তিনটা
১.আমার বয়স ১৫ বছর।আমার মাহরাম হারাম উপার্জন করেন। আমি জানি আমার জন্য প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা জায়েজ আছে।(যেহেতু বর্তমানে আমার আর রিজিকের অন্য কোনোই ব্যাবস্থা নেই)। কিন্তু, এইটা জানা সত্ত্বেও আমার সাভাবিক জীবনে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটছে।আমি ঠিকভাবে খেতে ও পারছি না।যেমন ধরেন যেই জায়গায় কমপক্ষে আমার ১৫০০ ক্যালরি খাওয়া উচিত বলে মনে করি, সেই জায়গায় গড়ে আমার হয়ত ৫০০ ক্যালরি ও খাওয়া হচ্ছে না।আমি ঠিকভাবে খেতে ও পারছি বা,মনের মধ্যে শুধুই আল্লাহর ভয় কাজ করছে,।হারাম খেলে তো আল্লাহ কোনো ইবাদাত ই কবুল করবেন না!আমি জানি এমন চলতে থাকলে আমি খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়বো,শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধবে।কিন্তু তা সত্ত্বেও পারছি না।তাছাড়া আমার গভীর রাতে পড়াশুনা করার ইচ্ছা হয়।কিন্তু আমি আমার লাইট টা জালিয়ে পড়তে বসি না।মামা কারেন্ট বিল টা দেয় তাই।আমি আমার মোবাইলের লাইট জালিয়েই পড়ি।(যেহেতু এটাতে বিদ্যুৎ একটু কম খরচ হবে)।যদি একটু বলতেন এটা কি শয়তানের ওয়াসওয়াসা কি না।এটা কি তাকওয়ার থেকে বেশি হয়ে যাচ্ছে?

২.ধরেন বাসায় রুটি বানানো হলো। ওইখানে যে আটা টা ব্যাবহার করা হয়েছে সেইটা হালাল, কিন্তু অন্যান্য উপকরণ গুলো হারাম,তাহলে কি ওই রুটি টা হালালের পর্যায়ে পড়বে নাকি হারামের?

৩.ধরেন বাসায় খাবার বানানোর হালাল একটা উপাদান রয়েছে।কিন্তু, এখন সেই হালাল উপাদান দিয়ে খাবার বানাতে গেলে অনেক সময় অপচয় হবে+পরিবারের সদস্যরা বাকা চোখে তাকাবে, এমতাবস্থায় কি আমি ঘরে  করা সেই হারাম খাবার টা খেতে পারবো?(যদিও দুইটার পুষ্টিগুন প্রায় কাছাকাছি)

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/23610/?show=23612#a23612 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও” (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

وَفِي جَامِعِ الْجَوَامِعِ: اشْتَرَى الزَّوْجُ طَعَامًا أَوْ كِسْوَةً مِنْ مَالٍ خَبِيثٍ جَازَ لِلْمَرْأَةِ أَكْلُهُ وَلُبْسُهَا وَالْإِثْمُ عَلَى الزَّوْج ِتَتَارْخَانِيَّةٌ

যদি স্বামী সন্দেহজনক মাল দ্বারা খাদ্য বা কাপড় ক্রয় করে,তাহলে স্ত্রীর জন্য উক্ত খাদ্য এবং কাপড়-কে গ্রহণ করা জায়েয রয়েছে। গুনাহ অবশ্য স্বামীরই হবে। (তাতারখানিয়া)(রদ্দুল মুহতার-৬/১৯১)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

১. যদি কোন নারীর আলাদা কোন উপার্জন না থাকে, তাহলে মাহরামের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ নেয়া জায়েজ হবে। সেই সাথে তার উচিত স্বীয় মাহরাম/স্বামীকে সর্বদা হারাম ছেড়ে দিয়ে হালাল উপার্জন করতে তারগীব ও উৎসাহ দিতে থাকবে। যদি মাহরাম বা স্বামীর উপার্জন ছাড়া নিজস্ব হালাল সম্পদ দিয়ে চলা সম্ভব হয়, তাহলে স্বামীর হারাম টাকা নেয়া বৈধ হবে না।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার জন্য নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা জায়েয আছে। পড়াশুনার জন্য লাইট জ্বালিয়ে পড়াও জায়েয আছে। তবে এই বিষয়ে খুব বেশী পেরেশান হয়ে খাওয়া দাওয়া বাদ দেওয়া মোটেও উচিত হবে না। বরং আপনার জন্য করণীয় হলো, হিকমতের সাথে স্বীয় মাহরামকে হারাম পরিত্যাগ করতে উৎসাহ প্রদাণ করবেন এবং তার জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট বেশী বেশী দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তায়ালা তাকে হারামে থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করেন।

২. রুটি হালাল হবে। তবে হারাম উপকরণ ব্যবহার করা জয়েয হবে না।

৩. কোন হারাম খাবার খাওয়া জায়েয হবে না। কিছু সময় ব্যায় হলেও হালাল উপকরণ ব্যবহার করে খাদ্য সামগ্রী প্রস্তত করাই শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...