আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (72 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,

শায়েখ সকাল ৭-৮ টার মাঝে দেখা একটা স্বপ্ন তুলে ধরছি:

এক মসজিদে আমি আর আমার ভাই নামাজের জন্য গেলাম। মনে হয় জুম্মার নামাজ। কিন্তু সেখানে কাতার ঠিক করা নিয়ে চাপাচাপির কারণে একটা গন্ডগোল বেধে গেল। যার ফলে ফরজ নামাজই হয়ত যে যার মত পারলো পড়ে নিল। রমনকি ইমামও। কিন্তু আমি পড়তে পারিনি। পরে বাইরে অনেক বড় খালি জায়গা ছিল সেখানে বের হলাম নামাজটা পড়ে নিতে কিন্তু সেখান্র একজন কে (হয়ত বন্ধু) কে বলছি নামাজ পড়ে একজায়গায় খেলতে যাব। কিন্তু পুরো মাঠে কোথাও নামাজ পড়ার সুযোগ পেলাম না। একজায়গায় জায়নামাজ বিছাতে যাব সেখানে দেখি মাটি ফাঁকা হয়ে আছে আমি কবর মনে করে ভয় পেয়ে গেলাম বললাম কবরের উপরে নামাজ পড়ে কিভাবে পড়ে অন্যরা বলল সেখানে দুইটা গাছ নাকি নিজেদের মধ্যে সংঘাতে মরে ভেংগে আছে কোন কবর না। তারপর মাঠের অন্য স্থানে দেখি অনেক মানুষ নামাজ না পড়তে পারার কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে কিন্তু আমি যে স্থান পেলাম সেটা প্রায় খালি হলেও অনেক জোড়ে গান বাজছিল। যাতে আমি মনে মনে ভাবছি এজন্যই আল্লাহ এসব শুনতে বারণ করেন কেননা নামাজের সময় পূর্ণ মনোযোগ আনা যায় না। কথা ন্তু সেখানেও নামাজ আদায় করতে পারলাম না। পরে একটা খালি ঘরে নামাজ পড়তে গেলাম যেখানে আমার খালা আমার ভাই ও আমার এক মামা উপস্থিত। আমি আশে পাশে মানুষ থাকায় বিচলিত হয়ে ২রাকাত নামাজের ১ম রাকাত এ অনেক ভুল করলাম যেমনঃ রূকুর পরে না দাড়ানো, দুই পা গুণ আকারে বসে যাওয়া। এতে আমার খালা মামারা অবাক হচ্ছিপ এবং আমি ভালোভাবে নামাজ আদায় করতে জানিনা ভুল করছি এমন  মন্তব্য করছিল। যার ফলে আমি ২য় রাকাত খুব সুন্দর করে আদায় করি। কিন্তু নামাজের মধ্যেই ভাব উদয় হল এটা রিয়া হতে পারে তাই ভাবলাম নামাজ শেষ এ কালিমা পড়ে নেব কেননা রিয়া এক প্রকার শিরক। এই নামাজ চলার সময়ই আমার আরেক মামা পরিকল্পনা করছিল অই স্থান থেকে অন্য কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায় কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল নতুন একস্থানে খেলতে যাওয়া।

এই স্বপ্ন কি নিছক কল্পনা? কোন ভয়ংকর অবস্থা প্রকাশ করছে কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
উল্লেখিত স্বপ্ন এটি স্বপ্নের ৩য় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হচ্ছে।
যেহেতু এটি কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন,তাই এটি নিয়ে টেনশনের কিছু নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...