আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহ।
১। গতকাল এক আপুর সাথে কথা প্রসঙ্গে বললেন যে স্কাই ডাইভিং বা বাঞ্জি জাম্পিংয়ের মত এক্সট্রিম স্পোর্টস (এডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়) গুলো নাকি শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম কারণ এতে জীবনের ঝুঁকি থাকে। এই কথা উঠে যখন আমি ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে পর্বতারোহণকারীরা যে এভারেস্ট বা বিভিন্ন মহাদেশের উচ্চতম শৃঙ্গে ওঠেন, এভাবে কি তারা দ্বীনের কোন খেদমত করতে পারছেন কিনা। তা যদি না হয়ে থাকে তবে কি পর্বতারোহণ হারাম (শুধুমাত্র পর্বতজয়ী খেতাব পাওয়ার জন্য এডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে)? হালাল হলে মেয়েদের জন্য কি মাহরাম সহ এরকম পর্বত জয় করা জায়েজ আছে? একই কথা এক্সট্রিম স্পোর্টসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
২।আমার নানা আমার মা ও মামাদের এমনভাবে গড়ে তুলেছেন যেন তারা নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে পারে। আমার মা যেমন ঘরের কাজ থেকে শুরু করে বাজার ঘাট, পানির কল নষ্ট হলে ঠিক করা, লাইট বাল্ব পালটানো, screw driver দিয়ে কিছু ফিক্স করা, ইলেকট্রিক কাজ এসবে পারদর্শী এবং বাসায় কিছু নষ্ট হলে মিস্ত্রি আসার আগে প্রাথমিক সামালটা তিনিই দিয়ে থাকেন। আমার বাবা এসব কাজে পারদর্শী নন। এমনকি মিস্ত্রি আসলে তাদের সাথে ডিল করার কাজটাও আম্মু করে থাকেন। আব্বু এসময় ঘরে গিয়ে বসে থাকেন (জানি না অভ্যাসবশত কিনা), এমনকি আম্মু ডাকলেও বলেন যে তুমি কর। মাঝে মাঝে মিস্ত্রির সাথে ডিল আমাকেও করতে হয়। আম্মু যেসব কাজ করেন (যন্ত্র ঠিক করার) এসব আমাকেও শিখানোর চেষ্টা করেছেন। জীবনের একটা সময়ে আমি যখন জানতে পারি ইসলামে ছেলে মেয়ে একে অপরের বেশ ধরে থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ তখন আমি আর এসব কাজ শিখতে চাইনি (ছেলেদের কাজ মনে করে), এজন্য এসব কাজে( পানির কল নষ্ট হলে ঠিক করা, লাইট বাল্ব পালটানো, screw driver দিয়ে কিছু ফিক্স করা, ইলেকট্রিক কাজ ইত্যাদি) পারদর্শী হওয়াটা হয়ে ওঠেনি। আমার কৌশল কি ঠিক ছিল? এখন আব্বু আম্মুর বয়স হয়েছে, তারা চান আমি এসব হ্যান্ডেল করি, যেহেতু আমার ভাইও বিদেশে থাকে। আর ভাইয়া থাকলে ভাইয়াই চাইতেন আমি এসব কাজ করি যাতে বাইরের জগত কীভাবে সামলাতে হয় জানতে পারি। এ বিষয়ে আমার কর্মপরিকল্পনা কি হওয়া উচিত? আমি কি এসব কাজ শিখব?
৩। বলা হয় যে অনেক মানুষের সাথে মিশলে আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে, নিজের কমফোরট জোন থেকে বের হলেও এরকম হয়। এখন পর্দার কারণে ও বাংলাদেশে সব জায়গায় মেয়েদের আলাদা জায়গা না থাকায় মেয়েরা পড়াশুনার বাইরে অন্য কাজে যুক্ত হয়ে নিজেদের গড়ে তুলবে সেরকম সুযোগ কম। যেমন একটা পথ শিশুদের স্কুলে অবসর সময়ে পড়াব বা voluntary service দিব তখনো চিন্তা করতে হয় পর্দা মেইনটেইন হবে তো, কেউ ছবি তুলবে না তো, কাজে প্রপার বারাকাহ থাকবে তো? আমি অনেক আত্ম দ্বিধায় ভুগে থাকি। কীভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াব?
৪। আগের প্রশ্নে বললাম যে voluntary work করতে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা। এখন আবার শুরু হয়েছে ভলানটারি কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলে উচ্চশিক্ষার দিকে বা চাকরির বাজারে বেশ উঁচু নজরে দেখা হয়। এজন্য কোন সেবামূলক কাজে যেতে গেলে একটা বিশুদ্ধ নিয়্যাহ নিয়ে আগাবো সেটা আর হয় না, মানে পক্ষপাতিত্ব চলে আসে। আমার কি করণীয়? আমি কি অসহায় মানুষকে শুধু টাকা পয়সা দিয়েই সাহায্য করে যাব? তাদের জন্য এছাড়া আর কিছুই করে পারব না?