আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
কোন চিকিৎসক এর সাথে চুক্তি হলো যে সে চিকিৎসা করবে কিছু টাকা ১৫০০ টাকা চিকিৎসার সময় এবং বাকি টাকা ১৫০০ টাকা চিকিৎসার পরে দিতে হবে।কিন্তু পরে দেখা গেল ওই চিকিৎসক ভুয়া বা রোগ  আরও বেশি হলো  তাইলে কি বাকি ১৫০০ টাকা দিতে হবে?? যদি না দেওয়া হয় তবে কি ওই চিকিৎসক এর কাছে দায়বদ্ধতা থাকবে কিনা??

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,
ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু বা অঙ্গহানি হলে দোষী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন দেশে নেই। কিন্তু ইসলামে এ ব্যাপারে স্পষ্ট বিধান রয়েছে। ইচ্ছাকৃত হত্যা বা ভুলবশত হত্যা উভয়ের দণ্ডবিধি পবিত্র কোরআনে রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَن يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلَّا خَطَأً ۚ وَمَن قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَأً فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰ أَهْلِهِ إِلَّا أَن يَصَّدَّقُوا

 ‘কোনো মুমিনকে হত্যা করা কোনো মুমিনের কাজ নয়। তবে ভুলবশত হলে তা ভিন্ন বিষয়। কেউ কোনো মুমিনকে ভুলবশত হত্যা করলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে এবং তার পরিজনবর্গকে দিয়ত অর্পণ করবে। যদি না তারা ক্ষমা করে। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৯২)

 

এই আয়াতে দিয়ত বা রক্তপণ হচ্ছে প্রায় ১৯ ভরি সোনা বা দুই হাজার ৬২৫ ভরি রুপা কিংবা ১০০ উট (নির্দিষ্ট বয়সের)। এটা হচ্ছে পূর্ণ দিয়ত, যা নিহত ব্যক্তি পুরুষ হলে ওয়াজিব হয়। আর নারীর দিয়ত সর্বক্ষেত্রে পুরুষের অর্ধেক। (হেদায়া, ৪/৬৫৫)

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে সুপরিচিত নয় এমন কেউ যদি চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগীর ক্ষতি করে ফেলে, তাহলে তার ওপর জরিমানা আরোপ হবে। ’ হাদিসের বর্ণনাকারী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এটা শুধু ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে নয়, বরং শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩০)

 

হাদিসের অর্থ হচ্ছে, চিকিৎসক যদি অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে রোগীর ক্ষতি করে ফেলেন, তাহলে তাঁকে জরিমানা দিতে হবে। মুফতি রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি (রহ.) বিষয়টি এভাবে বিশ্লেষণ করেছেন যে ডাক্তার দুই ধরনেরএক. বিজ্ঞ ডাক্তার, দুই. অনভিজ্ঞ ডাক্তার।

 

কোনো বিজ্ঞ ডাক্তার যদি রোগীর সম্মতিতে চিকিৎসার সব নিয়ম মেনে চিকিৎসা করেন, অস্ত্রোপচার করেন, তদুপরি দুর্ঘটনাক্রমে রোগীর মৃত্যু, অঙ্গহানি বা অন্য কোনো ক্ষতি হয়ে যায়, তাহলে ডাক্তার দায়ী হবেন না। তাঁর ওপর কোনো জরিমানা বর্তাবে না। বিজ্ঞ ডাক্তার যদি রোগীর অনুমতি ছাড়াই চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার করেন এবং চিকিৎসাশাস্ত্রীয় নিয়ম-নীতিবহির্ভূত হয় আর তাতে রোগী মারা যায় তাহলে চিকিৎসকের ওপর দিয়ত (রক্তপণ) আরোপিত হবে। কোনো অঙ্গহানি হলে শরিয়তের নির্ধারিত জরিমানা (অঙ্গের পণ) বর্তাবে।

 

অনভিজ্ঞ ডাক্তারের সঠিক বা ভুল চিকিৎসায় যেকোনোভাবেই রোগীর মৃত্যু হলে ডাক্তারের ওপর পূর্ণ দিয়ত (রক্তপণ) বর্তাবে। অঙ্গহানি হলে অঙ্গের পূর্ণ জরিমানা দিতে হবে। ডাক্তার যদি নিজ হাতে অস্ত্রোপচার করেন, ইঞ্জেকশন বা স্যালাইন পুশ করেন কিংবা ওষুধ নিজ হাতে খাইয়ে দেন, সে ক্ষেত্রেই শুধু ওপরের বিধান প্রযোজ্য। চিকিৎসক যদি শুধু ওষুধ লিখে দেন বা প্রেসক্রিপশন দেন এবং এর বেশি কিছু না করেন আর ওষুধ সেবন করে রোগীর ক্ষতি হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত বিধান প্রযোজ্য নয়। বিচারক সে ক্ষেত্রে চিকিৎসককে কোনো যৌক্তিক শাস্তি দিতে পারেন। (ফতওয়ায়ে শামি, ৯/২১৪; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, ৫/৫৬)

 

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রকৃতপক্ষেই যদি তিনি ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে প্রমাণিত হোন, তাহলে বাকি টাকা পরিশোধ করা আপনার উপর আবশ্যক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...