بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হাদিস শরিফে
এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ
বলেছেন,
مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللَّهَ فَلْيُطِعْهُ
، وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَهُ فَلَا يَعْصِهِ
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার আনুগত্য করার মান্নত করে সে
যেন (তা পূরণ করে) তাঁর আনুগত্য করে । আর যে অবাধ্যতার কোনো বিষয়ে মান্নত করে সে যেন
তাঁর অবাধ্যতা না করে। (সহীহ বুখারী ৬৬৯৬)
শরীয়তের বিধান হলো গায়রুল্লাহ (চাই সে পীর ওলি আওলিয়া
হোক,বা অন্য কেউ হোক) এর নামে
মানতকৃত পশু যদি ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে যবাই করা হয়, তবুও তা হারাম হয়। (আল বাহরুর রায়েক ৮/১৯২
রাদ্দুল মুহতার ৬/৩০৯ কিফায়াতুল মুফতী ১/২১৬)
মাজারে মান্নত করা হারাম। কেননা, মান্নত পূরণ করা একটি ইবাদত। তাই মান্নত
করতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে। মান্নত পূরণ করতে হবে তারই সন্তুষ্টি
অর্জনের নিয়তে। সুতরাং কোনো মাযার বা পীরের নামে মান্নত করলে তা শিরক হবে। কেউ এমন
মান্নত করলেও তা পালন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
উপরন্তু উক্ত মান্নতের কারণে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি। ( আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯)
আর যদি আল্লাহর নামে মান্নত করা হয়, আর সওয়াব কোন বুযুর্গ বা কোন ব্যক্তিকে
পৌঁছানোর উদ্দেশ্য হয়, সেই সাথে
আল্লাহর নামে জবাই করা হয়, তাহলে উক্ত
মান্নত সহীহ আছে। মাজার বা ওরশে আগত গরীবদের খাওয়া তা জায়েজ আছে। ধনীদের জন্য তা খাওয়া
জায়েজ নয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা তওবার ৬০ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ
الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی
الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ
فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾
নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত
কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের
অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে।
এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আল্লাহর
নামেই মান্নত করা হয়,আল্লাহর
নামেই জবাই করা হয়,আর আপনি
যদি গরীব হোন,তাহলে উক্ত
খাবার খাওয়া জায়েয আছে।
ধনী গরিবের সংজ্ঞা জানুনঃ
https://ifatwa.info/7744/
আর যদি আল্লাহর নামে মান্নত না করা হয়,তাহলে আল্লাহর নামে জবাই করা হলেও সেই পশু খাওয়া জায়েয নেই। যদি আল্লাহর নামেই মান্নত
করা হয়,আল্লাহর নামেই জবাই করা হয়,আর আপনি যদি ধনী হোন,তাহলে আপনার জন্য উক্ত খাবার খাওয়া জায়েয
নেই।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিদ'আতিদের অনুষ্টানে তৈরীকৃত খাবার যদি পশুর গোস্ত দ্বারা
হয় এবং উক্ত পশুকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ব্যতীত অন্য কারো নৈকট্য অর্জনের বা সম্মান
প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে জবাই করা হয়,তাহলে বিসমিল্লাহ বলে জবাই করার পরও উক্ত খাবার জায়েয
হবে না। কেননা এখানে আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কারো সম্মানে জবাই করা হয়েছে, যা স্পষ্টত হারাম ও নাজায়েয।যেমনটা মুফতী
শফী রাহ মা'রিফুল কুরআন
গ্রন্থে নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যখ্যায় উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ
وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللّهِ فَمَنِ
اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ
رَّحِيمٌ
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ
ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী
ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য
কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।(সূরা বাকারা-১৭৩)
তবে যদি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিমিত্তেই জবাই করা হয়ে
থাকে,কিংবা খাবার/শিরণি গোস্ত ব্যতীত
ভিন্ন কিছু হয়,তাহলে বিদ'আতিদের তৈরী এমন খাবার ভক্ষণ/গ্রহণ করা
যদিও হালাল।তবে এসব খাবার ভক্ষণ/গোহণ করা বা তাদের অনুষ্টানে অংশগ্রহণ করা কখনো উচিৎ
হবে না। যাতেকরে বিদ'আতিদের
বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটা কথায় কাজে মিল থাকে।
হ্যা যদি বাসায় দিয়ে দেয়,তাহলে সেটা গ্রহণ করে নিতে পারেন,তবে সাথে সাথে তাদেরকে বিদ'আত সম্পর্কে কিছু নসিহতও করে দিবেন। যাতেকরে
তারা সহ আশপশের লোকজন বুঝে নিতে সক্ষম হয় যে,তাদের করে যাওয়া কাজটি নিঃসন্দেহে বিদ'আতের অন্তর্ভুক্ত। আপনি যদি স্বাভাবিকভাবে
ছুটিতে বাড়ীতে যান তাহলে এতে কোন সমস্যা নেই। তবে উক্ত উরশে অংশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে
গেলে তা জায়েয হবে না।