ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ
ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে
(১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর
প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض
عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم
يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل
بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ
একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু
সময় পর চলে যাবে; যেমনটি
তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে
কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا
قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে
আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের
বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )
ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من
التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
প্রস্রাব ব্যতীত
যৌনাঙ্গ থেকে যা কিছু বাহির হয় তা তিন প্রকারঃ-
(১) মনি (বীর্য)
وَمَنِيُّ
الرَّجُلِ خَاثِرٌ أَبْيَضُ رَائِحَتُهُ كَرَائِحَةِ الطَّلْعِ فِيهِ لُزُوجَةٌ
يَنْكَسِرُ الذَّكَرُ عِنْدَ خُرُوجِهِ، وَمَنِيُّ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَر
পুরুষের মনি বা
বীর্য হলঃ-যা সাদা গাঢ় একপ্রকার গন্ধমাখা পিচ্ছিল পানি যা উত্তেজনার সাথে আটকিয়ে
আটকিয়ে বের হয়,এবং বের হওয়ার সাথে সাথে পুঃলিঙ্গ নেতিয়ে
পড়ে,আর মহিলার বীর্য হল,পাতলা প্রায় হলুদ বর্ণের ।
(২) মযি
وَالْمَذْيُ
رَقِيقٌ يَضْرِبُ إلَى الْبَيَاضِ يَبْدُو خُرُوجُهُ عِنْدَ الْمُلَاعَبَةِ مَعَ
أَهْلِهِ بِالشَّهْوَةِ
মযিঃ- যা স্ত্রীকে
কামুত্তেজনায় স্পর্শের পূর্বে বাহির হয়,এবং যা দেখতে
প্রায় সাদা রঙ এর।এবং মহিলার ও বের হয় তবে তাকে "কাযয়ুন"বলা হয়।
(৩) ওদী
وَالْوَدْيُ بَوْلٌ غَلِيظٌ وَقِيلَ
مَاءٌ يَخْرُجُ بَعْدَ الِاغْتِسَالِ مِنْ الْجِمَاعِ وَبَعْدَ الْبَوْلِ. كَذَا
فِي التَّبْيِينِ.
ওদীঃ- গাঢ়
প্রস্রাব,কেউ কেউ বলেনঃ ঐ পানি যা সহবাসের পরে গোপনাঙ্গ
ধৌত করা পর বাহির হয় এবং যা প্রস্রাবের পর বাহির হয়।
উপরোক্ত
তিনপ্রকারেরর মধ্যে শুধুমাত্র মনি বের হলে গোসল ফরজ হবে।
অন্যান্যগুলো বের হলে গোসল ফরজ হবেনা। বরং গোপনাঙ্গ ধৌত করে ওজু করে নিলেই
পবিত্রতা অর্জিত হবে। এক্ষেত্রে গোসলের কোনো প্রয়োজন পড়বেনা।
যেমনঃ- ফাতওয়ায়ে
হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে.............
الْمَذْيُ يَنْقُضُ الْوُضُوءَ
وَكَذَا الْوَدْيُ وَالْمَنِيُّ إذَا خَرَجَ مِنْ غَيْرِ شَهْوَةٍ
মযি অজুকে ভেঙ্গে
দেয় ঠিক তেমনিভাবে ওদী এবং ঐ মনি যা কামুত্তেজনা বতীত বাহির হয় তাও ওজুকে ভেঙ্গে
দেয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া -১/১০)
শরীয়তের বিধান হলো উত্তেজনা ব্যতীত বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় না। কেননা, গোসল ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত হল, বীর্য বের হওয়ার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ
তোমরা জুনুবি হও তবে (গোসল করে) সারা দেহ পবিত্র করে নাও। (সূরা মায়েদাহ ৬)
আর জুনুবি বলা হয়, ওই
ব্যক্তিকে যার বীর্য সবেগে ও উত্তেজনার সঙ্গে বের হয়েছে।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
যেহেতু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্বপ্নদোষ হওয়ার কোন নিদর্শন নেই। স্বপ্নেও
কিছু দেখেননি, কাপড় ও রানে বির্যের চিহ্নও নাই, আবার বির্যের গন্ধও নাই। তাই আপনার গোসল ফরজ হবে না। তবে লজ্জাস্থানের আগার
আঠালোটা ধুয়ে ফেলবেন যা, মযি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর মযি বের হলে
গোসল ফরজ হয় না। তবে সতর্কতা মূলক দুই রানের চিপা ধুয়ে ফেলবেন এবং লুঙ্গীও
পরিবর্তন করে নিবেন।