আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
290 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. কি কি কারণে স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া যায়?

২. স্বামী মাসনা করেছে এবং ১২ বছর পর ২য় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। তালাক দিবার পর স্বামী বলছে প্রথম স্ত্রীর সাথে তিনি না কি বাকি জীবন কাটাতে পারবেন না।২য় স্ত্রীই উনার বেশি পছন্দ ছিল। আর প্রথম স্ত্রীর কাছে উনি না কি শারীরিক তৃপ্তি পাননা। ২য় স্ত্রীর কাছে তৃপ্তি পেতেন। এখন প্রথম স্ত্রীর করণীয় কি? তিনি সব শুনার পর অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তিনি স্বামীর সাথে সংসার করতে চান না।তিনি কি স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারবেন?
৩. কোন কারণে স্বামী যদি ২য় স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনেন তবে প্রথম স্ত্রী কি স্বামীর কাছ থেকে স্বেচ্ছায় আলাদা থাকতে পারবেন অর্থাৎ স্বামীর সাথে সর্ব প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে থাকতে পারবেন?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
যথাযথ কারণ ছাড়া স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে, 

عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِىْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে রমণী বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না।
সহীহ : আবূ দাঊদ ২২২৬, তিরমিযী ১১৮৭, ইবনু মাজাহ ২৫০০, দারিমী ১৩১৬, আহমাদ ২২৪৪০, ইরওয়া ২০৩৫, সহীহ আল জামি‘ ২৭০৬, সহীহ আত্ তারগীব ২০১৮।

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
তালাক স্বামীর অধিকার, স্ত্রীর নয়। স্ত্রীর সঙ্গত কারণ থাকলে খুলা‘র মাধ্যমে সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। কোনো মহিলা একান্ত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে তালাক প্রার্থনা করবে না। কোনো কোনো বর্ণনায় এ কথাও এসেছে, কোনো মহিলা নিজের জন্য অথবা অন্যের জন্য তালাক প্রার্থনা করবে না।

যে নারী বিনা কারণে তার স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করবে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণ হারাম অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এটা ভীতি ও ধমকিমূলক বাক্য। মুহসিন বা নেককারগণ যেমন প্রথম ধাপেই জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবেন তারা সেই সুঘ্রাণ পাবে না। ‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এটাও হতে পারে যে, যদি সে জান্নাতে প্রবেশ করে তবে সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
,
স্বামীর কাছে তালাক চাওয়ার কিছু অন্যতম কারণ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামগন বলেছেন,

★স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে।

★ শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ার কারণে স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়।
এক্ষেত্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার পরেও কোনোভাবেই সমাধান না হয়।

★স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হয় তথা পরকীয়া, পাপাচারিতা কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হয়।

★বৈধ যে কোনো কারণে স্বামীর প্রতি মনে প্রচণ্ড ঘৃণা সৃষ্টি হলে।

★স্বামী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বা কোথাও বন্দি থাকার ফলে স্ত্রী যদি নিরাপত্তাহীনতা কিংবা ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা করে।

★স্বামী দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে স্ত্রী যদি নিজের চারিত্রিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

★ইসলামি শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী যদি স্ত্রীকে  শারীরিক আঘাত, অত্যাচার, অপমান কিংবা অভিশাপ ও গালাগালি দেয়,আর এগুলো যদি সচরাচর করেই থাকে।

★স্বামীর কোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকলে।

★স্ত্রীকে যদি নির্বাসিত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হতে বাধ্য করে। অথ্যাৎ স্ত্রীর বাবা-মা, ভাই-বোনসহ মাহরামদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে বাধা দেয়।

★ নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে কটুক্তি করার পাশাপাশি স্ত্রীকে ইসলামের বিধান পালনে বাধা দেয় কিংবা স্ত্রীকে কটুক্তি করে।
,

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী তার স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারবেন।
এতে গুনাহ হবেনা।
,
(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্য মোতাবেক বুঝা যায় যে সেই ব্যাক্তি ২য় বিবাহ করে শরীয়তের শর্ত মেনে উভয় স্ত্রীর মাঝে সমতা বজায় রাখেনা।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ১ম স্ত্রী তালাক চাইতে পারবেন।
তবে স্বেচ্ছায় প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি মোতাবেক  আলাদা থাকতে পারবেনা।
,
হ্যাঁ যেহেতু তার অধিকার তাকে দেওয়া হচ্ছেনা, তাই তিনি মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবে।
,
তাতেও কাজ না হলে তালাক চাইতে পারে,তালাক না দিলে খোলা করতে পারবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...