যথাযথ কারণ ছাড়া স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِىْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে রমণী বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না।
সহীহ : আবূ দাঊদ ২২২৬, তিরমিযী ১১৮৭, ইবনু মাজাহ ২৫০০, দারিমী ১৩১৬, আহমাদ ২২৪৪০, ইরওয়া ২০৩৫, সহীহ আল জামি‘ ২৭০৬, সহীহ আত্ তারগীব ২০১৮।
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
তালাক স্বামীর অধিকার, স্ত্রীর নয়। স্ত্রীর সঙ্গত কারণ থাকলে খুলা‘র মাধ্যমে সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। কোনো মহিলা একান্ত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে তালাক প্রার্থনা করবে না। কোনো কোনো বর্ণনায় এ কথাও এসেছে, কোনো মহিলা নিজের জন্য অথবা অন্যের জন্য তালাক প্রার্থনা করবে না।
যে নারী বিনা কারণে তার স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করবে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণ হারাম অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এটা ভীতি ও ধমকিমূলক বাক্য। মুহসিন বা নেককারগণ যেমন প্রথম ধাপেই জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবেন তারা সেই সুঘ্রাণ পাবে না। ‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এটাও হতে পারে যে, যদি সে জান্নাতে প্রবেশ করে তবে সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
,
স্বামীর কাছে তালাক চাওয়ার কিছু অন্যতম কারণ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামগন বলেছেন,
★স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে।
★ শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ার কারণে স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়।
এক্ষেত্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার পরেও কোনোভাবেই সমাধান না হয়।
★স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হয় তথা পরকীয়া, পাপাচারিতা কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হয়।
★বৈধ যে কোনো কারণে স্বামীর প্রতি মনে প্রচণ্ড ঘৃণা সৃষ্টি হলে।
★স্বামী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বা কোথাও বন্দি থাকার ফলে স্ত্রী যদি নিরাপত্তাহীনতা কিংবা ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা করে।
★স্বামী দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে স্ত্রী যদি নিজের চারিত্রিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
★ইসলামি শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী যদি স্ত্রীকে শারীরিক আঘাত, অত্যাচার, অপমান কিংবা অভিশাপ ও গালাগালি দেয়,আর এগুলো যদি সচরাচর করেই থাকে।
★স্বামীর কোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকলে।
★স্ত্রীকে যদি নির্বাসিত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হতে বাধ্য করে। অথ্যাৎ স্ত্রীর বাবা-মা, ভাই-বোনসহ মাহরামদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে বাধা দেয়।
★ নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে কটুক্তি করার পাশাপাশি স্ত্রীকে ইসলামের বিধান পালনে বাধা দেয় কিংবা স্ত্রীকে কটুক্তি করে।
প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্য মোতাবেক বুঝা যায় যে সেই ব্যাক্তি ২য় বিবাহ করে শরীয়তের শর্ত মেনে উভয় স্ত্রীর মাঝে সমতা বজায় রাখেনা।
হ্যাঁ যেহেতু তার অধিকার তাকে দেওয়া হচ্ছেনা, তাই তিনি মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবে।