بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
টিভি দৃশ্য
দেখার একটি মাধ্যম মাত্র। যা ধারণকৃত বা সরাসরি কোন দৃশ্য বা চিত্রকে উপস্থাপন করে
থাকে। সুতরাং টিভি স্ক্রীণে ঐ বস্তু দেখা নাজায়েজ হবে, যা স্ক্রীণ ছাড়া দেখা নাজায়েজ। স্ক্রীণে ঐ বস্তু দেখা জায়েজ হবে,
যা স্ক্রীণ ছাড়া দেখা জায়েজ। যদিও টিভি স্ক্রীণে দৃশ্যমান ছবি হারাম
ছবির অন্তর্ভূক্ত কি না? এ নিয়ে মতভেদ আছে। শাইখুল ইসলাম মুফতী
তাক্বী উসমানী দামাত বারাকাতুহসহ অনেক বিজ্ঞ উলামাগণের মতে তা নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভূক্ত
নয়।
সহজতার উপর
ভিত্তি করে আমরা এ মতটিকে প্রাধান্য দেই। যদিও তা নিষিদ্ধ ছবি মনে করাই তাক্বওয়া পরহেযগারীর
দাবী। যাইহোক, এখন টিভি দেখা বিষয়ে আমাদের মতামত
হল, টিভিতে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে নাজায়েজ বস্তু দেখা বৈধ নয়। তবে
জায়েজ বস্তু দেখা জায়েজ আছে।
কিন্তু বর্তমানের
টিভিগুলোতে, বিজ্ঞাপনের নামে অশ্লীলতা,
নাটক সিনেমার নামে নোংরামী, বেগানা নারীদের উদ্দাম
নৃত্য, গান বাজনা, হারাম প্রেম,
বেপর্দা নারীদের সংবাদ উপস্থাপনসহ শরীয়তে হারাম নানাভিদ বিষয় থাকায় টিভি
দেখা বৈধ নয়। এ থেকে পরহেয করা প্রতিটি মুমিনের উপর আবশ্যক।
তবে যদি এমন
কোন চ্যানেল থাকে, যাতে উপরোক্ত নিষিদ্ধ
কোন কিছুই না থাকে, শুধুই ইসলামী বিষয় প্রচার করে, দ্বীনী দাওয়াত, প্রয়োজনীয় বিষয়াদী প্রদর্শন করে থাকে,
তাহলে উক্ত চ্যানেল দেখাকে হারাম বলাও যাবে না।
টিভি দেখার
বৈধতা ব্যবহারকারী দর্শকের মানসিকতা ও চ্যানেলের অবস্থার উপর নির্ভরশীল। হারাম বিষয়
থাকলে হারাম। জায়েজ বিষয় থাকলে জায়েজ।
قُلْ
لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ
أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠
وَقُلْ
لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا
يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ
عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ
آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ
بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي
أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ
التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ
الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ
بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى
اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١
মুমিনদেরকে
বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর
হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত
আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে
বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের
যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া
তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে
এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর,
পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা,
ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ,
ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ,
তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ,
তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান,
হাদীস নং-৫৫৯৮}
فَالْعَيْنَانِ
زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ
زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا،
وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ
করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের
জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে
শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন।
হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা
হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান
তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে
জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭,
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
প্রশ্নকারী
প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি টিভিতে
হারাম ও অশ্লীল কোন দৃশ্য দেখানো হয় তাহলে তা দেখা ও অন্য কাউকে দেখানো উভটিই মারাত্নক
গুনাহ ও না জায়েয। যা পরিহার করা আবশ্যক । দোকানে টিভি চালানোর কারণে দোকানের/ মালিক
গুনাহগার হবে। তবে তার দোকানের চা ও অন্যান্য হালালা প্রোডাক্টগুলি বিক্রি করা হারাম হবে না। বরং তা জায়েয আছে।