আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
334 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ।  আমার মায়ের আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন।  উনি সারাজীবন অনেক কষ্ট করেছেন, অনেকের কাছে অপমানিত হয়েছেন। উনি এসব কিছুর জবাব আমার রেজাল্টের মাধ্যমে দিতে চান। তাই উনার স্বপ্ন আমি বড় কোনো ভার্সিটিতে পড়বো। এজন্য উনি আমার পড়াশোনার পিছনে টাকা খরচ করতে কোনো কার্পণ্য করেন না। নিজের কষ্ট হলেও আমি যা চাই তখনই তা দেন। কিন্তু সম্প্রতি জেনেছি যে সহশিক্ষা হারাম । তাই আমি এখন ভার্সিটিতে পড়তে চাচ্ছি না। এই কথাটা আমি এখনো বাসায় বলি নাই কিন্তু আমার আচরণে এটা আমার মা বুঝতে পারছেন। এবং এটাতে উনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। উনি বারবার আমাকে বলছেন যে আমি কোনো ভার্সিটিতে চান্স না পেলে উনার সব স্বপ্ন ভেঙে যাবে, উনি হেরে যাবেন। এমতাবস্থায় আমি   কি করতে পারি? আমি উনাকে কষ্ট ও দিতে পারছি না আবার সহশিক্ষায় পড়ার সিদ্ধান্তও নিতে পারছি না।
১...এই রকম পরিস্থিতিতে আমি যদি এখন পরিপূর্ণ পর্দা করে সহশিক্ষায় পড়ি তাহলে কি সেটা জায়েজ হবে?

২... মেয়েদের সহশিক্ষায় পড়ার শর্ত হচ্ছে দ্বীনের খেদমত করা যাবে এমন বিষয়ে পড়তে হবে যেমন মেডিকেল।  কিন্তু আমার মনে হচ্ছে মেডিকেলের পড়াশোনার ভীষণ চাপে আমি হয়তো তেমনভাবে ইলম অর্জন বা ইবাদত করতে পারবো না। তাই আমি যদি এমন কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করি যেটা দিয়ে আসলে দ্বীনের স্পেসিফিক কোনো খেদমত আমি কর‍তে পারবো না (যেমন - গণিত, জীববিজ্ঞান বা ইংরেজি) তাহলে  কি সেটা জায়েজ হবে? অবশ্যই পরিপূর্ণ পর্দা করেই পড়াশোনা করবো।    
৩...মেডিকেলে পড়লে সেখানে হয়তো বাধ্য হয়ে আমাকে পুরুষের সতর দেখতে হবে বা পুরুষ রোগীর চিকিৎসা কর‍তে হবে। এটা কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/28215/?show=28215#q28215 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।


মুসলিম দেশের মুসলিম সরকারের জন্য ওয়াজিব যে,অচিরেই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা। প্রয়োজনে এ জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করা সমস্ত মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)


রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি। (বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)


ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)


একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. স্কুল,  কলেজ ও মাদ্রাসা সহ যেকোন প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষার হুকুম সমান। যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

 

ক. শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

খ. চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

 

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/434


২. হ্যাঁ, গণিত, জীববিজ্ঞান বা ইংরেজি নিয়েও পড়া যাবে। এর দ্বারাও দ্বীনের অনেক বড় বড় খেদমত করা যায়।

৩. কোন পুরুষ অসুস্থ হলে তাকে কোন পুরুষ ডাক্তার দেখবে। তেমনী ভাবে কোন মহিলা অসুস্থ হলে তাকে কোন মহিলা ডাক্তার দেখবে। এটাই ইসলামের বিধান। তবে যদি কোথাও পুরুষ রোগীকে দেখার জন্য কোন অভিজ্ঞ পুরুষ ডাক্তার না থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে তাকে কোন অভিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার দেখার অনুমতি আছে। তেমনী এর বিপরীতটাও।

উল্লেখ্য যে, কখনো যদি সহশিক্ষার কারণে আপনার দ্বীনের ক্ষতি হয় বা পর্দার লঙ্ঘন হয় অথবা প্রেম ইত্যাদি ফিতনায় পড়ার আশংকা থাকে বা বেচে থাকা সম্ভব না হয় তখন আর সহশিক্ষা করা আপনার জন্য জায়েজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...