আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
274 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

শায়েখ, আমি এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। সামনে কলেজে ভর্তি হতে হবে পরিবারের জন্য। আমার নিজের কোনো ইচ্ছে নেই এমন ফিতনাময় পরিবেশে দুনিয়াবি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার  কিন্তু বুঝতেই পারছেন, পরিবারে আম্মু আব্বুর মুখের উপর এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। আমি পরিবারের একমাত্র মেয়ে।
এখন সামনে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য দুইটা রাস্তা খোলা আছে।

১. একটা মহিলা কলেজ আছে শহরে, যেটাতে আম্মু আব্বু পড়তে দিতে চান না কোনো এক কারণে। কিন্তু ওটাতে পড়লে হয়তো হোস্টেলে থাকতে হবে, নয়তো গাড়ি করে যেতে হবে। ওটা আমাদের বাসা থেকে অনেক দূরে। ওখানের কাছাকাছি বাসা পাওয়ার এবং নেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তাই গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে। আমার গাড়িতে যাতায়াত করার অভ্যাস নেই একা। কিন্তু তাও আমি করতাম, যদি ফিতনার আশঙ্কা না থাকতো। কিন্তু শায়েখ, আপনি তো জানেনই শহরের রাস্তায় কি পরিমাণ ফিতনা। লোকাল বাস, টেম্পু এধরণের পাবলিক গাড়িগুলোতে গায়রে মাহরাম এর সাথে যাতায়াত করতে হয়। এটা আমার জন্য খুব জঘন্য একটা ব্যাপার। আর যে গাড়িতেই যাই না কেন, রাস্তায় তো গায়রে মাহরাম এর ভিড় থাকবেই। আর গাড়িতে যাতায়াত করতে করতে সালাতের সময় যদি কাযা হয়ে যায়! বিভিন্ন কোচিং এ যেতে বলবে হয়তো তারা। এতেও সালাত কাযা হওয়ার আশঙ্কা।
আমার সালাত ও পর্দাকে রিস্কে ফেলার একদমই ইচ্ছে নেই। আজ পরিবারের জন্য এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। কেউ এই দিকগুলো নিয়ে ভাববে না।

২. দ্বিতীয়ত, আমি থাকি গ্রাম টাইপের একটা মফস্বলে। আমার বাসার কাছে একটা কলেজ আছে। হেঁটে যেতে হয়। আর যেহেতু গ্রাম টাইপের এলাকা, তাই রাস্তায় গায়রে মাহরাম এর ভিড় নেই। অর্থাৎ রাস্তা একদম নিরিবিলি, সেইফ বলা যায়। আর এই কলেজে নামাজ, পর্দার ব্যবস্থাও আছে। শুধু সমস্যা হচ্ছে সহশিক্ষা। এটা মহিলা কলেজ না। সহশিক্ষা ছাড়া বাকি সবদিক দিয়ে ঠিক আছে। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা নেই। আর বাসা কাছে হওয়ায়, নামাজেও ইন শা আল্লাহ সমস্যা হওয়ার কথা না।

★এখন এই দুই কলেজ থেকে আমি কোনটা ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করবো শায়েখ? আমাকে একটু পরামর্শ দিন। দুইটাতেই টিকে যাবো, কথা নেই। তবে এর মধ্যে একটাতে না টিকলে অন্যটাতে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করবো। এই দুইটার বাইরে যেতে চাই না। তবে আপনি যেটাতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিবেন, সেটার নাম আগে রাখবো ইন শা আল্লাহ।

টিকা না টিকা পরের ব্যাপার। তবে মহিলা কলেজ থাকা স্বত্বেও আমি যদি সালাত, পর্দার সেফটি ইত্যাদির জন্য এই সহশিক্ষার কলেজটাতে ভর্তি হই, আমার কি গুনাহ হবে?

★সহশিক্ষা হলেও ক্লাসরুমগুলো মোটামুটি বড় আছে। ছেলেমেয়ে ফাঁক ফাঁক। তাই চেষ্টা করবো ইন শা আল্লাহ ক্লাসের একদম কোণায় পেছনে করে বসতে, যেন সবসময় গায়রে মাহরাম থেকে দূরে থাকতে পারি। আর তাদের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা।

শায়েখ, আমাকে পরামর্শ দিন, আমি কোন কলেজটাতে ভর্তি হবো এই দুইটার মধ্যে? আমি কি করবো বুঝতে পারছি না, পরিবারের জন্যই এসবের পিছনে দৌড়াতে হচ্ছে। অথচ এই অবস্থায় আমার এসব পড়াাশোনা ছেড়ে দেয়া উচিত আমি বুুঝতে পারছি। এই ফিতনার জামানায় নিজের ঈমান নিয়ে খুুব শঙ্কিত আমি। আমার জন্য একটু দুআ করবেন শায়েখ।   
জাযাকুমুল্লাহ খইর।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

 
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হলো দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মহিলা কলেজে যদি এমন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় যে প্রত্যেহ ক্লাশ করতে হবেনা।
সপ্তাহে কয়েকদিন ক্লাশ করলেও হবে।
বিষয়টি মানিয়ে নেওয়া যাবে।
তাহলে সেই মহিলা কলেজেই ভর্তি হওয়া উত্তম হবে।
আর যদি বিষয়টি তারা মেনে না নেয়,তাহলে মহিলা কলেজের হোষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করবেন।
কোচিং-এ ভর্তি হওয়ার সমস্যাটি বাসার কাছের কলেজে ভর্তি হলেও হবে।   

আর যদি আপনি হোস্টেলে না থাকেন,আর সেই কলেজ যদি বাধ্যতামূলক প্রত্যাহ ক্লাশের নিয়ম করে,সেক্ষেত্রে প্রত্যাক গায়রে মাহরাম যাতীদের সাথে যানবাহনে চলা ফেরা,নামাজ কাজা ইত্যাদি ওযরের কারনে সেক্ষেত্রে আপনি নিজ এলাকার কলেজে ভর্তি হওয়া ভালো হবে।

যদি আপনি আপনাদের বাসার কাছের কলেজে ভর্তি হোন,তাহলে নিম্নের লিংকের প্রদত্ত ফতোয়ায় উল্লেখিত শর্তগুলো মেনে ক্লাশ করবেন।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
শায়েখ, আমার পরিবার আমাকে হোস্টেলে দিবে না। আর আমি নিজেও হোস্টেলে থাকার জন্য অপ্রস্তুত। অনেকধরনের সমস্যা হয়ে যাবে আমার জন্য। বাসায় থাকলে যতটুকু দ্বীন পালন করতে পারি, ওখানে গেলে সব উলোটপালোট হয়ে যাবে। বাসায় থাকাটা আমার জন্য সেইফ বেশি।

আর কলেজে আমি প্রতিদিন যেতে না চাইলেও, পরিবার থেকে অবশ্যই বাধ্য করা হবে প্রতিদিন যেতে।

এতকিছুর জন্য চাইলেও মহিলা কলেজে পড়তে পারছি না, আস্তাগফিরুল্লাহ। এদিকে মহিলা কলেজের নামটা দিয়ে আবেদন করার জন্যও পরিবারের কাছে অনেক অনেক অনুরোধ করতে হবে। নামটা আগে বসাবে কিনা সেটাও জানি না। 

আমার জন্য একটু দুআ করবেন শায়েখ।                              
জাযাকুমুল্লাহ খইর।  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...