আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
219 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
কোন কাজ যখন আল্লাহর উদ্দেশ্য করি তখন নিয়ত আল্লাহর জন্যই থাকে আর আল্লাহ'র উদ্দেশ্যেই করা।কিন্তু অনেক সময় আমার ভালো কাজ করতে অন্য কেউ দেখলে তখন তার প্রশংসা করে এর ফলে মনের ভিতর একটা খুশি কাজ করে আর অনিচ্ছাকৃতভাবে ভাবনা আসে শুধু যে আমার ভালো কাজগুলো দেখুক। আমি ইচ্ছকৃতকাবে আনতে চাই না কিন্তু শয়তান মনে কুমন্ত্রণা দেয়।তখন এইটা কি রিয়া হয়ে যাবে?

আমি এর থেকে বাচতে চাই কিন্তু মনের ভাবনা দূর করতে পারি না। ভালো কাজে এই ভাবনা হুট করে আসে কিন্তু আমি চাই না তা আসুক অনিচ্ছাকৃত আসে.।তা কি রিয়া হবে?

২)আমি একটি অনলাইন এ কাজ পেয়েছি।এখন কাজ এ add ,  হতে ৪০ টাকা নিবে।এর মধ্যে ৩০ টাকা এডমিনকে আর যার মাধ্যমে পেয়েছি তাকে ১০টাকা দেওয়া লাগবে। এখানে এর মাধ্যমে যে কাজ খুজে আমকে দিলো সে তার খুজার জন্য এই টাকা টা নিলো। এইটা দেওয়া কি ঘুষ এর শামিল হবে? বা এই ১০ টাকা কি ঘুষ হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)

মানব সৃষ্টির প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর ইবাদত করা। ইবাদতের মাধ্যমে পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করা। তাই ইবাদতই মানবজীবনে সাফল্য ও ব্যর্থতা পরিমাপক। কিন্তু মহামূল্যবান এই ইবাদত অনেক সময় অর্থহীন হয়ে যায় বান্দার সামান্য ভুলের জন্য। পরকালের নেক আমলের যথাযথ মূল্য লাভের প্রধান শর্ত হলো ইবাদত, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ হওয়া, তাতে জাগতিক কোনো উদ্দেশ্য ও স্বার্থ জড়িয়ে না ফেলা, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ ত্রুটিমুক্ত হওয়া। আল্লাহ বলেন,

وما أمروا إلا ليعبدوا الله مخلصين له الدين

 ‘তাদের কেবল একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর ইবাদতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ (সুরা : বাইয়িনাহ, আয়াত : ৫)

ইবাদতের বাহ্যিক ত্রুটি হলো, তা রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুযায়ী না হওয়া, ইবাদতের পূর্বশর্ত পূরণ না করা। আর ইবাদতের অভ্যন্তরীণ ত্রুটি হলো নিয়তের অসততা। তা হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইবাদত করা। যেমন—মানুষের প্রশংসা, সামাজিক প্রভাব-প্রতিপত্তি, কারো দৃষ্টি আকর্ষণ ইত্যাদির মোহে ইবাদত করা। ইসলামী পরিভাষায় একে রিয়া এবং বাংলা ভাষায় ‘লোক-দেখানো’ বা ‘প্রদর্শনপ্রিয়তা’ বলা হয়।

প্রদর্শনপ্রিয়তা নিয়তের অসততা, যা ইবাদতকে মূল্যহীন করে দেয়। নিয়ত ঠিক না হলে আল্লাহর কাছে বান্দার কোনো কাজই গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়ত শুদ্ধ হলে আল্লাহ জাগতিক কাজকে ইবাদতের মর্যাদা দেন। আবার নিয়ত শুদ্ধ না হলেও ইবাদতসমূহ প্রত্যাখ্যান করেন। 

★তাই ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তষ্টির জন্যই হওয়া চাই।
রাছূল সাঃ বলেছেন-

مَنْ صَلَّى يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ، وَمَنْ صَامَ يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ، وَمَنْ تَصَدَّقَ يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ

অর্থ:- যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায পড়ল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে রোযা পালন করল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে দান-সাদাক্বাহ করল সে শির্ক করল।(মুসনাদে আহমাদ)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
https://ifatwa.info/19980/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে সমান সমান ভিন্ন কোনো নিয়ত থাকলে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত ভিন্ন কোনো নিয়ত থাকলে তখন উক্ত ইবাদতকে রিয়া বলা হয়।
তবে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মূল উদ্দেশ্য থাকে,এবং লোকজন ভাল বলবে,সেই আমলের দুনিয়াবী ফায়দা বিবেচনা করা হয়,তাহলে এমন নিয়ত আল্লাহর সাথে শরীক করা হয় না এবং লোক দেখানোও হয় না। তাই এই ছুরতটি রিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত মনে আসা ভাবনাটি পরিহার করার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।   

নিম্নের ফতোয়ায় উল্লেখিত আমল গুলি করবেনঃ 

(০২)
এটি কমিশন।
যদি অনলাইন কাজটি শরীয়াহ নীতিমালা মোতাবেক  বৈধ হয়, আর এই কমিশন যদি নির্দিষ্ট হয়,তাহলে তাহা জায়েজ হবে।
,
তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি কাউকে সদস্য বানান, তথা কাজ খুজে দেন,সেক্ষেত্রে আপনি যে কিছু নির্দিষ্ট টাকা লাভ পাবেন,এখানে আপনাকে কাজ খুজে দেওয়া সেই আগের ব্যাক্তি কোনো লাভ পেলে সেটি গ্রহন তার জন্য জায়েজ হবেনা।
,
রেফারের টাকা জায়েজ,তবে রেফারের রেফার এর টাকা জায়েজ নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...