উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: قَال َرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:لَيَأْتِيَنَّ عَلَى أُمَّتِي مَا أَتَى عَلَى بني إسرائيل حَذْوَ النَّعْلِ بِالنَّعْلِ، حَتَّى إِنْ كَانَ مِنْهُمْ مَنْ أَتَى أُمَّهُ عَلاَنِيَةً لَكَانَ فِي أُمَّتِي مَنْ يَصْنَعُ ذَلِكَ، وَإِنَّ بني إسرائيل تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً، قَالُوا:وَمَنْ هِيَ يَارَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- বনি ইসরাঈলের উপর যে সব আযাব আর গযব এসেছিলো,হুবহু আমার উম্মতের মধ্যেও সে আযাব আসবে।এমনকি বনি ইসরাঈলের কেউ যদি তার মায়ের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকে তাহলে আমার উম্মতের কিছু লোকও সে কাজে লিপ্ত থাকবে।বনি ইসরাঈল বাহাত্তর ফিরক্বায় বিভক্ত ছিলো।আর আমার উম্মত তেহাত্তর ফিরক্বায় বিভক্ত হবে।সবাই জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে তবে একটি দল ব্যতীত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাস করলেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! সেটি কোন দল? রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, সেটি ঐ দল যারা আমার সুন্নত ও সাহাবায়ে কেরামদের বাছাইকৃত পথে নিজেদেরকে পরিচালিত করবে।(সুনানু তিরমিযি-২৬৪১)
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উল্লেখযোগ্য কিছু আক্বিদা-বিশ্বাস
(১)সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি।এবং তাদের স্ব স্ব অবস্থানে সঠিক। তাদের মধ্য থেকে কাউকে মন্দ বলা যাবে না।এবং কটাক্ষ করাও যাবে না।তাদের মধ্যকার পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ নিছক তাদের নিজস্ব ব্যাপার।উক্ত ঝগড়ায় শরীক হয়ে কারো পক্ষাবলম্বন করা যাবে না।বরং সর্বদা নিজেকে এই স্পর্শকাতর বিষয় থেকে আলগিয়ে রাখতে হবে।
(২) জান্নাতের স-ুসংবাদ দশজন সাহাবায়ে কেরাম সহ আরো কিছু সংখ্যক সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ এসেছে।এ কথার উপর ইয়াক্বিন ও বিশ্বাস রাখা।
(৩) মুজার উপর মাসেহ করা বৈধ।
(৪) নাবিযে তামার অর্থাৎ মাঠির পাত্রে খুজুর বা আঙ্গুর ভিজিয়ে কয়েকদিন রেখে দেওয়া। নেশার আসার আগ পর্যন্ত সেটাকে নাবিযে তামার বলা হয়।আর নেশা আসার পর সেটাকে মদ বলা হয়।নাবিযে তামার বৈধ,আর মদ হারাম।
(৫) আম্বিয়া ও আওলিয়ায়ে কেরাম এর স্থর। মানুষ যতবড়ই ওলী হোক না কেন,সে আম্বিয়ার স্থরে পৌছতে পারবে না।
(৬) শরীয়তের বিধি-বিধানের অনুসরণে সবাই বাধ্য। পৃথিবীর কোনো মানুষ এমন কোনো স্থরে কখনো পৌছতে পারবে না যে,যেখানে পৌছে গেলে তার উপর থেকে সকল প্রকার বিধিনিষেধ চলে যায়।
(৭) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া। আল্লাহ তা'আলা রহমান এবং রাহীম তথা অসীম দয়ালু।আল্লাহ রহমত থেকে একমাত্র কাফিরই নিরাশ হতে পারে।
(৮) আল্লাহর আযাব থেকে বে-খাওফ হওয়া। আল্লাহ যেকোনো সময় আযাব দিতে পারেন।সুতরাং আল্লাহর আযাব থেকে বে-খাওফ হওয়া যাবে না।
(৯) কাহিনের তাসদ্বীক্ব ভবিষৎবাণী প্রদাণকারীর খবরকে সত্যায়ন করা কুফুরি।তবে কেউ যদি সৌরবিজ্ঞানের আলোকে চিন্তা গবেষনার মাধ্যমে কোনো খবর দেয়,তাহলে সেটাকে বিশ্বাস করা অবশ্যই কুফরী হবে না।কুফরী সেটাই যা কোনো প্রকার চিন্তা গবেষনা ব্যতীত নিশ্চিতরূপে কোনো ভবিষ্যৎ বাণী প্রদাণ করা হয়ে থাকে।
(১০) ইলমে গায়েব ইন্দ্রীয়শক্তি দ্বারা যা অনুভব করা যায় না বা যাকে চিন্তা গবেষনার মাধ্যমে আয়ত্ব করাও যায় না।সে বিষয়ের জ্ঞান ইলমে গায়েবের অন্তর্ভুক্ত। এ জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহ-ই জানেন।আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।আল্লাহ তা'আলা কাউকে জানিয়ে দিলে তিনি অবশ্য সেগুলোকে জানতে পারেন। এই দশটি হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উল্লেখযোগ্য আক্বিদা-বিশ্বাস।(শরহে আক্বাঈদ লিন-নাসাফি)
,
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! উল্লেখিত আকীদা সমূহ যারা পুরোপুরি ভাবে মানে,তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বাহিরের কেউ নন।
,
আর যাহারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা মানেনা,তারাই ভ্রান্ত তথা বাতিল দল।
,
তাদের পুরো লিষ্ট জানানো সম্ভব নয়,তবে উল্লেখযোগ্য কিছু দলের নাম এখানে পেশ করছি।
★খাওয়ারেজ
★শীয়া
★জাবরীয়া
★কাদেরিয়া
★মু'তাযিলা
★মুরজিয়া
★জাহমিয়্যাহ
★কাররামিয়্যাহ
★বাহায়ী
★কাদীয়ানী
★দ্বীনে ইলাহী
★আগাখানী
★খাকছার পার্টি
★মুনকিরিনে হাদীস
★পারভেজী
★চকড়ালবী
আরো দলের নাম এবং তাদের বিস্তারিত আকীদা জানুনঃ
(ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ ২১৫-৩৯৯ পৃষ্ঠা)