আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
198 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
আচ্ছালামু আ'লাইকুম হুজুর,
একটা বিষয় সঠিক ভাবে জানার প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি হলো, কোনো ব্যক্তিকে দ্বীনের কোনো প্রশ্ন করা হলো, ঐ প্রশ্নের উত্তর জানা সত্বেও না বলে, আলেমদের সরণাপন্ন হওয়ার জন্য বলা হলো। এই বিষয়টি সম্পর্কে শরীয়ত এর মেজাজ কি? (যেমন কাউকে জিজ্ঞেস করলো গোসলের ফরয কয়টি সে উত্তর দিল ইমাম সাব এর কাছে জিজ্ঞেস করতে)

২. আর বিষয়টি যদি দ্বীনের মৌলিক ইলম না হয় কিন্তু ব্যাক্তি জানে। এখন প্রশ্ন কারী ব্যাক্তিকে কি উত্তর দেওয়া যাবে নাকি আলেমের সরণাপন্ন হতে বলা হবে?

৩. কোনো ভাই ভাবলো, কাউকে কিছু দান করার আগে জিজ্ঞেস করবে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে কিনা? যদি না করে দান করবে না, করলে ঐ ব্যাক্তিকে দান করবে। এই বিষয়ে শরীয়ত এর মেজাজ কি?

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
edited by


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ عَلِمَهُ ثُمَّ كَتَمَهُ أُلْجِمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ
কাউকে দ্বীনি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে যদি সে নিশ্চুপ থাকে, এবং লুকায় তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের আগুনের লাগাম লাগানো হবে।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
ইচ্ছাকৃত কোনো জ্ঞান-বিজ্ঞানকে লুকানো কখনো জায়েয হবে না। তবে যদি সঠিক বিষয় পরিপূর্ণ ভাবে কেউ না জানার কারণে যদি সে না বলে তাহলে তখন কোনো সমস্যা হবে না।

ইবনে মাসউদ রাযি বলেন,
وقال ابن مسعود : ( من كان عنده علم فليقل به ، ومن لم يكن عنده علم فليقل : الله أعلم ، فإن الله قال لنبيه : ( قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ )
যার ইলম থাকবে,সে ফাতাওয়া দিবে।আর যার সে সম্পর্কে ইলম নেই, সে বলবে,আল্লাহ-ই ভালো জানেন।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ
বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।(সূরা ছোয়াদ-৮৬)(এ'লামুল মুআওয়্যিকিন-২/১৮৫)

ইচ্ছা করে ভূল জবাব প্রদান হারাম।যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:  مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কাউকে কোনো ইলম জিজ্ঞাসা করা হলে,যদি সে সেই ইলমকে লুকিয়ে রাখে,তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা আগুনের লাগাম পড়াবেন।(সুনানে আবু দাউদ-৩৬৫৮,সুনানে তিরমিযি-২৬৪৯,সুনানে ইবনে মা'জা-২৬৪)

(৩)
https://www.ifatwa.info/216 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তরজমা-রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, (বনী ইসরাইলের) এক ব্যক্তি (মনে মনে) বলিল, আমি আজ (রাতে গোপনে) ছদকা করিব। সুতরাং (রাতে গোপনে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং অজ্ঞাতসারে) এক চোরের হাতে দিয়া দিল। সকালে লোকজনের মধ্যে আলোচনা হইল (যে, রাতে) চোরকে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সদকা দানকারী বলিল, হে আল্লহ! (চোরকে সদকা দেওয়ার মধ্যেও) আপনার জন্যই প্রশংসা। (কেননা, তাহার অপেক্ষা আরও বেশি খারাপ মানুষকে যদি দেওয়া হইত তবে আমি কি করিতে পারিতাম।) অতঃপর সে দৃঢ় সংকল্প করিল যে, আজ রাত্রে(ও) অবশ্যই আমি সদকা করিব। (কেননা, পূর্বের সদকা তো নষ্ট হইয়া গিয়াছে) সুতরাং রাত্রে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং (অজ্ঞাতসারে) সদকা একজন ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে দিয়া দিল। সকালে আলোচনা হইল যে, আজ রাত্রে ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সে বলিল, হে আল্লহ! ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দেওয়ার মধ্যেও আপনার জন্যই প্রশংসা। (কেননা, আমার মাল তো এই উপযুক্তও ছিল না।) অতঃপর (তৃতীয়বার) ইচ্ছা করিল যে, আজ রাত্রে অবশ্যই সদকা করিব। অতএব, রাত্রে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং উহা একজন ধনী ব্যক্তির হাতে দিয়া দিল। সকালে আলোচনা হইল যে, রাত্রে একজন ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সদকা দানকারী বলিল, হে আল্লহ! চোর, ব্যাভিচারিণী মেয়েলোক ও ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেওয়ার উপর আপনারই প্রশংসা। (কেননা, আমার মাল তো এরূপ লোকদের দেওয়ার উপযুক্তও ছিল না।) স্বপ্নে বলিয়া দেওয়া হইল যে, (তোমার সদকা কবুল হইয়া গিয়াছে।) তোমার সদকা চোরের উপর এইজন্য করানো হইয়াছে যে, হইতে পারে সে চুরির অভ্যাস হইতে তওবা করিয়া লইবে, ব্যাভিচারিণী মেয়েলোকের উপর এইজন্য যে, হইতে পারে সে ব্যাভিচার হইতে তওবা করিয়া লইবে (যখন সে দেখিবে যে, ব্যাভিচার ছাড়াও আল্লহ তায়া’লা দান করেন, তখন তাহার অনুভুতি আসিবে) আর ধনীর উপর এইজন্য, যাহাতে সে শিক্ষা লাভ করে (যে, আল্লহ তায়া’লার বান্দারা কিরূপে গোপনে সদকা করে; এই কারণে) হইতে পারে সেও ঐ সমস্ত মাল হইতে যাহা আল্লহ তায়া’লা তাহাকে দান করিয়াছেন, আল্লহ তায়া’লার পথে খরচ করিতে আরম্ভ করিবে।
( মিশকাত১৬৫)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/216

দান যে কাউকে করা যায়, তবে দ্বীনদার মুত্তাকি দেখেই দান করা উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,260 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 278 views
...