আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in সালাত(Prayer) by (31 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর আশা করছি।

১. সালাতে অনেক সময় হাঁচি ও হাই আসে। এমতাবস্থায় করণীয় কী?

২. জন্মদিন কী ঘিরে যে সকল অনুষ্ঠান, সে অনুষ্ঠানের খাবার কী যাওয়া যাবে? যেমন আমার এক আত্নীয়ের জন্মদিন উপলক্ষে কুরআন খতমের আয়োজন করা হয়েছে এবং ফাতেহার আয়োজন করা হয়েছে। এগুলো কী খাওয়া যাবে?

৩. হাজবেন্ডের অনুমতি ব্যাতীত কোন কোন কাজ করা যাবে না?

৪. একজন মেয়ের কী কী কাজ করা উচিত দ্বীনের পথে অটল থাকতে?
৫. শ্বশুরবাড়ির সবাই যদি মেয়েকে পর্দা করতে না দেয় এবং এজন্য অনেক বেশি চাপাচাপি করে আল্লাহ না করুন তারা যদি তাকে বিভিন্ন বেপর্দা হতে বাধ্য করে? এবং হাজবেন্ড ও যদি হেল্প না করে সে কী করবে? কীভাবে তাদের বোঝাতে পারে? আর তারা যদি বুঝতে না চায় তার করনীয় কী?

1 Answer

0 votes
by (57,810 points)
edited by

لرحمن الرحيم

 

জবাব,

১.নামাজে হাঁচি দেওয়া বা হাই তোলার হুকুম সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন : https://ifatwa.info/20564/

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ، فَإِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ وَحَمِدَ اللَّهَ كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يَقُولَ لَهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ. وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِذَا تَثَاوَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا تَثَاءَبَ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ ".

রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন, আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। যদি তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে, তবে প্রত্যেক মুসলিম শ্রোতার তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। আর হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। কাজেই তোমাদের কোনো ব্যক্তির হাই উঠলে সে যেন যথাসম্ভব তা রোধ করে। কেননা কেউ হাই তুললে শয়তান তার প্রতি হাসে। (বুখারি, হাদিস : ৬২২৬)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ التَّثَاؤُبُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَالَ هَا ضَحِكَ الشَّيْطَانُ

নবী (সা.) বলেছেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কারো যখন হাই আসবে যথাসম্ভব তা রোধ করবে। কারণ তোমাদের কেউ হাই তোলার সময় যখন ‘হাঁ’ বলে, তখন শয়তান হাসতে থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৩২৮৯)

*জন্মদিন সম্প্দ.্যদায়

হাদীস শরীফে এসেছে :

 

 ﻣﻦ ﺃﺣﺪﺙ ﻓﻲ ﺃﻣﺮﻧﺎ ﻫﺬﺍ ﻣﺎ ﻟﻴﺲ ﻣﻨﻪ ﻓﻬﻮ ﺭﺩ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻭﻣﺴﻠﻢ ،

 

অনুবাদঃ

যদি কেউ আমাদের মধ্যে কোনো(ধর্মীয়) নতুন জিনিষ সৃষ্টি করে তাহলে সে আমাদের মধ্য থেকে নয়।

ইবনে রজব হাম্বলী রাহ,উক্ত হাদিসের ব্যখ্যা করে বলেনঃ

 

ﻓﻜﺬﻟﻚ ﻛﻞ ﻋﻤﻞ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻋﻠﻴﻪ ﺃﻣﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ، ﻓﻬﻮ ﻣﺮﺩﻭﺩ ﻋﻠﻰ ﻋﺎﻣﻠﻪ ،

প্রত্যেক ঐ আমল যা আল্লাহএবং রাসুলুল্লাহ সাঃএর পদ্ধতি সমর্থিত নয়, তা বর্জিত ও পরিত্যাজ্য।

 

(জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম-১৭৬) হাদীসে অমুসলিমদের আদর্শ চাল চলন কে অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ

 

অনুবাদঃ.যরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ বলেন যে ব্যক্তি অন্য গোত্রে (অমুসলিম)-র অনুসরণ করবে সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।

 

{আবু-দাউদ-৩৫১২}

 বৈধ কাজে স্বামীর আনুগত্য ওয়াজিব

 

হাদীস শরীফে  এসেছে-

একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, فانظري أين أنت منه، فإنما هو جنتك ونارك

 হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)

 

অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

إذا صلت المرأة خمسها ، وصامت شهرها ، وحصنت فرجها ، وأطاعت زوجها قيل لها : ادخلي الجنة من أي أبواب الجنة شئت

নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত  নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবেআপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবেস্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে  জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ ইবনে হিব্বানহাদীস ৪১৬৩)

 

নারীদের পক্ষ থেকে হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ রা. নবীজীর দরবারে গিয়ে আরয করেন, নারীদের পক্ষ থেকে আমি আপনার কাছে আগমন করেছি। (আল্লাহর রাসূল!) আল্লাহ তাআলা আপনাকে নারী ও পুরুষ সবার কাছেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আমরা আপনার উপর ও আপনার প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি। আমরা নারীরা তো ঘরের কাজ-কর্ম আঞ্জাম দেই। সন্তান গর্ভে ধারণ করি। (তাদের লালন-পালন করি) আমাদের উপর (বিভিন্ন ইবাদাতের ক্ষেত্রে) পুরুষদের ফযীলত রয়েছে। তারা জামাতের সাথে নামায আদায় করে। রোগী দেখতে যায়। জানাযায় শরীক হয়। একের পর এক হজ্ব করে। সবচেয়ে বড় ফযীলতের ব্যাপার হল তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করতে পারে। তো আমরা কীভাবে তাদের মত ফযীলত ও সাওয়াব লাভ করতে পারব? নবীজী তখন সাহাবায়ে কেরামের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কোনো দ্বীনী বিষয়ে তোমরা কি কোনো নারীকে এর চেয়ে সুন্দর প্রশ্ন করতে শুনেছ কখনো? এরপর নবীজী সে নারীকে লক্ষ করে বললেন, তুমি আমার  কথা ভালোভাবে  অনুধাবন কর এবং অন্যান্য মহিলাদেরও একথা জানিয়ে দাও যে, স্বামীর সাথে সদাচরণ করা, তার সন্তুষ্টি কামনা করা ও তার পছন্দনীয় কাজ করা এসকল আমলের সমতুল্য সাওয়াব ও মর্যাদা রাখে। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৮৩৬৯; মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৫২০৯।

২..জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেউ কোনো অনুষ্টানের আয়োজন করলে, সেই অনুষ্টানে উপস্থিত হওয়া কখনো জায়েয হবে না।কিন্তু যদি কেউ কোনো হাদিয়া বা খাবার ঘরে পাঠিয়ে দেয়,তাহলে কি করতে হবে? এ সম্পর্কে বলা যায় যে,প্রথমে তাকে বুঝাতে হবে যে,এটা ইসলামে নিষিদ্ধ কাজ।এরকম অনুষ্টানে অংশগ্রহণ করতে ও ইনজয় করতে ফুকাহায়ে কেরামগণ নিষেধ করেছেন।তবে যেহেতু সে হাদিয়া দিয়ে দিচ্ছে,হাদিয়া গ্রহণ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নত, তাই গ্রহণ করে নেয়াই উচিৎ

৪.নারীদের আমল সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/22762/?show=22762#q22762

৫. শরীয়ত বিরোধিত কোনো কাজে মাতাপিতা-র আদেশকে মান্য করা যাবে না।

 

 

তাই পরিবারবর্গের কোনো প্রকার চাপকে আ'মলে নেয়া যাবে না।বরং যথাসাধ্য তাদেরকে বুঝিয়ে ইসলাম পালনে ব্রতী হতে হবে।

 

ঈমানকে মজবুত করতে সাহাবায়ে কেরামের  জীবনী সম্পর্কে বিশদভাবে পড়ার চেষ্টা করুন।

 

বিশেষকরে মুহাজির গরীব সাহাবায়ে কেরাম যেমন হযরত বেলাল রাযি, হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাযি এর জীবনী সহ আরো অনেকের জীবনীকে নিজ চক্ষুর সামনে রাখুন।

 

আল্লাহর নিকট আহাজারি করে দু'আ করুন।যাতেকরে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে সহ্যক্ষমতা দান করেন।

 

তাদেরকে বিভিন্ন কিতাবাদি পড়ার ব্যবস্থা করে দিন।ওয়াজ-নসিহত শুনার ব্যবস্থা করে দিন।

 

দ্বীনের পথে চললে বাধা আসবে। এটাই স্বাভাবিক। সে জন্য আল্লাহ তা'আলা মু'মিনদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন,

 

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺍﺻْﺒِﺮُﻭﺍْ ﻭَﺻَﺎﺑِﺮُﻭﺍْ ﻭَﺭَﺍﺑِﻄُﻮﺍْ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﻔْﻠِﺤُﻮﻥَ

 

হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 550 views
0 votes
1 answer 122 views
...