بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
যথাসময়ে ফজরের নামাজ আদায় না করলে কি শাস্তি হবে
সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে- হজরত আবু যুহাইর উমারাহ রুওয়াইবা (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসূল (সা.) বলেছেন,
যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বের নামাজ
(ফজর) ও সূর্যাস্তের পূর্বের নামাজ (আসর) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।’ [মুসলিম,
হাদিস নং: ১০৪৯]
নিম্নে ফজরের নামাজ আদায়ে সহায়ক ৫টি পরামর্শ তুলে
ধরা হলো-
১. ফজরে উঠতে দৃঢ় ইচ্ছা যদি আপনি করেন,
তবে কখনোই রাত জাগবেন না। তাড়াতাড়ি
ঘুমিয়ে পড়ুন, যাতে একদিকে আপনার ঘুমও পূর্ণ হয়, অন্যদিকে যথাসময়ে ফজরের জন্য উঠতেও পারেন। রাসূল
(সা.) এশার নামাজের পরপরই ঘুমাতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজ্ঞানও এই অভ্যাসের যথার্থতার
প্রমাণ প্রকাশ করেছে।
২. বিছানায় যাওয়ার আগে অজু করে নিন। যদি আপনি পবিত্র
অবস্থায় ঘুমাতে যান, তবে ফেরেশতারা আপনার ঘুম থেকে জাগার আগ পর্যন্ত আপনার জন্য দোয়া করতে থাকবে।
৩. রাসূল (সা.) ঘুমানোর সময় ডান কাত হয়ে,
ডান হাতকে ডান গালের নিচে রেখে ঘুমাতেন।
রাসূল (সা.)-এর অনুকরণে ঘুমের জন্য শোয়ার এই অবস্থা একদিকে যেমন ঘুমের জন্য সহায়ক,
অন্যদিকে ফজরে যথাসময়ে ঘুম থেকে ওঠার
জন্যও কার্যকর।
৪. আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে বেশি বেশি দোয়া করুন,
যাতে আল্লাহ আপনাকে যথাসময়ে ফজরের
নামাজ আদায়ে সামর্থ্য দান করেন। আল্লাহর কাছে যদি আপনি আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করতে
পারেন, তবে আল্লাহও আপনার প্রার্থনাকে কবুল করবেন।
৫. বিছানায় যাওয়ার সময় কিছু কোরআনের আয়াত তিলাওয়াত
করে নিন। বিশেষ করে সূরা সাজদাহ, সূরা মুলক, সূরা ইসরা, সূরা যুমার, সূরা কাহফের শেষ চার আয়াত,
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ইত্যাদি
এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
★হাদীস শরীফে এসেছে
عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ أَنَّ فِي الْكِتَابِ الَّذِي
كَتَبَهُ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ لِعَمْرِو
بْنِ حَزْمٍ أَنْ لَا يَمَسَّ الْقُرْآنَ إِلَّا طَاهِرٌ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবু বকর বিন হাযম বলেন,
রাসূল ﷺ
আমর বিন হাযম এর কাছে এই মর্মে চিঠি লিখেছিলেন যে,
পবিত্র হওয়া ছাড়া কুরআন কেউ স্পর্শ
করবে না”।
(মুয়াত্তা মালিক ৬৮০,
কানযুল উম্মাল ২৮৩০,
মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার ২০৯,
আল মুজামুল কাবীর ১৩২১৭,
আল মুজামুস সাগীর ১১৬২,
সুনানে দারেমী ২২৬৬)
عن عبد
الله بن عمر أن رسول الله ﷺ قال:لا يمس القرآن إلا طاهر
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল
সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না। (মাযমাউজ যাওয়ায়েদ
৫১২)
বিনা ওযুতে কোরআন পড়া যায় ;
তবে কোরআন স্পর্শ করা যায় না। হাদিস
শরিফে এসেছে, আলী রাযি. বলেন,
كان رسول
الله ﷺ يقضي حاجته, ثم يخرج فيقرأ القرآن ويأكل معنا اللحم, ولا يحجبه ” وربما قال
لا يحجزه ” من القرآن شيء ليس الجنابة
রাসুলুল্লাহ ﷺ পায়খানা হতে বের হয়ে কোরআন পড়তেন এবং আমাদের সাথে গোশত খেতেন।
গোসল ফরয হওয়া ছাড়া কোরআন হতে তাঁকে কোন কিছু বাধা দিতে পারত না। (মুসনাদে আহমাদ ৬৪০)
সুতরাং বোঝা গেল, যে মুসলমান কোরআন স্পর্শ করতে ও তা পাঠ করতে ইচ্ছুক-
তাকে অবশ্যই দৈহিকভাবে পবিত্র হতে হবে। অন্যথায় তাকে গুনাহগার হতে হবে।
যারা অপবিত্র অবস্থায় কোরআন স্পর্শ করতে চায়,
তাদের আরো একটি প্রমাণ হলো—বুখারি শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসের কাছে যে পত্র
পাঠিয়েছেন তাতে কোরআনের আয়াত লেখা হয়েছে। অথচ সে ছিল কাফির।
আমরা বলতে চাই, হাদিসবিশারদরা এই হাদিসের ব্যাখ্যা এভাবে করেছেন
যে পত্র প্রেরণের ঘটনাটি অপবিত্র অবস্থায় কোরআন স্পর্শ করা নিষিদ্ধ হওয়ার আগে হয়েছিল,
তাই এ বিধান রহিত হয়ে গিয়েছে। (শরহে
বুখারি, ইবনে বাত্তাল : ১/১৫৮)
কোনো কোনো হাদিসবিশারদ বলেছেন,
এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়,
কোনো পত্রাদি বা অন্য কিছুতে কোরআন
শরিফের আয়াত লিখলে ওই পত্রাদি অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করা যাবে,
যদিও আয়াত স্পর্শ করা যাবে না। এ জন্যই
রাসুল (সা.) আয়াতটি লিখেছিলেন। (আল মিনহাজ : ১২/১০৮)
আরো জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/793
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
১.শয়তান মানুষকে সময়মত নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে
বিভিন্নভাবে ধোকা দেয়। বিশেষ করে ফজরের নামাজে। নিয়মিত ফজরের ওয়াক্তে জাগ্রত হতে উপরের
নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করা যেতে পারেো
২.শরীয়তের বিধান হলো যদি কোনো কিতাবে, খাতায় বা প্যাডে কুরআনে কারীমের সাথে অন্য লিখা সংযোজিত থাকে,এবং অন্যান্য লিখার তুলনায় কুরআন বেশী থাকে,তাহলে সে কিতাবকে স্পর্শকে করা যাবে না।
তবে যদি কুরআনের তুলনায় অন্য লিখা বেশী থাকে,চায় সেটা তাফসীর হোক বা অন্য কিছু,তখন উক্ত কিতাব বা খাতাকে বিনা অজুতে যদিও স্পর্শ
জায়েয, তবে স্পর্শ না করাই উত্তম।এবং এমতাবস্থায় ঐ কিতাব বা খাতার যে সকল স্থানে কুরআনের
আয়াত অঙ্কিত রয়েছে,সরাসরি ঐ স্থানে বিনা অজুতে স্পর্শ করা কিন্তু জায়েয হবে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ কিতাবকে
স্পর্শ করা জায়েয হলেও সরাসরি কুরআনের আয়াতের উপর হাত রাখা যাবে না। ঐ খাতা বা বইকে
মাটিতে বা নিচু জায়গায় রাখা কুরআনের আদবের পরিপন্থি। বরং তা উচু জায়গায় রাখতে হবে।
সেগুলিকে সরাসরি কুরআনে শরীফের উপরে রাখা যাবে না বরং কুরআন শরীফের নিচে রাখাই উত্তম।
৩.ওয়াসওয়াসা ও শয়তানের ধোকা থেকে বাঁচতে কিছু আমল রয়েছে।আমল গুলি সম্পর্কে
জানতে ভিজিট করুনঃ https://ifatwa.info/4622/
৪. স্বামী-স্ত্রী পরস্পর অনুমতি
ব্যতীত একে অন্যর সম্পত্তি থেকে কোনো প্রকার খরচ করতে পারবে না।নিজ পিতা-মাতা বা
আত্মীয়-স্বজনদেরকে সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবেন না।এমনকি আল্লাহর রাহে দান-খায়রাত
পর্যন্ত ও করতে পারবেন না।আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :
https://ifatwa.info/30471?show=30472#a30472