ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
ইবনে নুজাইম
হানাফি রাহ লিখেন,
وكان إماما فإنه يستخلف رجلا مكانه يأخذ بثوب
رجل إلى المحراب أو يشير إليه والسنة أن يفعله محدودب الظهر واضعا يده في أنفه
يوهم أنه قد رعف لينقطع عنه كلام الناس، ولو تكلم بطلت صلاتهم، ولو ترك ركوعا يشير
بوضع يده على ركبتيه أو سجودا يشير بوضعها على جبهته أو قراءة يشير بوضعها على
فمه، وإن بقي عليه ركعة واحدة يشير بأصبع واحدة، وإن كان اثنين فبأصبعين هذا إذا
لم يعلم الخليفة ذلك أما إذا علم فلا حاجة إلى ذلك ولسجدة التلاوة بوضع أصبعه على
الجبهة واللسان وللسهو على صدره وقيل يحول رأسه يمينا وشمالا كذا في الظهيرية،
যদি ইমামের অজু
ভেঙ্গে যায়,তাহলে তিনি একজন খলিফা
নির্ধারণ করবেন।অর্থাৎ পিছন থেকে কারো কাপড় ধরে মেহরাবে নিয়ে আসবেন।অথবা মেহরাবের
দিকে ইশারা করবেন।সুন্নাহ হলো,তিনি কুজো পিঠে
নাকে হাত দিয়ে খলিফা নির্ধারণ করবেন।যাতেকরে লোকজন নাকের সমস্যা বুঝে ভিন্ন কোনো
কথাবার্তায় লিপ্ত না হয়। যদি ইমাম কথা বলে ফেলেন, তাহলে সবার
নামাযই বাতিল বলে গণ্য হবে।যদি উনি রুকুকে ছেড়ে দেন,তাহলে হাটুতে হাত
রাখবেন,যদি সেজদাকে ছেড়ে যান,তাহলে হাত কপালে রাখবেন।যদি কিরাত ছেড়ে দেন
তাহলে আঙ্গুলকে মুখে রাখবেন।যদি উনি এক রা'কাত কে ছেড়ে দেন,তাহলে এক আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবেন।যদি দুই রা'কাত ছেড়ে দেন তাহলে দুই আঙ্গুল দ্বারা ইশারা
করবেন।
এটা তখনই যখন
খলিফা এগুলো সম্পর্কে অবগত থাকবেন না। যদি খলিফা এ সম্পর্কে অবগত থাকেন,(তথা প্রথম থেকেই নামাযে) তাহলে এ সমস্ত ইশারার
কোনো প্রয়োজন নেই। সেজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব থাকলে কপালে এবং জবানে আঙ্গুল
রাখবেন।সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব থাকলে সিনায় হাত রাখবেন।কেউ কেউ এক্ষেত্রে ডানে বামে
মাথা হিলানোর কথাও বলেছেন।
ثم الاستخلاف ليس بمتعين حتى لو كان الماء في
المسجد فإنه يتوضأ ويبني ولا حاجة إلى الاستخلاف كما ذكره الشارح وإذا لم يكن في
المسجد فالأفضل الاستخلاف
খলিফা নির্ধারণ
নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নয়। সুতরাং যদি মসজিদে পানি বিদ্যমান থাকে,তাহলে তিনি অজু করবেন,এবং বিনা (এসে অবশিষ্ট নামায পড়া) করবেন।তখন
খলিফা নির্ধারণের কোনো প্রয়োজনিয়তা থাকবে না।যদি মসজিদে পানি না থাকে তাহলে খলিফা
নির্ধারণই উত্তম হবে। (বাহরুর রায়েক-১/৩৮৯)
ইমাম যে সূরা
পড়তেছিলেন,যদি মুক্তাদির সেই সূরা
স্বরণ না থাকে,তাহলে উনি ভিন্ন সূরাও
পড়তে পারবেন। ইমাম সাহেব যদি ওয়াজিব পরিমাণ কেরাতকে আদায় করে নিয়ে থাকেন,তাহলে খলিফা তাৎক্ষণিক রুকুতে চলে যেতে পারবেন।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৩/২৬৪)
আমর ইবনুল হারেস
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী
করণীয় এ সম্পর্কে উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. বলেন, يَنْفَتِلُ
فَيَتَوَضَّأُ، ثُمَّ يَرْجِعُ فَيُصَلِّي সে অযুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং অযু করে আসবে।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫০)
ইবরাহিম থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ عَلْقَمَةَ رَعَفَ فِي
الصَّلاَةِ، فَأَخَذَ بِيَدِ رَجُلٍ فَقَدَّمَهُ، ثُمَّ ذَهَبَ، فَتَوَضَّأَ،
ثُمَّ جَاءَ فَبَنَى عَلَى مَا بَقِيَ مِنْ صَلاَتِهِ
অর্থাৎ, আলকামার নামাজে নাক থেকে রক্ত বের হয়েছে, তখন তিনি এক ব্যক্তির হাত ধরে ইমামতির স্থানে
দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তিনি বের হয়ে গিয়ে অযু করে আসলেন। তারপর বাকি নামাজে বেনা
করছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫৬)
হানাফী মাযহাবের
প্রসিদ্ধ কিতাব হেদায়াতে আছে,ومن سبقه الحدث في الصلاة انصرف فإن
كان إماما استخلف وتوضأ وبنى অর্থাৎ, যে ব্যক্তির নামাযে হদস হবে অর্থাৎ নামাযে অযু
চলে যাবে সে ফিরে আসবে। সে যদি ইমাম হয় তাহলে সে একজন প্রতিনিধি বানাবে এবং অযু
করবে এবং তার নামাযে বেনা করবে। (হেদায়া: ১/৫৯)
শুধু অন্তরে উদিত
ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে
এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ
أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".
আবূ হুরায়রা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
(আমার বরকতে)
আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন।
যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. ক. ইমাম সাহেব যদি কোন কারণে নামাজ ছেড়ে চলে
যায় অথবা নামাজ ভেঙ্গে দেয় তখন সকলের নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই সেই সময় মুক্তাদিরা
সকলে নামাজ ভেঙ্গে পুনরায় পড়বে।
খ. আর যদি নামাযে ইমাম সাহেবের অযু ভেঙ্গে যায়
তাহলে তিনি কিরাত শুদ্ধ আছে এমন কাউকে তার প্রতিনিধি বানাবেন। প্রতিনিধি বাকি
নামাজ মুসল্লীদের নিয়ে আদায় করবে। ইমাম সাহেব অযু করে এসে তার ইকতেদা করবেন।
২.
প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে মাকরুহ (সূর্য উদয়, ঢলে যাওয়া ও সূর্য অস্ত যাওয়ার ) সময় না হলে আপনি উক্ত নামাজ চালিয়ে যাবেন। কারণ, তখন উক্ত নামাজ কাযা হিসেবে আদায় হয়ে যাবে।
৩. এসব
কল্পনা করলে গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে সামর্থ্য থাকলে এসব চিন্তা ভাবনা না করে
বিয়ে করে ফেলুন। দেখবেন আল্লাহ তায়ালা সব কিছু ব্যবস্থা করে দিবেন।