ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ»
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।
(বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।)
নিয়ত মানে হল মনস্থির করা। কোন কাজটি করছি? কেন করছি? কার জন্য করছি? কি করছি? এসব বিষয় নির্ধারণ করার নাম হল নিয়ত।
নিয়ত হচ্ছে, অন্তরের বিষয়।
অন্তর দিয়ে নিয়ত করতে হয়।
নিয়ত বাংলায় বা আরবীতে বলা জরুরী নয়। আরবীতে যেসব নিয়ত আমাদের দেশে প্রচলিত এসব শব্দে কোন নিয়ত কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত নামাজে মনে মনে নিয়ত করে নামাজ শুরু করাই যথেষ্ট।
,
আরো জানুনঃ
হ্যাঁ যদি মনে মনেও কোম নামাজ আদায় করছেন,এমন কিছুই নির্দিষ্ট না করে থাকনে,সেক্ষেত্রে ফরজ/ওয়াজিব নামাজ হলে তৎক্ষনাৎ মনে মনে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা বলবেন।
অন্যান্য নামাজ হলে এভাবেই নামাজ চালিয়ে যাবেন।
,
(০২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নামাজে সেজদায় পা ফাক রাখা সুন্নাত।
তবে উভই পা মিলিয়ে নামাজ পড়ার ছুরতও জায়েজ আছে।
কোনো সমস্যা নেই।
(ফাতাওয়ায়ে মারগুবুল ফাতওয়া ২/১১৬)
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৩)
ইচ্ছা করে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব হবে।
لمافی الھندیۃ(۱/۱۲۶):وفی الثالث ان ترک ساھیاً یجبر بسجدتی السھو وان ترک عامداً لا کذا فی التاتارخانیۃ وطاھر کلام الجم الغفیر أنہ لا یجب السجود فی العمد وانما تجب الاعادۃ جبراً لنقصانہ، کذا فی البحرالرائق.
সারমর্মঃ
যদি ভুলক্রমে ওয়াজিব ছেড়ে দেয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু দ্বারা ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে।
আর যদি ইচ্ছাপূর্বক ভাবে ওয়াজিব ছেড়ে দেয়,তাহলে এটি সেজদায়ে সাহু দ্বারা ক্ষতিপূরণ হবেনা।
পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব হবে।
وفی البحر الرائق(۱۶۱/۲):
وظاھر کلام الجم الغفیر أنہ لایجب السجود فی العمد وانما تجب الاعادۃ اذا ترک واجباً عمدا جبر النقصانہ،
সারমর্মঃ
ইচ্ছাপূর্বক ভাবে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা,বরং পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব হবে।
,
(০৪)
যে ব্যক্তি নামায আদায়কালে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মত কোন দুঘর্টনা শুরু হয়েছে এবং সে ব্যক্তির প্রবল ধারণা হয় যে, এ দুঘর্টনাতে সে আক্রান্ত হবে, যদি সে নামাযের স্থান থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে বেঁচে যাবে সেক্ষেত্রে পালিয়ে যাওয়া এবং বাঁচার চেষ্টা করা তার উপর আবশ্যক। বের হয়ে সে দুঘর্টনার অবস্থাভেদে তার অবশিষ্ট নামায পূর্ণ করবে কিংবা নামায ছেড়ে দিবে।
তার যদি ধারণা হয় যে, নামাযের স্থানে থাকলে তার মৃত্যু হবে সেক্ষেত্রে তার জন্য সেখানে অবস্থান করা জায়েয হবে না। যদি থেকে যায় তাহলে সে যেন নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করল। তদ্রূপ অন্য কাউকে মৃত্যু থেকে বাঁচানোর জন্য নামায ছেড়ে দেয়াও তার উপর আবশ্যক; যেমন পানিতে ডুবে যাওয়া থেকে, আগুনে পুড়ে যাওয়া থেকে কিংবা কূপে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচানো।
তবে যদি এতে তার/তার সম্পদের কোনো ক্ষতিই না হয়,অন্যের জীবনেরও ক্ষতি না হয়,তা হলে সে নামাজ চালিয়ে যাবে।
,
(০৫)
যদি কেহ পাশে মারা যায়,তাহলে নিজের নামাজ চালিয়ে যেতে হবে।
তবে কেহ মারা যেতে লাগলে তার চিকিৎসার জন্য নামাজ ছেড়ে দেওয়া জায়েজ আছে।
(০৬)
জী,জবাব দেওয়া হয়েছে।