ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
মুসলমানদের কোনো কাজ শরীয়তের খেলাফ
হতে পারেনা।
চাই তাহা যেই কাজই হোক।
আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
اتَّبِعُواْ مَا أُنزِلَ
إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلاَ تَتَّبِعُواْ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاء
তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং
আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোন বন্ধু বা অভিভাবকের অনুসরণ করো না। (সূরা আ’রাফ ৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ
فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুরূপ
অবলম্বন করে, সে তাঁদেরই দলভুক্ত। (আবূ দাঊদ ৪০৩১)
দিবস পালন করা সম্পর্কে বিস্তারিত
জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/7136
★জন্মদিন
সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে জন্মদিন হচ্ছে পঞ্জিকা অনুযায়ী মানুষের
জন্মগ্রহণের দিবস। সাধারণত জন্মবার্ষিকীতে কারো জন্মদিন উৎসবের মাধ্যমে পালন করা
হয়। সাধারণতঃ বৎসরের একটি নির্দিষ্ট মাসের নির্দিষ্ট তারিখে শিশুর পক্ষে তার
পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন কিংবা ব্যক্তি কর্তৃক উদযাপিত হয় এই দিবসটি।
অর্থাৎ, বৎসরের নির্দিষ্ট দিনে জন্মগ্রহণকারী শিশু বা ব্যক্তির জন্ম
উপলক্ষে যে আনন্দঘন উৎসব-আয়োজনের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, তাই জন্মদিন নামে আখ্যায়িত করা হয়। সাধারণতঃ শিশুদেরকে
কেন্দ্র করেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীসহ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরকেও জন্মদিন পালন করতে দেখা
যায়। সাড়ম্বর উদযাপন ছাড়াও জন্মদিন উদযাপনের প্রধান মাধ্যম শুভেচ্ছা জ্ঞাপন।
,
কেক কেটে জন্মদিন পালনের উদ্ভব হয়
পশ্চিমা দেশগুলোতে। আর জন্মদিনের সূচনা হয় ফিরাউন থেকে। বাইবেলের বুক অব জেনেসিসে
এসেছে, ‘তৃতীয় দিনটা ছিল ফিরাউনের জন্মদিন।
ফিরাউন তার সব দাসদের জন্য ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময় ফিরাউন রুটিওয়ালা ও
খাদ্যদ্রব্য পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন।’ (আদি পুস্তক : ৪০২)
,
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
বুঝা গেলো যে এটি আনন্দের একটি
অনুষ্ঠান।
মুসলমানদের ঘটা করে কোনো আনন্দ উদযাপনের
দিন ঠিক করা দিবস আকারে,এটি জায়েজ নেই।
মুসলমানদের কোনো দিন পালন নেই।
,
বর্তমানে সাধারণ মানুষের মাঝে
‘জন্মদিন’ পালনের নামে বিশেষ দিন উদযাপনের যে প্রথা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে— এটি
বিদআত ও শরিয়ত বিরোধী। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া মুসলমানদের আর কোন উৎসব (দিন
পালন) নেই।
আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে
তার অনুসরণ কর। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কারও অনুসরণ কর না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ
গ্রহণ কর।’ (সূরা আরাফ : ৩)
,
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, অবশ্যই
তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির অনুসরণ করবে বিঘত-বিঘত এবং হাত-হাতের সমপরিমাণ।
এমনকি তারা যদি সাপের গর্তে প্রবেশ করে, তা
হলে তোমরাও তাদের পেছন পেছন যাবে।’ সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি ইহুদি ও নাসারাদের অনুকরণ করার
কথা বলছেন?’ নবী করিম (সা.) বললেন, ‘তবে আর কার?’ (বুখারি
: ২৬৬৯)
অন্য একটি হাদিসে নবী করিম (সা.)
বলেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির নমুনা অবলম্বন
করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।’ (সহিহুল জামে : ৬০২৫)
নবী করিম (সা.) আরও বলেন, ‘সে ব্যক্তি আমার দলভুক্ত নয়, যে আমাদের ছেড়ে অন্য কোনো জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে। তোমরা
ইহুদিদের সাদৃশ্য অবলম্বন কর না, খ্রিস্টানদেরও
সাদৃশ্য অবলম্বন কর না।’ (সিলসিলাহ সহিহা : ২১৯৪)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. জন্ম দিন পালন করা জায়েজ নেই। তাই এর থেকে বিরত থাকা
চায়। তবে জন্ম দিনে দেওয়া উপহার তা হাদিয়ে হিসেবে ধরা হবে এবং তা ব্যবহার করা
জায়েজ আছে।
২. হারাম রিলেশন করা খুবই মারাত্মক
গুনাহ, যা জাহান্নামে
যাওয়ার কারণ। তাই এর থেকে বিরত থাকা চাই। তবে ছেলে বা মেয়ের দেওয়া উপহার তা
হাদিয়ে হিসেবে ধরা হবে এবং তা ব্যবহার করা জায়েজ আছে। তবে যদি এগুলো ব্যবহার করলে
তার কথা মনে পড়ে যায় এবং এতে আবার তার সাথে হারাম সম্পর্ক হওয়ার সম্ভবনা থাকে তখন
সেগুলো ব্যবহার না করে দূরের কাউকে হাদিয়া
দিয়ে দিতে পারেন।