আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১.কোনো মেয়ের  শশুরবাড়ির মানুষ যদি মানসিকভাবে আঘাত দেয় সবসময়, অনেক মানসিক কষ্ট দেয়, এই সময় যদি আমি উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকি, তাহলে আমি এর জন্য কি কি  প্রতিদান পাবো আল্লাহর কাছ থেকে?


২.মেয়ের  শশুরবাড়ির মানুষ কটু কথা শুনালে, মানসিকভাবে কষ্ট দিলে, তখন কি করা উচিত হবে? উত্তর না দিলে, উনারা আরো শুনায়,এক্ষেত্রে কি তাদের বুঝিয়ে বলা ভালো হবে নাকি চুপ থাকা?
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনটা করলে ভালো হবে?


৩.ছেলের বউ হিসেবে শশুর শাশুড়ি ননদের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য কি কি?


৪.কোনো ডাক্তার যদি জীবনবিমা কোম্পানিতে( ALICO)  তে ডাক্তার হিসেবে চাকরি করে তাহলে এই চাকরি কি জায়েজ হবে? এই টাকা হালাল হবে?
রেফারেন্স সহ এইটার উত্তর চাই,কারণ উনি এইটা রেফারেন্স সহ জানতে চেয়েছেন।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ-

(০১)
মাজলুমের বদদুআ আর আল্লাহর মাঝে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা মাজলুমের দুআ সরাসরি কবুল করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছেে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

اتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ

“মাজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থাক। কারণ তার বদদোয়া ও আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

আখিরাতে জুলুমের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। সে দিন মানুষের অন্যায়-জুলুম-অবিচারগুলো অন্ধকার রূপ ধারণ করে সামনে এসে হাজির হবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

اتَّقُوا الظُّلْمَ ، فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

“তোমরা জুলুম থেকে বেঁচে থাকো। কেননা জুলুম কিয়ামতের দিন অন্ধকার রূপ নিয়ে হাজির হবে।” (সহীহ মুসলিম)।

সবচেয়ে মহান ন্যায় বিচারক মহান আল্লাহ সে দিন বিচারের কাঠ গড়ায় জালিমদের বিচার করবেন। তিনি মাজলুমের পক্ষে রায় দিবেন। তিনি জালিমের নেকি কর্তন করে মাজলুমকে দান করবেন আর মাজলুমের গুনাহ জালিমের উপর চাপিয়ে দিবেন। 

★যদি দুনিয়াতেই একে অপরের সাথে সমঝোতা করে নেয়, ক্ষমা চায় অথবা মাজলুম ব্যক্তি নিজের পক্ষ থেকে জালিমকে ক্ষমা করে দেয় তাহলে তা নি:সন্দেহে উত্তম। এ জন্য সে আখিরাতে প্রতিদান পাবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা ধৈর্য ধারন করলে সে আখিরাতে প্রতিদান পাবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَإِن تَعْفُوا وَتَصْفَحُوا وَتَغْفِرُوا فَإِنَّ اللَّـهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
“যদি তোমরা মার্জনা কর, উপেক্ষা কর এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।” (সূরা তাগাবুন: ১৪)

আল্লাহ আরও বলেন:
وَأَن تَعْفُوا أَقْرَبُ لِلتَّقْوَىٰ ۚ
“আর তোমরা যদি ক্ষমা কর, তবে তা হবে তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) এর অধিক নিকটবর্তী।” (সূরা বাকারা: ২৩৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 

প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা মাজলুম।
এক্ষেত্রে তিনি ধৈর্য ধারন করলে অবশ্যই মহান  আল্লাহর কাছে তিনি উত্তম প্রতিদান পাবেন।
তবে এটি কি ধরনের প্রতিদান,সেটি মহান আল্লাহই ভালো জানেন। 
তবে তিনি জালিমের নেকি কর্তন করে মাজলুমকে দান করবেন আর মাজলুমের গুনাহ জালিমের উপর চাপিয়ে দিবেন। 

(০২)
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য চুপ থাকা ভালো হবে।

(০৩)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ছেলের বউ হিসেবে শশুর শাশুড়ি ননদের প্রতি আবশ্যকীয় কোনো  দায়িত্ব কর্তব্য নেই।

বিস্তারিত জানুনঃ

(০৪)
জীবন বীমা নাজায়েয ও হারাম। কেননা কম্পানির পক্ষ্য থেকে মাসিক কিস্তিতে যে টাকা উসূল করা হয়, সেটা মূলত কম্পানির নিকট ঋণ হিসেবে থাকে। এবং পরবর্তীতে এ জমাকৃত টাকা তথা ঋণের বিপরিতে যে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়,সেটা সুদ। আর সুদ হারাম।দ্বিতীয়ত বীমার বিষয়টা শর্ত তথা গ্রাহকের কোনো অঘটনের সাথে চুক্তিবদ্ধ। আর শর্তের সাথে কোনো ঋণের আদাণ-প্রদাণ জায়েয না বরং হারাম।তৃতীয়ত,বীমার টাকা দেড়ীতে গ্রাহকের হস্তগত হওয়ার শর্ত থাকে।আর ঋণের মধ্যে শর্তের মাধ্যমে দেড়ীতে লেনদেনের সমাপ্তি বিশুদ্ধ নয়।তাছাড়া বীমা কম্পানি গ্রাহকের নিকট থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে সুদি লেনদেনে জড়িয়ে থাকে।সুতরাং এসমস্ত কারণ বিবেচনায় ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, জীবন বীমা করা এবং বীমা কম্পানিতে চাকুরী করা জায়েয হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া-৭/২৪)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1204

★রেফারেন্স জানার জন্য উল্লেখিত লিংকে প্রবেশ করতে পারেন।
বিস্তারিত পাবেন,ইনশাআল্লাহ।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...