আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্।

১)আমি একজন কলেজ স্টুডেন্ট।সামনে পরীক্ষা। আমি কি আমার স্কুলের স্যারের(যে কিনা আমার ননমাহরাম) কাছে দুআ চেয়ে, আমার পড়ালেখার খবর জানিয়ে ও ইসলামিক বই হাদিয়া দিয়ে(এক্ষেত্রে দাওয়াহ ও হয়ে যাবে) একটি চিঠি পাঠাতে পারি?তার বয়স পঞ্চাশোর্ধ বা কাছাকাছি,আমাকে মেয়ের মতো দেখেন।আশা রাখি ফিতনার আশঙ্কা থাকবে না,ইন শা আল্লাহ
২)স্যারদের সাথে পর্দা মেনে, দৃষ্টি সংযত রেখে দেখা করে দুআ চাওয়া যাবে?

৩)প্রাইভেটের শেষ দিন মানে যাকে বলা হয় বিদায় দিবস(!),এমন দিনে কি উপস্থিত হওয়া যাবে।এটি রেগ ডে না।যদি পরিপূর্ণ পর্দা করে যাই,এবং কোনো ছেলেদের সাথে কথা না বলি।শুধু ক্লাসের শেষ দিনটায় স্যারের কাছ থেকে কিছু নির্দেশনা ও দুআ নেওয়া হয়।কোনো হারাম অনুষ্ঠান হয়ে থাকলে সেগুলোতে না জড়াই

৪)অযু করার পর (নামাজরত অবস্থায় নয়)হাসলে কি অযু ভেঙে যাবে?

৫)মাজহাব মানা কি আবশ্যক বা ফরজ?ধরুন আমি এ সম্পর্কে কিছু জানি না,এখন আমি কি সব মাজহাব ফলো করতে পারব?
৬)আইওএম অর্থাৎ আপনারা কোন মাজহাব ফলো করেন বা কোন মাজহাব অনুসারে প্রশ্নের উত্তর দেন?

৭)ফেসবুকে বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিযোগিতা হয়,যেখানে একাধিক বিজয়ী হলে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী নির্ণয় করে পুরস্কৃত করা হয়।এরকম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ জায়েজ কি?যদি বাস্তবেও এমন করা হয়?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।

 মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমানতা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামীপিতাশ্বশুরপুত্রস্বামীর পুত্রভ্রাতাভ্রাতুস্পুত্রভগ্নিপুত্রস্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদীযৌনকামনামুক্ত পুরুষও বালকযারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞতাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করেতারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণতোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা করযাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

 

 আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান) তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনাযাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহেজাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

 

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

 

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেনউক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ফিতনার আশংকা না থাকলে স্যারের কাছে খোঁজ খবর ও দোয়া চেয়ে চিঠি দেওয়া যাবে।

২. হ্যাঁ,  ফিতনার আশংকা না থাকলে স্যারদের সাথে পর্দা মেনে, দৃষ্টি সংযত রেখে দেখা করে দুআ চাওয়া যাবে।

৩. হ্যাঁ, প্রশ্নে উল্লেখিত শর্ত মেনে বিদায় অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে।
. নামাজরত না হলে শুধু হাসার দ্বারা ওজু ভাঙ্গবে না

. মাজহাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/25889/?show=25889#q25889

৬. হানাফী মাজহাব অনুসারে ফাতওয়া দেওয়া হয়।
৭. উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ যদি কোন প্রকার ফি ছাড়াই করা যায় এবং কোন হারাম কিছু না থাকে তাহলে উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যাবে। এখন যদি বিজয়ী অনেকজন হয় তাহলে তাদের মাঝে লটারীও করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...