আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমি এক বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানি তে চাকুরীরত আছি। প্রতি বছর ইনকাম ট্যাক্স এর জন্য আমার প্রতি মাসের বেতন থেকে সরকারি হিসাব অনুযায়ী টাকা কর্তন করে কোম্পানি নিজে সরকারি কোষাগার এ জমা দেয় এবং বছর শেষে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন আমার নিজের জমা দিতে হয়।  এখন সরকারের কিছু খাত আছে যেখানে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাত যেখানে আমার মত বেসরকারি চাকুরি জীবির জন্য বিনিয়োগযোগ্য হল সঞ্চয় পত্র, জীবন বিমা প্রিমিয়াম, শেয়ার মার্কেট, বেসরকারি পেনশনার প্ল্যান,  সরকারি ট্রেজারী বন্ড। এখন উপরোক্ত প্রত্যেকটি খাতে সুদের সংমিশ্রণ আছে, যদিও শেয়ার মার্কেট এর ব্যাপারে ইখতিলাফ থাক্লেও এখানের বিনিয়োগ ঝুকিপূর্ণ এবং সময় সাপেক্ষ,  তাই আমি যদি সঞ্চয় পত্র, জীবন বিমা অথবা সরকারি কোনো বন্ড এ বিনিয়োগ করি কিন্তু তার থেকে আসা কোনো সুদ আমি গ্রহন না করি, সুদ এর অংশ কোনো সওয়াব এর আশা না করে সাদাকা করে দেই তাহলে আমার এই বিনিয়োগ কি জায়েজ হবে। প্রতি বছর ইনকাম ট্যাক্স বাবদ অনেক টাকা আমার বেতন থেকে কেটে নেয়, যদি বিনিয়োগ করতে পারি তাহলে আমি ইনকাম ট্যাক্স থেকে ভালো এমাউন্টও বেচে যাবে যা আমার পরিবারের জন্য আমি খরচ করতে পারব। আশা করি ব্যাপার টি বুঝতে পেরেছেন।

1 Answer

0 votes
by (58,740 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান হলো সুদ ভিত্তিক ব্যাংকে একাউন্ট খোলা জায়েজ নেই।

কারন এতে আপনি সুদ না খেলেও তারা আপনার টাকা খাটিয়ে সুদ খাবে,সুদি কর্মকান্ডে তারা আপনার টাকা লাগাবে,সুতরাং আপনার একাউন্ট খোলার মাধ্যমে আপনি সুদি কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন,তাই এসব ব্যাংকে একাউন্ট খোলা কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।

 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]

 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

 

সুদ কতখানি জঘন্য তা হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "الربا سبعون حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."

حكم الحديث: صحيح

"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়: ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত নিয়তেও সঞ্চয় পত্র, ইন্সুরেন্স অথবা বন্ড এ ইনভেস্ট করা জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে লভ্যাংশ সওয়াবের আশা ছাড়া সদকাহ করে দিলেও আপনার টাকা খাটিয়ে তারা যে সূদি কারবার  করছে,এর জন্য আপনার উক্ত ইনভেস্ট জায়েজ হবেনা। তাছাড়া সরকারকে ইনকাম ট্যাক্স দেওয়াও আপনার উপর আবশ্যক। তাই ট্যাক্স দেওয়া থেকে বাঁচতে সুদি কারবারের সাথে জড়িত হওয়া জায়েজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...