দাওয়াত একটি আরবী শব্দ, যার অর্থ ডাকা, আহবান করা। ইসলামের দাওয়াতের সারকথা হচ্ছে, মানুষকে দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির দিকে আহবান করা।
ইসলামের আবির্ভাব শুধু ব্যক্তির কল্যাণের জন্য নয়; সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য ইসলাম। আর ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের সৌভাগ্য দুটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল : সালাহ ও ইসলাহ। অর্থাৎ নিজে সংশোধন হওয়া এবং অন্যকে সংশোধন করা। দাওয়াতের কাজ ছাড়া যা কখনো সম্ভব নয়।
দাওয়াতি কাজের গুরুত্ব ও ফযীলত এত অধিক, যা কোনো মানুষ বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনুধাবন করতে পারে না। পবিত্র কালামের অসংখ্য আয়াত যার উজ্জ্বল সাক্ষী। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۰۴﴾
আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম।
(সুরা আল ইমরান ১০৪)
★আহকামুল কুরআন লিল জাচ্ছাছ গ্রন্থে এই আয়াতের আলোকে দাওয়াতের কাজকে ফরজে কিফায়াহ বলা আখ্যায়িত করা হয়েছে
,
‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি আহবান করেছে, সৎ কাজ করেছে এবং বলেছে, আমি অনুগতদের একজন?’ (সূরা হামীম আস সাজদাহ : ৩৩)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক লোক জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল, কোন লোক সবচেয়ে বেশী ভাল? তিনি বললেনঃ সবচেয়ে ভাল লোক হল যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, সৎকাজে আদেশ দেয় ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখে। [মুসনাদে আহমাদঃ ৬/৪৩১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে যে কেউ কোন খারাপ কাজ দেখবে, সে যেন তা হাত দ্বারা প্রতিহত করে, তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে মুখ দ্বারা প্রতিহত করবে, আর যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করবে। এটাই ঈমানের সবচেয়ে দুর্বল স্তর”। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘এর পরে সরিষা পরিমাণ ঈমানও বাকী নেই’। [মুসলিমঃ ৪৯, আবু দাউদঃ ১১৪০]
অন্য এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাতে আমার জীবন তার শপথ করে বলছি, অবশ্যই তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। নতুবা অচিরেই আল্লাহ তোমাদের উপর তার পক্ষ থেকে শাস্তি নাযিল করবেন। তারপর তোমরা অবশ্যই তার কাছে দোআ করবে, কিন্তু তোমাদের দোআ কবুল করা হবে না। [তিরমিযীঃ ২১৬৯, মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৩৯১]