আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
433 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
আস্সালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ

১. স্বামীর মৃত্যুর সাথে সাথে কি শ্বশুড় না মাহরাম হয়ে যান?

২. কোন ইয়াতিম নারী যদি বেপর্দা হোন তবে তার কবরে থাকা বাবা দাইয়্যুস সাব্যস্ত হোন৷ নারীর যদি পরবর্তীতে বিয়ে হয়, তখনও কি তার কবরে থাকা বাবা দাইয়্যুস সাব্যস্ত হতে থাকবেন যতদিন ঐ নারী বেপর্দা থাকবেন?

৩. বেপর্দা অবিবাহিতা নারীর জন্য তার বড় ভাই দাইয়্যুস সাব্যস্ত হবে? যদি তার বাবা নারীর দায়ের আগেই মারা যান এবং নারীকে কিছুদিন তার ভাইয়ের অভিভাবকত্বে থাকতে হয় বিয়ের আগে?

৪. দাইয়্যুসের ক্ষেত্রে কি শুধু বড় ভাই দাইয়্যুস হবেন? নাকি কোন নারীর একাধিক বড় ভাই থাকলে সবাই দাইয়ুস সাব্যস্ত হবেন? ছোট ভাই দাইয়ুস হবে যিনি মহিলার চেয়ে বয়সে ছোট?

৫. নারী তার বয়সের চেয়ে ছোট ভাইয়ের অভিভাবকত্বে থাকলে উক্ত ছোট ভাইকে তার অভিভাবক সাব্যস্ত করা হবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/6996 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, দাইয়ুস সে ব্যক্তিকেই বলা হয়, যে তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না।

অর্থাৎ- যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস বলা হয়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়”[ মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯ ]

কোরআনে আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ

তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’।(সূরা আত-তাহরীম:৬)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন :

দাইউস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাঃ)! দাইউস কে? উত্তরে রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার পরিবারে আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোন তৎপরতা অবলম্বন করে না বরং উপেক্ষা করে চলে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, ‘দাইউস হল সে, যে তার পরিবারে বেহায়পনার বাস্তবায়নে সন্তষ্ট ও পরিতুষ্ট।’ (মুসনাদে আহমদ)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্রনেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে দায়িত্বশীল আর তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পুরুষ লোক তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন মহিলা তার স্বামীর ঘরের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীলা, তাকে সেটার পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পরিচারক তার মালিকের সম্পদের সংরক্ষক, আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এক কথায় তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে”।[ বুখারী : ৭১৩৮; মুসলিম: ১৭০৫ ]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.জ্বী না স্বামীর মৃত্যুর পরও শশুর মাহরাম থাকবেন। স্বামীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে তার মৃত্যুর পরও শশুরের সাথে কোন অবস্থাতেই বৈবাবিক সম্পর্কে জড়ানো জায়েয নেই।

২.যদি কোন ইয়াতিম নারীর বাবা মৃত্যর পূর্বে তার মেয়েকে পর্দায় রাখার চেষ্টা করে থাকে তাহলে তার মৃত্যুর পরে মেয়ের বেপর্দার কারণে তিনি দাইয়্যুস সাব্যস্ত হবেন না। কিন্তু তিনি যদি তার ইন্তেকালের পূর্বে উক্ত মেয়েকে বেপর্দায় রাখে,তার পর্দার ব্যাপারে কোর গুরুত্ব না দেন তাহলে তার মৃত্যুর আগে ও পরে ঐ মেয়ের বেপর্দার গুনাহ তার নিজেরও হবে এবং তার বাবারও হবে।

৩.মেয়ের ভরণ পোষনের দায়িত্ব যার উপর থাকবে তিনিই তাকে পর্দায় রাখার ব্যাপারে দায়িত্বশীল। সুতরাং আপনার বাবার ইন্তেকালের পর আপনার বিয়ের পূর্বে বড় ভাই আপনার অবিভাবক।

,৫.বড় থেকে ছোট সিরিয়ালি সব ভাইয়েরা অবিভাবক হিসেবে গন্য হবে। যদি বড় ভাই আপনার ভরণ পোষনের দায়িত্ব বহন করেন তাহলে তিনিই আপনার অবিভাবক। বোনের পর্দার ক্ষেত্রে সব ভাইদের গুরুত্ব দিতে হবে। তবে বিশেষত দায়িত্বশীল বড় ভাই এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 218 views
...