আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (87 points)
আমি অনেক আগে থেকেই রোজা রাখতাম নামাজ মাঝে মাঝে পড়তাম রমজান এ তারাবি ও আদায় করতাম মাঝে মাঝে নামাজ এর দাগ ও হত আবার চলে যেত ২০১৯ সাল এর রমজান পর থেকে আমি মোটামোটি নামাজ পড়তাম ছাড়তাম পড়তাম ছাড়তাম এরকম হত কিন্তু ২০ সাল এর রমজান মাস এ আমার হেদায়েত আসে বলে মনে করি। কেননা তখন আমি অনেক ব্যাপারে জানতে পারি অনেক চিন্তা চেতনা তে পরিবর্তন আসে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল নামাজ কখনউ না ছেড়ে দেওয়া এবং তা সফল ভাবেই আলহামদুলিল্লাহ আগাচ্ছিল। এছাড়াও ইসলামিক আলোচনা শোনার আগ্রহ ছোটবেলা থেকে থাকলেও তখন তা আরো বেড়ে যায়। ফরয এর পাশাপাশি সুন্নাহ পালনের চেষ্টা, গুনাহ থেকে সর্বাত্মক বেচে থাকার চেষ্টাও অব্যাহত ছিল। নিয়মিত রাত এ সুরাহ মুল্ক তিলাওাত ও চলত। কিন্তু কিছু কিছু সমস্যা থেকে নিস্তার পাইনি যা আমাকে আজ এখানে নিয়ে এসেছে। যেমন অলসতা, পড়াশুনায় অমনযোগীতা, বদমেজাজ , অতিরিক্ত রাগ, পিতা মাতার সাথে তর্ক এবং কর্কশ ভাষায় কথা বলা ইত্যাদি। এছাড়া আরেকটা বড় সমস্যা ছিল যেটার জন্য অনেক রোজা আমি নষ্ট করেছি এবং সেই সমস্যা থেকে আজও নিস্তার পাইনি। উল্লেখ্য যে আমি অই রোজায় গান শোনা একদম ছেড়ে দিয়েছিলাম সেটা হারাম যানার পর থেকে এমনকি টিভি দেখা, অপ্রয়োজনীয় কোন কিছু দেখা থেকেও বিরত থাকতাম । এছাড়া নন মাহ্রাম এর দিকে তাকানো থেকে বিরত থাকতাম। তখন ইবাদাত করে অনেক তৃপ্ত হতাম। সময় নিয়ে ধৈর্য্য নিয়ে সালাত আদায় করে শান্তি পেতাম, কিভাবে ইমান বাড়ানো যায় এটা তালাশ করতাম আর নিজের উন্নতি এর ব্যাপারে অনেক আশাবাদী ছিলাম, আল্লাহ এর কাছে অনেক দুয়া ও করতাম। সব ই ঠিক ছিল। যদিও ভাবতাম আরো উন্নতি দরকার। আমি একটা গুনাহ বারবার ই করতাম। আর তাওবা ও করতাম। দুই মাশ পর এমন হল যে অই গুনাহ এর কারণে আমি হতাশ হতাম। এরপর গান শুনতাম এই ভেবে যে গুনাহ করছি ই যেহেতু আরও করি। কিন্তু নিজের ক্ষতি হচ্ছে এটাও বুঝতাম। এভাবেই এগুতে থাকল। তাওবা করতাম কিন্তু ধরে রাখতে পারতাম না আবার গুনাহ করতাম। আর ঐ গুনাহ এর কারণে আরো গুনাহ সৃষ্টি হত। এক পর্যায়ে নামাজ এর মান কমে যেতে থাকল যাকে বলে কোনরকম ইমান ধরে রাখার জন্য ( তখন এটা শুনেছিলাম যে নামাজ ছেড়ে দিলে কাফির হয়ে যায় প্রায়)। যখন ই গুনাহ হত হতাশ হতাম সব নষ্ট হয়ে যেত নামাজ এ মন গুরুত্ব থাকত না। এদিকে পিতা মাতা ছোট বোন এবং কিছু খুবি নিকট আত্মীয় এর সাথে মাঝে মাঝে খারাপ ব্যবহার এর বিষয় টা তো আছেই। এভাবে চলতে থাকল। আর আমি ফযর কাজা করতাম খুবি। আজও মাস এ হয়ত একবার ফজর এ ওঠা হয়। এভাবে একদিন এমন হল যে তাওবা করা ছেড়ে দিলাম। খুবি দেরীতে তাওবা করতাম। অনেক হতাশা হীনমন্যতা বোধ করতাম। আমি গুনাহ টি ছাড়ার জন্য অনেক কিছু দেখেছি অনেক কিছু শুনেছি লাভ হয়নি। অনেক চেষ্টাও করেছি কিন্তু কিচুই হয় নি। এরপর এমন সময় আসল যে আমার নামাজ দীর্ঘ সময় ধরে কাজা হতে থাকল। অর্থাৎ নামাজ ছেড়ে দেওয়ার পর্যায়ের। দেখা যাচ্ছে হয়ত দুই চারদিন নামাজ পড়ছি না। এভাবে চলতে থাকল। একসময় সুরাহ মুল্ক ও বাদ দিয়ে দিলাম অজান্তেই । গুনাহ এর হতাশা এর কারণে। পরবর্তীতে অনেক চেষ্টা করলেও নিয়মিত হতে পারি নাই। সামান্য অলসতা আমাকে আটকে দিত এটা পড়া থেকে। অথচ আমি একসময় কতই না প্রচেষ্টা করতাম নফল কাজ এর। আমার আরো কিছু আমল ছিল যা আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার আমার সর্বশেষ আমল টার ক্ষেত্রেও এমন হল যে দুই একবার তা ইচ্ছা করে ছেড়ে দিয়েছি। আমি জুম্মার দিন এ ৫ টি শর্ত পূরণ করে প্রতি কদমে এক বসর নফল সালাত ও রোজার যে আমল তা প্রায় ১.৫ বছর ধরে করেছি। মাঝখানে সেটাও দুই একদিন বাদ গিয়েছে। যদিও তা পুরোপুরি বাদ যায় নি আলহামদুলিল্লাহ। অনেক দিন এর অভ্যাস হওয়ায় এখনো হাত এর মুঠোয় আছে। আল্লাহ এর ইচ্ছায় গত দুই জুমুআ তে এই আমল করতে পেরেছি। যাই হউক। আমার তাওবা এর অবস্থা এমন ছিল যে ৮/৯/১০/১৫ দিন ও হয়ে যেত করতাম না তাওবা উলটা গুনাহ করেই যেতাম। অনেক মানসিক পেরেশানি তে ছিলাম, এখনো আছি। আমি খুবি নিচে নেমে গিয়েছি। মুনাফিক বললেও ভুল হবে না ফাসিক তো বটেই। শয়তান এর হয়ত সবচেয়ে কম পরিশ্রম করতে হয় আমার জন্য। আমার মা বাবা ইসলাম মানেন নামাজ কালাম পড়েন যদিও তারা খুব শক্ত ভাবে মানেন তা না। অনেক বার ঝগড়া হয়েছে আমার দাড়ী কাটা নিয়ে এবং প্রত্যেক বার ই আমি হেরে যেতাম আর দাড়ী কেটে ফেলতে হত। আমার অবস্থান নিকট আত্মীয় দের কাছেও নিচু হতে থাকল আমার আচরণের জন্য। আমি পসিটিভ চিন্তা খুব কম ঈ করতাম। এছাড়া অলসতা করতাম সবসময়, পড়াশুনা করতাম ই না। আজ আমি শির্ক করে ফেলেছি সামান্য কারণে। আমি বলে ফেলেছি শয়তান এর অনুসারী হব আমি। মা আর বাবা কে এই কথা বলেছি। মানসিক চাপ এ আমি অনেক চিৎকার করেছি। মাথা ঘুরা এবং বুকশুরু করে দিয়েছিল। মনে হচ্ছিল হয় মরে যাব নাহলে পাগল হয়ে যাব। হয়ত পাগল হয়ে গেছি এতক্ষনে। আমি প্রায় ই কান্না করতাম লুকিয়ে মানসিক অশান্তির জন্য নিজের গুনাহ এর জন্য ব্যর্থতার জন্য ইমানহীন জীবনের জন্য। আজও করেছি কারণ মানসিক চাপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল বিভিন্ন কারণে। প্রায় ই আমি আত্মহত্যা এর কথা বলতাম চিন্তা করতাম মরতে চেতাম খুব অভাব বোধ করতাম একজন খুবি নিকট কোন মানুষকে পাওয়ার যার সাথে সব কথা বলা যায়। কিন্তু এরকম শির্ক কখনো করি নি। শির্ক এর চিন্তা আসার সময় ও আমি জানতাম আল্লাহ এর হাত থেকে বাচার উপায় নেই। আল্লাহ এ সকল শক্তির অধীকারী। আল্লাহ এর কাছে সাহাজ্য ও চেতাম কিন্তু আমি নিজেকে অনেক কলুষিত করেছি। এত নিচে নেমেছি যে এরকম শির্কি কথা বের হয়েছে আমার দ্বারা। আমি এত কিছু বললাম কারণ আমার মনে হয় আমার মত জঘন্য কেও আসে নি দুনিয়ায় যে হেদায়েত পেয়েও শুধরাল না। ফিরাউন কেও আমার নিজের চেয়ে ভাল মনে হয় এ কারনে আমার। আমি প্রায় ১ বছর এর বেশি সময় থেকে উন্নতি এর মুখ দেখি নি। না আত্মশুদ্ধি তে না পড়াশুনায় না আচার আচরণে না ইমান বৃদ্ধি তে না গুনাহ কমানো তে না ইবাদাত এ। শুধুই ব্যার্থতা হতাশা । আজ তো ইমান হারা হওয়ার এবং মানসিক চাপের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়েছি। আমার কি বাচার উপায় আছে?? আমার কি কোন উপায় আছে হেদায়েত পাওয়ার ?? আমার কি উপায় আছে যেসব আদর্শদের কথা শুনেছি বা জেনেছি তাদের মত হওয়ার?? আমার অন্তর খুবি নিকৃষ্ট। মোহর দিয়ে লাগানো হয়ত। আমার কি কোন আশা আছে?? সব কিছু বললাম যাতে বুঝতে পারেন। আমাকে বিস্তারিত জানাবেন সমাধান থাকলে।যে গুনাহ আমাকে এত নিচে নামিয়েছে সেটা হল হস্তমৈথুন অনেক চেষ্টা করেও সফল হই নি। মুমিন হতে পারি নি। আশা ছিল উন্নতি এর হচ্ছে অবনতি। জানি না কোন ভুল এর কারণে এত সমস্যা তে পরেছি, মানসিক চাপ এ পাগল হয়ে যাচ্ছি । আমি এখনো জানি আল্লাহ এর গুনাবলির ব্যাপারে তার ক্ষমতা এর ব্যাপারে কিন্তু কোন চেতনা নেই। আমি জাহান্নাম সম্পর্কে জানি কিন্তু কোন অনুভূতি নেই। এখন তো জান্নাত এর আশাও হয় না মন এ, কল্ব এতটাই নিচে নেমেছে।

জাজাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/11832 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।(সূরা আলে ইমরান-৩১)

আল্লাহ বলছেন,যে উনাকে পেতে হলে,উনাকে কেউ মহব্বত করলে,রাসূল সাঃ এর অনুসরণ করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাঃ কে আল্লাহ তা'আলা ৪ টি বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন।এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।(সূরা-জুমুআহ-২)

রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ৪ টি দায়িত্বের একটি দায়িত্ব হল,আত্মসুদ্ধি।এই আত্মসুদ্ধির অপর নাম তাসাউফ। তাসাউফ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1037

সুতরাং তাসাউফ তথা কোনো হক্কানী,রব্বানী আলেমের সংস্পর্শ দ্বারাই আল্লাহর সঠিক ও যথার্থ পরিচয় লাভ করা সম্ভব হবে।এবং পুরোপুরি রাসূলের অনুসরণ করা এবং রাসূল সাঃ এর পবিত্র সুন্নতের অনুসরণ করাও সম্ভবপর হবে।

আল্লাহর মহব্বত লাভের জন্য সর্বদা নিম্নোক্ত দু'আ করবেন।
اللَّهُمَّ أرْزُقْنِي حُبَّكَ وَ حُبَّ منْ يَنْفَعُنِي حُبُّه عِندَكَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মারজুকনি হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মাঁইয়ানফানি হুব্বুহু ইংদাকা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনার ভালোবাসা দান করুন এবং যার ভালোবাসা আপনার কাছে আমার জন্য উপকারী হয়, তার ভালোবাসাও দান করুন।’
উপকার : রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় এই দোয়া করতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৯১)

আপনার প্রতি বিশেষ নসিহা হল,
আপনার জন্য উচিৎ,অতি দ্রুত দ্বীনদ্বার কোনো মানুষের সংস্পর্শে যাওয়া। যেহেতু মহিলাদের জন্য উচিৎ বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়া,তাই আপনি অবিবাহিত হলে, দ্বীনদ্বার কোনো পাত্র দেখে বিয়ে করে নিবেন। আর বিবাহিত হলে,স্বামীকে কোনো হক্বানি রাব্বানি দ্বীনদার বুজুর্গের নিকট যাওয়ার পরামর্শ দিবেন।জাযাকুমুল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...