بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/16681/ নং ফাতওয়াতে আমরা
উল্লেখ করেছি যে, বিবাহের পূর্বে পাত্রীকে পাত্র আংটি পড়াতে পারবেনা।
কারন এতে পর্দার খেলাফ হয়। এই ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। তবে যদি পাত্র পক্ষের কোনো
মহিলা পাত্রিকে আংটি পড়ায়,সেক্ষেত্রে সেটি জায়েজ আছে কিনা,এই ব্যপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেছেন
যে, এর দ্বারা বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করা হয়,
তাই তা জায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه
رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
قَالَ:لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لَا تَشَبَّهُوا بِالْيَهُودِ
وَلَا بِالنَّصَارٰى فَإِنَّ تَسْلِيمَ الْيَهُودِ الْإِشَارَةُ بِالْأَصَابِعِ
وَتَسْلِيمَ النَّصَارَى الْإِشَارَةُ بِالْأَكُفِّ. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ
আমর ইবনু শু‘আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা
করেন যে, রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছাড়া অন্য জাতির সাথে সাদৃশ্য
করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তোমরা ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের সাথে সাদৃশ্য করো না।
কেননা ইয়াহূদীরা অঙ্গুলির ইশারায় সালাম দেয়, আর খ্রিষ্টানরা হাতের
তালু দ্বারা সালাম করে।
(হাদীসটির হুকুম হাসান : তিরমিযী ২৬৯৫,
সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২১৯৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৯৫৬৫,
সহীহুল জামি‘ ৫৪৩৪, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৭৩৮০,
ইরওয়া ১২৭০, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৭২৩।)
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ : " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ "
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে,
সে তাদেরই অন্তরভুক্ত (হয়ে যাবে)।
(হাদিস টির হুকুম হাসান : আবূ দাঊদ ৪০৩১,
মুসনাদে আহমাদে এরূপ শব্দে হাদীসটি নেই; আল জামি‘উস্
সগীর ১১০৯৪, সহীহুল জামি‘ ৬১৪৯, ইরওয়া ২৬৯১)
কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে পাত্র পক্ষের কোনো মহিলা সদস্যের
মাধ্যমে আংটি পড়ানো জায়েজ আছে।
★বিবাহিচ্ছুক পাত্রের জন্য
পাত্রীর শুধু চেহারা এবং দু’ হাত কব্জি পর্যন্ত ও দু’ পা টাখনুগিরা পর্যন্ত দেখা জায়েয।
এ ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ, এমনকি হাতের কব্জি থেকে উপরের অংশ এবং পায়ের গিরার উপরের অংশ দেখাও
নাজায়েয। আর পাত্রীর হাত বা কোনো অঙ্গ স্পর্শ করাও জায়েয নয়। তাই পাত্রের জন্য পাত্রীকে
আংটি পরিয়ে দেওয়া জায়েয হবে না। আংটি পরিয়ে দিতে চাইলে পাত্র পক্ষের মেয়েদের কেউ গিয়ে
পরিয়ে দিতে পারে। অথবা পাশে পাত্রীর মাহরাম যারা থাকে তাদের কাছে দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
(তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩০১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭০; ইলাউস সুনান ১৭/৩৮০)
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 48502 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে বিবাহ পূর্ব
পাত্রিকে আংটি পড়ানো এটি স্রেফ রুসম প্রথা। শরীয়তের সাথে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 15143 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে এটি গ্রহন করা
জায়েজ আছে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
১. প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তথা বিবাহের পূর্বে পাত্রের মা পাত্রীর
হাতে আংটি পড়িয়ে আসতে পারবে। কিন্তু যেহেতু এটি কেবল একটি রুসম বা প্রথা বিধায় তা জায়েয
হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে,তাই সতর্কতামূলক বিবাহ
পূর্ব এমন কাজ না করাই ভালো হবে।
২. পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি
মূলনীতি রয়েছে,
(১)খালওয়াত(নির্জনে একত্রিত) হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা
করা যাবে না
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে। যদি কামভাব জাগ্রত
হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু
করে নেয়, তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হিজাব তথা
কব্জি পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন উল্লেখিত সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী
বিয়ের পূর্বে পরস্পর আলোচনা, দেখা সাক্ষাৎ বা ফোনে কথা বলা বা
মেইল করতে পারবে অন্যথায় তা জায়েয হবে না ।