এটি হিন্দুয়ানী পদ্ধতি। হিন্দুরা ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করার পর তিনদিন পর্যন্ত আগুনে জ্বলতে দেয়। তারপর ৪র্থ দিন মৃতের বাড়িতে খাওয়া দাওয়ার অনুষ্ঠান করে, আবার ৪০দিনের দিনের দিন উক্ত মৃতের হাড্ডিগুলো নিয়ে নদীতে ফেলে দিয়ে আরেকটি খাওয়া দাওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, আর বৎসরে উক্ত মৃত্যু দিবসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
খলীফায়ে রাশেদীনসহ কোন সাহাবী নবীজী সাঃ এর জন্য উপরোক্ত রুসুমগুলো পালন করেননি। কোন মুহাদ্দিস, কোন মুফাসসির, কোন তাবেয়ী, কোন তাবে তাবেয়ী, কোন মুজতাহিদ ইমামগণ উক্ত রুসুম পালন করেননি।
কুরআন ও হাদীস বা ফিক্বহের কিতাবে এরকম রুসুমের কথা উল্লেখ নেই। তাই এসব পালন করা বিদআত।
কেউ মারা গেলে ইসলামে তিন দিনের বেশি শোক পালনের অনুমতি নেই। শুধু কোনো মেয়ের স্বামী মারা গেলে তার স্ত্রীর জন্য চার মাস দশ দিন পর্যন্ত শোক পালন করার অনুমতি রয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন
لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ تُحِدُّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
আল্লাহ এবং শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনে এমন কোনো মহিলার জন্য বৈধ নয় কারও মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি শোক পালন করা। তবে শুধু স্বামী ব্যতিক্রম। স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে পারবে। [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২৮১]
তিন দিনা, চার দিনা, ত্রিশা ও চল্লিশার মতো তারিখ নির্ধারণ না করে মৃত ব্যক্তির ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে গরিব-মিসকিনদেরকে খানা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা যায়।
ফাতহুল কাদীর ২/১০২; ইমদাদুল আহকাম ১/২০৬
মৃত ব্যক্তির জন্য দিন-তারিখ নির্দিষ্ট করে দাওয়াতের আয়োজন করা ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা বিদআত। রাসূল (সা.) এর জামানায় কিংবা সাহাবা-তাবেয়ীনদের জামানায় এর কোনো নজীর পাওয়া যায় না। আর হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
‘যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে তার কর্ম প্রত্যাখ্যাত হবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭]
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ ح و حَدَّثَنَا شُجَاعُ بْنُ مَخْلَدٍ أَبُو الْفَضْلِ قَالَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ إِسْمَعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَجَلِيِّ قَالَ كُنَّا نَرَى الِاجْتِمَاعَ إِلَى أَهْلِ الْمَيِّتِ وَصَنْعَةَ الطَّعَامِ مِنْ النِّيَاحَةِ.
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ আল-বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মৃতের বাড়িতে ভীড় জমানো ও খাদ্য প্রস্তুত করা বিলাপের অন্তর্ভুক্ত মনে করতাম।
(ইবনে মাজাহ ১৬১২)
وفيه ايضا- ومنها التزام الكيفيات والهيئات المعينة كالذكر بهيئة الإجتماع على صوت واحد واتخاذ يوم ولادة النبى صلى الله عليه وسلم عيدا، وما اشبه ذلك.. الخ (الإعتصام-1/29)
যার সারমর্ম হলো নির্দিষ্ট ছুরত এবং নির্দিষ্ট এমন কাজ করা,যা শরীয়ত করেনি,এটা বাতিল হবে।
আরো জানুনঃ
★তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ৫ম দিনে ঈদালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে গরিব মিসকিনকে খাওয়ানো জায়েজ আছে।
বযদি মনে হয় এই সুন্নাত পড়তে যেয়ে ১ রাকাত নামাজ ছুটে যেতে পারে তাহলেও সুন্নতের নিয়ত করা যাবে।
সোজা হয়ে দাড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুর তাকবির বলে (রুকুর তাকবির বলা সুন্নাত। এটি ফরজ বা ওয়াজিব নয়।) রুকুতে গিয়ে ইমামকে এক সেকেন্ড সমপরিমাণ সময় পেলেও উক্ত রাকাত পেয়েছে বলে তাকে গন্য করা হবে।