জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَن أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِه فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِه وَذٰلِكَ أَضْعَفُ الْإِيْمَانِ.
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন শারী‘আত বিরোধী কার্যকলাপ হতে দেখে, সেটাকে যেন নিজ হাতে পরিবর্তন করে দেয়। যদি নিজ হাতে সেগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখে নিষেধ করবে। আর যদি মুখে নিষেধ করারও সাধ্য না থাকে, তাহলে অন্তরে সেটা ঘৃণা করবে। এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।
(সহীহ : মুসলিম ৭৮-(৪৯), আবূ দাঊদ ১১৪০, তিরমিযী ২১৭২ ইবনু মাজাহ ৪০১৩, নাসায়ী ৫০০৮, সহীহ আত্ তারগীব ২৩০২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ৫৬৪৯, আহমাদ ১১১৫০, মুসনাদ আবূ ইয়া‘লা ১২০৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩০৭, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ১১৭৩৯, হিলইয়াতুল আওলিয়া ১০/২৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৪২৩,মিশকাত ৫১৩৭।)
(وَذٰلِكَ أَضْعَف الْإِيمَان) ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ মর্যাদা এবং সাওয়াবের দিক থেকে এর পরিমাণ কম। ইমাম মানবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ أَضْعَف الْإِيمَان অর্থ হলো أَضْعَف خصال الْإِيمَان তথা দুর্বল বৈশিষ্ট্যের ঈমান। ঈমান দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইসলাম বা তার প্রভাব অথবা তার ফলাফল।
কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ ধরনের লোক হলো দুর্বল ঈমানদার, কেননা যদি সে শক্তিশালী (তেজোদীপ্ত) ঈমানের লোক হত তাহলে এটুকুতেই থেমে যেত না। কারণ হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, أَفْضَلُ الْجِهَادِ كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ ‘‘সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের নিকট সত্য কথা বলা।’’
ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) শারহু মুসলিমে বলেনঃ ভালো কাজের আদেশ করা আর মন্দ কাজের নিষেধ করার হুকুম হলো ফরযে কিফায়াহ্। কেউ করলে বাকীদের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। আর কেউ না করলে সবাই গুনাহগার হয়। পক্ষান্তরে ‘উলামাগণ বলেছেন, ঐ ব্যক্তির ওপর থেকে সৎকাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধের দায়িত্ব রহিত হবে না যার ওপর শারী‘আতের বিধান অর্পিত হয়েছে। এটা তার জন্য অত্যাবশ্যক। অন্যথায় সে গুনাহগার হবে। (‘আওনূল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৩২; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২১৭২)
(فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه...) এ প্রসঙ্গে কতিপয় ‘উলামা মতামত ব্যক্ত করেছেন যে, উল্লেখিত হাদীসের তিনটি আদেশ তিন শ্রেণীর ব্যক্তিদের জন্য। প্রথম আদেশ আমীরের জন্য। দ্বিতীয় আদেশ ‘আলিমদের জন্য এবং তৃতীয় আদেশ সাধারণ সকল মুসলিমদের জন্য। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
আবু দাউদ শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ আওনুল মাবুদ গ্রন্থে আছেঃ
(فإن لم يستطع) أي: الإنكار بلسانه (فبقلبه) أي: فينكر بقلبه.
(فبقلبه) بأن لا يرضى به وينكر في باطنه على متعاطيه فيكون تغييرا معنويا إذ ليس في وسعه إلا هذا القدر من التغيير. وقيل: التقدير فلينكره بقلبه لأن التغيير لا يتصور بالقلب فيكون التركيب من باب علفتها تبنا وماء باردا. (وذلك) أي: الإنكار بالقلب. (أضعف الإيمان) قال النووي: أي: أقله ثمرة
সারমর্মঃ-
কেহ যদি মৌখিকভাবে শক্তিশালী না হয়,তাহলে কলব দিয়ে ঘৃণা করবে,এই পদ্ধতিতে যে তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেনা,মনে মনে ঘৃণা করবে।
এটি মা'নার দিক দিয়ে পরিবর্তন,কেননা তার সামর্থে এই পরিমান শক্তি ব্যাতিত আর কিছুই নেই।
হাশিয়াতুস সানাদী আলান নাসায়ীতে আছেঃ-
( فبقلبه ) أي فليكرهه بقلبه وليس المراد فليغيره بلسانه وقلبه إذ اللسان والقلب لا يصلحان للتغيير عادة سيما بالنظر إلى غيره المستطيع
সারমর্মঃ-
মন দিয়ে অপছন্দ করবে,এখানে জবান দিয়ে পরিবর্তন করা উদ্দেশ্য নয়।
কেননা আভ্যস গত দিক থেকে কলব ও জবান কোনো কিছু পরিবর্তন করার শক্তি রাখেনা।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
হ্যাঁ ঈমান থাকবে।
তবে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করা সর্বনিম্ম পর্যায়ের হওয়ায় উল্লেখিত ছুরতে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করতেই হবে।
নতুবা ঈমানের চাহিদা সে পূরন না করার কারনে তার ঈমান অনেকটা দূর্বল বলে অভহিত হবে।
,
(০২)
তার ঈমান থাকে।
উল্লেখিত তথ্য সঠিক নয়।
,
(০৩)
তার ঈমান থাকবে।
ঈমান ভেঙ্গে যাবেনা।
তবে সে ব্যাক্তি তার শক্তি থাকলে হাদীসে বর্ণিত তিনটি স্টেপের কোনো স্টেপকে নিজ সামর্থ অনুযায়ী পালন করবে ।
(০৪)
শক্তি রাখলে হাত দ্বারা প্রতিহত করবে।
অন্যথায় মুখে বলে বা তার অভিভাবকদের বলে এহেন কাজ থেকে বিরত করানোর চেষ্টা করবে।
,
এটিরও শক্তি না রাখলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করবে।
,
প্রতিবাদ না করলে ঈমান ভেঙ্গে যাবে,এমনটি বলা যাবেনা।
তবে সেটি অনেক অনেক নিম্নমানের স্তর হবে।