আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
456 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (15 points)
মীর মোশাররফ হোসেন  এর লিখা বিষাদ সিন্ধু বইটি পড়া যাবে? শুনেছি উনি আকীদাগত ভাবে ভুল ছিলেন.......

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 
,
প্রকৃতপক্ষে মীর মোশাররফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধু একটি কাল্পনিক উপন্যাস বা উপাখ্যান। এতে শুধু কয়েকটি ঐতিহাসিক নাম ব্যবহার করা হয়েছে এবং ইমাম হাসানকে বিষ প্রয়োগে হত্যা ও কাবাবালায় ইমাম হুসাইনের সপরিবারে শাহাদাতবরণের সত্য কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঐতিহাসিকভাবে সত্য আর কোন ঘটনাই বর্ণিত হয়নি। তাই এটা পড়ার বৈধতা কোনোভাবেই দেওয়া যায়না।

তবে কোনো আলেম জানার জন্য বা অন্যের ভুল  শোধরানোর নিয়তে  এটা পড়তে পারেন।
,
বিষাদ সিন্ধুর সাহিত্যমান নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। মীর মোশাররফ তাঁর সহজাত প্রতিভার মাধ্যমে এর ঘটনাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি যেভাবে ঘটনার পট সাজিয়েছেন এবং ধীরে ধীরে মানুষের মনে পরবর্তী ঘটনা জানার ব্যাপারে আগ্রহ সৃষ্টি করেছেন,যেভাবে ঘটনাকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করেছেন তা সত্যিই অনবদ্য। পাঠকদের মনে তিনি ঔৎসুক্য সৃষ্টি করেছেন,তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়িয়ে দিয়েছেন,কারবালার ঘটনা বর্ণনায় পাঠকদের কাঁদিয়েছেন খুব সাবলীলভাবে। তাই উপন্যাসের সাহিত্যমান নিয়ে লেখার কিছু নেই।
কিন্তু যে বিষয়টি আমাদের আহত করে এবং যে দিকটিকে এতকাল উপেক্ষা করা হয়েছে তা হল এ উপন্যাসের চরিত্র ও ঘটনা নির্বাচন। তিনি এমন দু’জন মহান ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের জীবনের মর্মান্তিক ঘটনাকে উপন্যাসের উপজীব্য করেছেন যে,মনে হয় তিনি জানতেন এ দেশের পাঠকমাত্রই তাঁর এ গ্রন্থ লুফে নেবে। আপত্তি থাকত না যদি তিনি সত্য ঘটনাকে আশ্রয় করে তা লিখতেন। কিন্তু তিনি এ উপন্যাস সৃষ্টির মাধ্যমে ইসলামের মহান ব্যক্তিত্ব ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের চরিত্রে কালিমা লেপন করেছেন। ইমাম হুসাইনের মহান আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করেছেন। সে কারণে আমার আলোচনা এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই।

ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন কেবল মুসলমানদের আদর্শ নন;বরং তাঁরা মানব জাতির জন্য আদর্শ। অমুসলিম বিখ্যাত ব্যক্তিগণ,যেমন টমাস কার্লাইল,মহাত্মা গান্ধী প্রমুখ ইমাম হুসাইন থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়ার কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁদের ‘বেহেশতের যুবকদের নেতা’ বলেছেন। তাই আমরা এটা কখনই সমর্থন করতে পারি না যে,তাঁদের নিয়ে এমন কিছু লেখা হোক যেটা তাঁদের মর্যাদার পরিপন্থী।
,
লেখকদেরও নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন রয়েছে। দায়বদ্ধতার ব্যাপার রয়েছে। ইচ্ছা করলেই যে কোন বিষয় সম্পর্কে বা যে কোন ব্যক্তি সম্পর্কে যা খুশি লেখা যায় না। আমরা যদি আমাদের দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা লিখতে চাই তবে এ মহান যুদ্ধের প্রতি সম্মান রেখে যা সত্য তা-ই লিখতে হবে।কোন কল্পকাহিনী নয়। কোন মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের সম্মানহানী করে লেখা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রে তো নয়ই,এমনকি সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও মিথ্যা বলার মাধ্যমে তার ব্যক্তিত্বকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। আবার কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে কিনা সেটি বিবেচনার ব্যাপার রয়েছে। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ইসলামের পুনরুজ্জীবন দানের মহা ঘটনাকে মীর মোশাররফ হোসেন এমন এক বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত করেছেন যা ইসলামের এ মহান আন্দোলনের মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।
,
★তাই এটা পড়ার বৈধতা কোনোভাবেই দেওয়া যায়না।
তবে কোনো আলেম জানার জন্য বা অন্যের ভুল  শোধরানোর নিয়তে  এটা পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...