সাংসারিক সমস্যা

Question

(একজন বোনের হয়ে প্রশ্নটা করছি)

আসসালামু আলাইকুম,
আমার বিবাহিত জীবনের ৪বছর চলছে। বিয়ের পর থেকেই দেখছি আমার হাজবেন্ড বিভিন্ন হারামে লিপ্ত।  বিয়ের মাস কয়েক পরই আমার দ্বীনে ফেরা আলহামদুলিল্লাহ। আমি পরিপূর্ণ ভাবে ইসলাম মেইনটেইন করার চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ। ওকে সবকিছু বুঝানোর পরেও হারাম ছাড়তে চায়না। এমন অনেক কাজ করে যেগুলো কুরআনে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে এবং অনেক কিছু আছে যেগুলো ঈমান ভঙ্গের অন্যতম কারণ। কথায় কথায় গালিগালাজ ওর স্বভাব (এমনকি ওর মাকেও)। আর প্রায়শই তুচ্ছ বিষয়ে গায়ে হাত তুলে। স্বামীর/বাবার দায়িত্ব পালন করে না। গত সাড়ে তিন বছরে অনেক চেষ্টা করছি ওকে দ্বীনের পথে আনার কিন্তু ও নিজের যুক্তি দিয়ে কুরআন ও সুন্নাহকে বিচার করতে চায়।
যতক্ষণ ওর কথামতো সব করি ততক্ষণ একটু ভালো থাকে কিন্তু ইসলাম বহির্ভূত কাজে সায় না দিলে / বাঁধা দিলেই ওর মাথা গরম হয়ে যায়। তবুও চেষ্টা করেছি সংসার টিকানোর কিন্তু এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে আর পারছি না। এদিকে ওর ফ্যামিলি পুরোপুরি আধুনিক আর আমার ফ্যামিলি মোটামুটি ধার্মিক (বাবা ছাড়াঃ তিনি পীর-মাজার নিয়ে ব্যস্ত। ওনার পীর নাকি আসমান-জমিনে যা আছে সব দেখতে পায় ও সব গায়েবী খবর জানে)
তো এখন আমি চাইছি ত্বলাক্ব নিয়ে নিতে চাইছি কিন্তু এ ব্যাপারে পরিবারের কেউই রাজি হবে না যেহেতু ওরা খুব ধনী ও ক্ষমতাশালী।
।আমার নিজের বাবা হচ্ছেন পীর-মাজারের পাগল, ভাইও নাই। আমাকে তো ওনি দেখতেই পারেন না ইসলাম মানার চেষ্টা করছি তাই। দ্বীনের প্রেক্টিস নাই ঘরে
আর বাবুর আব্বু যে ইসলামে সরাসরি হারাম কাজগুলো আমার সাথে করতে চায় ও করে।
আমি যে এগুলো আর নিতে পারছি না। কাউকে বলার মতো রুচিও আমার নাই
একটা বলি শুধু, আমি আমার হায়েযের দিনগুলোতেও ওর থেকে রেহাই পাইনা ।
সিজারের পর এত্ত খারাপ অবস্থা হয়েছিলো আমার যে সেলাইতে প্রব্লেম হয়ে গিয়েছিলো ওর এই আচরণের জন্্যএখনো আমার সেলাইতে ব্যথা নিয়েই চলতে হয়। ওর জন্য বাবুকে আমি এক বছরের মাথায় দুধ ছাড়িয়ে দিয়েছি।

এমন অনেক নাজায়েজ কাজ ও আমার সাথে জোর করে করছে। আর যদি ওর কথামতো না করি তাহলেই মারধোর শুরু করে।

প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে আমি ওর থেকে নিজেকে ও নিজের বেবিকে মুক্ত করে নিতে পারবো? ইসলামি শারীয়াহ কী বলে? যেহেতু মিমাংসার কোন পথ নাই

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1722 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
আপনি সরাসরি হারাম কাজে তার সঙ্গ দিবেন না, এজন্য যদি সে নারাজ হয়, বা নারাজ হয়ে প্রহার করে করুক,তারপরও আপনি তাকে সঙ্গ দিবেন না।যদি সে জোর করে সঙ্গ নিয়ে নেয়, তাহলে আপনি কোর্টে তালাকের আবেদন করবেন।এটাই আপনার ঈমান আমলের জন্য নিরাপদ।আল্লাহ আপনার ব্যবস্থা করে দিবেন।