আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
227 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)
প্রশ্ন ১
আমি একটি আবাসিক এলাকায় থাকি।এখানে মসজিদ আছে।করোনা পরিস্থিতিতে মসজিদে কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে,যার কারনে একজন মুসল্লি যখন জামাতে নামাজ পড়ে তখন সাধারণত -
১)তার সামনে এক কাতার গ্যাপ থাকে
২)পিছনে এক কাতার গ্যাপ থাকে
৩)ডানে কমপক্ষে একজন দাড়ানোর মত গ্যাপ থাকে
৪)বামে কমপক্ষে একজন দাড়ানোর মত গ্যাপ থাকে
৫)মুখে মাস্ক থাকে
৬)পায়ের নিচে জায়নামাজ থাকে
এরপরও যদি মা করোনা সংক্রমনের অজুহাত দেখিয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করে, আমার কী মসজিদে না  যাওয়ার অনুমতি আছে?

প্রশ্ন ২
হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুলুল্লাহ সল্লল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় বৃষ্টির কারনে ঘরে নামাজ পড়তে বলা হয়েছিল।এখন যেহেতু রাস্তাঘাট উন্নত হয়েছে, আমাদের কাছে ছাতা-রেইনকোট আছে, এখন কি বৃষ্টির সময় মসজিদে না যাওয়ার অনুমতি  আছে?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনি যদি অসুস্থ না হোন, বা আপনি যদি নিশ্চিত ভাবে জানেন যে করোনায় আক্রান্ত কেউ মসজিদে আসেনা,তাহলে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আপনার জন্য বর্তমান এই পরিস্থিতিতে মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ পড়ার অনুমতি নেই। বিস্তারিত জানুনঃ 
.

(০২) মুষুলধারে বৃষ্টি হলে মসজিদে না গিয়ে বাসায় নামাজ পড়ার অনুমতি আছে।
এ সংক্রান্ত বুখারী শরীফের হাদীসঃ   
مُسَدَّدٌ قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ قَالَ أَذَّنَ ابْنُ عُمَرَ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ بِضَجْنَانَ ثُمَّ قَالَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ فَأَخْبَرَنَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ مُؤَذِّنًا يُؤَذِّنُ ثُمَّ يَقُولُ عَلَى إِثْرِهِ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ فِي اللَّيْلَةِ الْبَارِدَةِ أَوْ الْمَطِيرَةِ فِي السَّفَرِ.

৬৩২. নাফি‘ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রচন্ড এক শীতের রাতে ইবনু ‘উমার (রাযি.) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়ায্যিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর। (৬৬৬; মুসলিম ৬/৩, হাঃ ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬০৪)
.
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَذَّنَ بِالصَّلاَةِ فِي لَيْلَةٍ ذَاتِ بَرْدٍ وَرِيحٍ ثُمَّ قَالَ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ ثُمَّ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ الْمُؤَذِّنَ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةٌ ذَاتُ بَرْدٍ وَمَطَرٍ يَقُولُ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ.
৬৬৬. নাফি‘ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাযি.) একদা তীব্র শীত ও বাতাসের রাতে সালাতের আযান দিলেন। অতঃপর ঘোষণা করলেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও, অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রচন্ড শীত ও বৃষ্টির রাত হলে মুআয্যিনকে এ কথা বলার নির্দেশ দিতেন- ‘‘প্রত্যেকে নিজ নিজ আবাসস্থলে সালাত আদায় করে নাও।’’ (৬৩২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬৩৩)
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ، كَانَ يَؤُمُّ قَوْمَهُ وَهْوَ أَعْمَى، وَأَنَّهُ قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهَا تَكُونُ الظُّلْمَةُ وَالسَّيْلُ وَأَنَا رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ، فَصَلِّ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي بَيْتِي مَكَانًا أَتَّخِذُهُ مُصَلًّى، فَجَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ ". فَأَشَارَ إِلَى مَكَانٍ مِنَ الْبَيْتِ، فَصَلَّى فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.
৬৬৭. মাহমূদ ইবনু রাবী ‘আল-আনসারী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘ইত্বান ইবনু মালিক (রাযি.) তাঁর নিজ গোত্রের ইমামাত করতেন। তিনি ছিলেন অন্ধ। একদা তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কখনো কখনো ঘোর অন্ধকার ও বর্ষণ প্রবাহিত হয়ে পড়ে। অথচ আমি একজন অন্ধ ব্যক্তি। হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমার ঘরে কোন এক স্থানে সালাত আদায় করুন যে স্থানটিকে আমার সালাতের স্থান হিসেবে নির্ধারিত করবো। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে এলেন এবং বললেনঃ আমার সালাত আদায়ের জন্য কোন্ জায়গাটি তুমি ভাল মনে কর? তিনি ইঙ্গিত করে ঘরের জায়গা দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে স্থানে সালাত আদায় করলেন। (৪২৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬৩৪)

এসব হাদীসের ব্যখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন যে
لكن قاعدة حمل المطلق على المقيد تقتضي أن يختص ذلك بالمسافر مطلقا، ويلحق به من تلحقه بذلك مشقة في الحضر دون من لا تلحقه، 
যার সারমর্ম হলো মুসাফিরদের জন্য সর্বক্ষেত্রেই কঠিন বৃষ্টি হলে বাসায় নামাজ পড়ার অনুমতি রয়েছে, তবে মুকিম (যে ব্যাক্তি মুসাফির নন) এর জন্য যদি সে সময়ে মসজিদে যাওয়া কষ্টকর হয়,তবেই তার জন্য বাসায় নামাজ পড়ার অনুমতি থাকবে,মসজিদে যাওয়া কষ্টকর না হলে এই অনুমতি নেই।   
(ফাতহুল বারী, আলোচ্য হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)  
,
★★সুতরাং  যদি কোনো ব্যাক্তি মুসাফির না হয়,এবং তার কাছে ছাতা,রেইনকোট ইত্যাদি থাকে,এককথায় মসজিদে যাওয়া যদি তার জন্য কষ্টকর না হয়,তাহলে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  সেই সময়ে মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ পড়ার কোনো অনুমতি নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 1,807 views
...