উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
,
(০১) উত্তম হলো রাতের নফলগুলো শেষ করে এরপর বিতর পড়া। কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে বিতর পড়ে ফেললে এরপর কোনো নফল পড়া যাবে না। বরং বিতর নামাজের পরও নফল নামাজ পড়া জায়েজ আছে।
আবু বকর (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আম্মার বিন ইয়াসির (রা.) প্রমুখ সাহাবিদের আমল দ্বারা এমনটি প্রমাণিত। তাঁরা এশার পর বিতর পড়ে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়েছেন।
আল আওসাত, ইবনুল মুনজির : ৫/১৯৮, মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৬১৫-৪৬২১;
সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৭১; ফাতহুল বারি : ২/৫৫৪
★সুতরাং বিতির নামাজের পরেও আপনি ছলাতুল হাজত এর নামাজ পড়তে পারবেন।
তবে বিতিরের আগেই নফল পড়া যেহেতু উত্তম, তাই ছলাতুল হাজতও বিতিরের আগেই পড়া উত্তম।
,
(০২) ঈশা ছাড়াও অন্য যেকোনো সময়েও এই নামাজ পড়া যাবে। তবে নিষিদ্ধ,মাকরুহওয়াক্তে পড়া যাবেনা।
(ফজরের পর,আছরের পর,সুর্য উদিত হওয়ার সময়,সুর্য যখন সরাসরি মাথার উপরে ঢলে যায়,সুর্য যখন অস্তমিত হয়,এসব ওয়াক্তে নফল নামাজ পড়া নিষেধ।)
(০৩) এই নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট কোনো দিন বাধা নেই,যে এতো দিন এটা পড়তেই হবে।
সালাতুল হাজত একটি সাধারণ নফল নামাজ।
এটা আপনি সারাজীবন নিজের যেকোনো প্রয়োজনে ধারাবাহিক ভাবে পড়তে পারেন। এটি আদায় করার আলাদা কোনো নিয়ম নেই।
,
(০৪) ""প্রথম রা'কাতে সূরা ফাতিহা একবার,এবং আয়াতুল কুরসি তিনবার, পরবর্তী তিন রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা ইখলাছ এবং সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস একবার করে করে পড়া""
এই জাতীয় কোনো বিশেষ নিয়ম শরীয়তে নেই।
স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন।
(চার রাকাতও পড়া যাবে) নামাজ শেষে আল্লাহ তাআলার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং রাসূল ﷺ এর ওপর দরুদ পাঠ করে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবেন।
এ নামাজ সম্পর্কে এক হাদিসে এভাবে এসেছে–
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ مَنْ كَانَتْ لَهُ إِلَى اللَّهِ حَاجَةٌ أَوْ إِلَى أَحَدٍ مِنْ بَنِي آدَمَ فَلْيَتَوَضَّأْ وَلْيُحْسِنِ الْوُضُوءَ ثُمَّ لْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ لْيُثْنِ عَلَى اللَّهِ وَلْيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ ثُمَّ لْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থাৎ, আবদুল্লাহ্ ইবনু আবী আওফা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন যে, আল্লাহর কাছে বা কোন আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোন প্রয়োজন হয় তবে সে যেন অজু করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। পরে যেন দু’রাকআত নামাজ আদায় করে, এরপর যেন আল্লাহর হামদ করে ও রাসূল ﷺ-এর উপর দরূদ সালামের পর এই দোয়াটি পড়ে:
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থ- আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অতি সহিষ্ণু ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু। সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওয়াসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের বরকত, সকল নেক কাজ সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে। কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি তা যেন অপূরণ না থাকে, হে আর রাহমানুর রাহিমীন; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী ৪৭৯)
সুতরাং দোয়ার ক্ষেত্রে হাদিস শরিফে বর্ণিত উপরোক্ত দোয়াটি অন্যান্য দোয়ার সাথে নামাজের শেষে বিশেষভাবে পড়া যেতে পারে। তবে পড়তেই হবে–এমন নয়। আপনি আপনার মত করে দোয়া করলেও কোনো অসুবিধা নেই।
,
(০৫) হ্যাঁ সালাতুল হাজতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ,সহ দু'আয়ে মাছুরা পড়ার পর সূরায়ে ফুরকানের ৭৪নং আয়াত পড়তে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।