আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (6 points)
আসসালামু -আলাইকুম।
তথাকথিত একদল লোক গাদিরে খুমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক সহিহ হাদিসের দলিল দিয়ে  বলতে চায়।আল্লাহর রাসুল স. নাকি আলি রা. কে  খলিফা নিযুক্ত করে গেছেন।

কিন্তুু বাকি সাহাবীরা নাকি শলা পরামর্শ করে আবুবকর রা. কে খলিফা নিযুক্ত করেছেন, আলী রা. কে বাদ দিয়ে ।

কথাগুলোর কি কোনো ভিত্তি আছে?

আশা করছি বিস্তারিত বিষয় দলিলের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন। যেনো অপরপক্ষের যুক্তি খন্ড করা যায়।
জ্বাযাকাল্লাহ।
<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_211016_192306_059.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


গাদীরে খুমের মূল ঘটনা হল, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জ শেষে যখন মদীনা ফিরছিলেন তখন মদীনার উপকণ্ঠে গাদীরে খুম নামক স্থানে এসে যাত্রাবিরতি করেন। তখন বুরাইদা আসলামী রাঃ নামে একজন সাহাবী হযরত আলী রাঃ এর বিষয়ে কিছু অভিযোগ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পেশ করেন।
এরপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাদীরে খুমে একটি ভাষণ প্রদান করেন। যাতে তিনি তার মৃত্যু সন্নিকটে হবার ইশারা করেন এবং কুরআন ও সুন্নাহকে আকড়ে ধরার তাকীদ করেন।
সেই সাথে আহলে বাইতের সদস্যদের প্রতি ভালোবাসা মোহাব্বতের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। হযরত আলী রাঃ বিষয়ে ইরশাদ করেন যে, আমি যাদের বন্ধু, আলীও তাদের বন্ধু।
উক্ত ভাষণের মাধ্যমে আহলে বাইতের প্রতি সকলের মোহাব্বতের সম্পর্ক রাখার তাকীদ করা হয়েছে। এর দ্বারা বুরাইদা আসলামী রাঃ এর মন থেকে হযরত আলী রাঃ এর প্রতি যে ধারণা ছিল তা দূরিভূত হয়ে যায়।
উক্ত খুতবার কোথাও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর হযরত আলী রাঃ কে খলীফা নিযুক্ত করতে হবে এমন কোন কথা নেই। শুধু মোহাব্বতের তাকীদ করা হয়েছে। আর মোহাব্বত কখনোই নেতৃত্বের হকদার হবার মানদণ্ড নয়।

প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি হলোঃ-

مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سُوَيْدِ بْنِ مَنْجُوْفٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلِيًّا إِلَى خَالِدٍ لِيَقْبِضَ الْخُمُسَ وَكُنْتُ أُبْغِضُ عَلِيًّا وَقَدْ اغْتَسَلَ فَقُلْتُ لِخَالِدٍ أَلَا تَرَى إِلَى هَذَا فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ يَا بُرَيْدَةُ أَتُبْغِضُ عَلِيًّا فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ لَا تُبْغِضْهُ فَإِنَّ لَهُ فِي الْخُمُسِ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ.

বুরাইদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলী (রাঃ)-কে খুমুস (গানীমাতের এক-পঞ্চমাংশ) নিয়ে আসার জন্য খালিদ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। (রাবী বুরাইদাহ বলেন,) আমি ‘আলী (রাঃ)-এর প্রতি অসন্তুষ্ট, আর তিনি গোসলও করেছেন। (রাবী বলেন) তাই আমি খালিদ (রাঃ)-কে বললাম, আপনি কি তার দিকে দেখছেন না? এরপর আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ফিরে আসলে আমি তাঁর কাছে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন, হে বুরাইদাহ! তুমি কি ‘আলীর প্রতি অসন্তুষ্ট? আমি বললাম, জ্বী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার উপর অসন্তুষ্ট থেক না। কারণ খুমুসে তার প্রাপ্য এর চেয়েও অধিক আছে। (বুখারী ৪৩৫০.ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪০১২)

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ، أَخَبَرَنِي حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ أَقْبَلْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي حَجَّتِهِ الَّتِي حَجَّ فَنَزَلَ فِي الطَّرِيقِ فَأَمَرَ الصَّلاَةَ جَامِعَةً فَأَخَذَ بِيَدِ عَلِيٍّ فَقَالَ " أَلَسْتُ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ " . قَالُوا بَلَى . قَالَ " أَلَسْتُ أَوْلَى بِكُلِّ مُؤْمِنٍ مِنْ نَفْسِهِ " . قَالُوا بَلَى . قَالَ " فَهَذَا وَلِيُّ مَنْ أَنَا مَوْلاَهُ اللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالاَهُ اللَّهُمَّ عَادِ مَنْ عَادَاهُ " .

আল-বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জে (হজ্জ) উপস্থিত ছিলাম। তিনি পথিমধ্যে এক স্থানে অবতরণ করেন, অতঃপর সালাতের জামাআতে একত্র হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আলী -এর হাত ধরে বলেনঃ আমি কি মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের চাইতে অধিক ঘনিষ্ঠতর নই? তারা বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই। তিনি আবার বলেনঃ আমি কি প্রত্যেক মুমিনের নিকট তার নিজের চাইতে অধিক ঘনিষ্ঠতর নই? তারা বলেন, হাঁ অবশ্যই। তিনি বলেনঃ আমি যার বন্ধু আলীও তার বন্ধু। হে আল্লাহ্! যে তাকে ভালোবাসে আপনি তাকে ভালোবাসুন। হে আল্লাহ! যে তার সাথে শত্রুতা করে আপনিও তার সাথে শত্রুতা করুন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ১১৬.মুসনাদে আহমাদ ১৮০১১ তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহাহ ১৭৫০।)

★গাদীরে খুমের ঘটনাটি কেবলই আহলে বাইতের প্রতি একটি মোহাব্বতের তাগীদ ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। যা যেমন সকল সাহাবাগণ জানতেন, তেমনি আহলে বাইতের সদস্যগণও জানতেন। তাই এ বিষয়কে সামনে কেউ আনেননি।

★সুতরাং আল্লাহর রাসুল স. আলি রা. কে  খলিফা নিযুক্ত করে গেছেন।
কিন্তুু বাকি সাহাবীরা নাকি শলা পরামর্শ করে আবুবকর রা. কে খলিফা নিযুক্ত করেছেন, আলী রা. কে বাদ দিয়ে ।

কথাগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...