আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
369 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (19 points)
edited by
কিছু আলেমের কাছ থেকে শুনছি মুমিন বান্দার জান কবজে নাকি ব্যথা অনুভব হয় না। আবার কিছু হাদিসের শুনছি,  জান কবজ এ নাকি ব্যথা অনুভূত হয়। একজন নবীকে নাকি আজরাইল সবথেকে সহজ ভাবে জান কবজ করেছিল এবং সেই নবীর কাছে সেই অনুভূতি ছিল, ওহুদ পাহাড় তার বুকে ধারণ করার মত।
জান কবজ করার সময় মুমিন বান্দার জন্য সত্যতা কী?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


মৃত্যু যন্ত্রনা কমবেশি সকলের হবেই।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
وَ جَآءَتۡ سَکۡرَۃُ الۡمَوۡتِ بِالۡحَقِّ ؕ ذٰلِکَ مَا کُنۡتَ مِنۡہُ تَحِیۡدُ ﴿۱۹﴾ 

‘মৃত্যুযন্ত্রণা সত্যই আসবে। এটা হতে তোমরা অব্যাহতি চেয়ে এসেছ।’ (সুরা কাফ, আয়াত : ১৯)

রাসুলুল্লাহ সাঃ যিনি সমস্ত মানবকুলের সেরা,শ্রেষ্ঠ মানুষ। 
তিনি মারা যাওয়ার সময় বলেনঃ
لا إله إلا الله إن للموت سكرات
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। নিশ্চয়ই মৃত্যুর যন্ত্রণা অনেক কঠিন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫১০

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ وَهُوَ بِالْمَوْتِ وَعِنْدَه قَدَحٌ فِيهِ مَاءٌ وَهُوَ يُدْخِلُ يَدَه فِي الْقَدَحِ ثُمَّ يَمْسَحُ وَجْهَه ثُمَّ يَقُولُ: اللّهُمَّ أَعِنِّىْ عَلى مُنْكَرَاتِ الْمَوْتِ أَوْ سَكَرَاتِ الْمَوْتِ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি তাঁর মৃত্যুবরণ করার সময় দেখেছি। তাঁর কাছে একটি পানিভরা বাটি ছিল। এ বাটিতে তিনি বারবার হাত ডুবাতেন। তারপর হাত দিয়ে নিজের চেহারা মুছতেন ও বলতেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মৃত্যু যন্ত্রণায় সাহায্য করো।
(আত্ তিরমিযী ৯৭৮, মুখতাসার আশ্ শামায়িল ৩২৪, ইবনু মাজাহ্ ১৬২৩,মিশকাত ১৫৬৪)

রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যুর হাদীসটির প্রতি লক্ষ্য করিঃ 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مَاتَ النَّبِيُّ ﷺ بَيْنَ حَاقِنَتِىْ وَذَاقِنَتِىْ فَلَا أَكْرَه شِدَّةَ الْمَوْتِ لِأَحَدٍ أَبَدًا بَعْدَ النَّبِيَّ ﷺ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বুক ও চিবুকের মাঝে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর আর কারো মৃত্যু যন্ত্রণাকে আমি খারাপ মনে করি না।
বুখারী ৪৪৪৬, নাসায়ী ১৮৩০, আহমাদ ২৪৩৫৫৪, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১৯৬৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৩৮২৭।

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ

(فَلَا أَكْرَه شِدَّةَ الْمَوْتِ لِأَحَدٍ أَبَدًا بَعْدَ النَّبِيَّ ﷺ ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পর কারও মৃত্য কষ্টকে আর আমি খারাপ মনে করি না। অর্থাৎ মৃত্যুর কষ্টকে আমি অধিক গুনাহের কারণ মনে করতাম আরও ধারণা করতাম এটা হতভাগ্যের চিহ্ন এবং আল্লাহর নিকট লোকটির খারাপ অবস্থা আর এটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পূর্বে আর যখন আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর কষ্ট দেখলাম তখন বুঝতে পারলাম যে, মৃত্যুর কষ্ট হতভাগ্য হওয়া যা খারাপ মানুষ হওয়ার চিহ্ন অথবা খারাপ পরিণতি হবে এমনটি না। কেননা যদি এমনটি হত তাহলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর মৃত্যুর কষ্ট হত না। বরং মৃত্যুর কঠিনতা মর্যাদা বৃদ্ধি ও প্রতিদান বহুগুণে হওয়া আর ব্যক্তিকে গুনাহ হতে পবিত্রকরণের কারণ। আর যখন বিষয়টি এমনই তখন আমি আর কারও মৃত্যুর কষ্টকে খারাপ মনে করি না এটা জানার পর

وقال الحافظ: وفي الحديث أن شدة الموت لا تدل على نقص في المرتبة بل هي للمؤمن إما زيادة في حسناته وإما تكفير لسيئاته
সারমর্মঃ 
মৃত্য যন্ত্রনা মুমিনদের জন্য মর্যাদার কমতির বিষয় নহে,বরং এটি তার নেককে বৃদ্ধি করে,অথবা তার গুনাহ মাফ করে দেয়।



★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত্যু যন্ত্রনা কমবেশি সকলের হবেই।
অবিশ্বাসী ও পাপীদের তুলনায় মুমিনের মৃত্যুযন্ত্রণা অবশ্যই হালকা হবে। আর সবচেয়ে কম মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করবে আল্লাহর রাস্তার শহীদরা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কাউকে পিঁপড়া কামড়ালে যতটুকু কষ্ট অনুভব করো, শহীদের নিহত হওয়ার কষ্ট তার চেয়ে বেশি হবে না।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩১৬১)
,
সুতরাং  সবচেয়ে কম মৃত্যুযন্ত্রণা হবে শহীদের। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...