জবাব,
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের জন্য তার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত ৪৮মাইল বা তদাপেক্ষা বেশী দুরুত্বের সফর করা জায়েয নয়। এর কম হলে জায়েয আছে । তবে সর্বাবস্থায় মাহরাম পুরুষের সাথে সফর করাই উত্তম। আর গাইরে মাহরামদের সাথে সফর করা মারাত্তক গোনাহ।হাদীসে মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের সফরের ব্যপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। -বুখারী শরীফ হা: নং১০৮৬,ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২।
,
সফর কমপক্ষে ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবে। ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়। {আহসানুল ফাতওয়া-৪/৯৫}
,
عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে
এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}
,
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/4033/
عَنْ خَبَّابِ بْنِ الْأَرَتِّ قَالَ شَكَوْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ بُرْدَةً لَهُ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ قُلْنَا لَهُ أَلَا تَسْتَنْصِرُ لَنَا أَلَا تَدْعُو اللَّهَ لَنَا قَالَ كَانَ الرَّجُلُ فِيمَنْ قَبْلَكُمْ يُحْفَرُ لَهُ فِي الْأَرْضِ فَيُجْعَلُ فِيهِ فَيُجَاءُ بِالْمِنْشَارِ فَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ فَيُشَقُّ بِاثْنَتَيْنِ وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِينِهِ وَيُمْشَطُ بِأَمْشَاطِ الْحَدِيدِ مَا دُونَ لَحْمِهِ مِنْ عَظْمٍ أَوْ عَصَبٍ وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِينِهِ وَاللَّهِ لَيُتِمَّنَّ هَذَا الْأَمْرَ حَتَّى يَسِيرَ الرَّاكِبُ مِنْ صَنْعَاءَ إِلَى حَضْرَمَوْتَ لَا يَخَافُ إِلَّا اللَّهَ أَوْ الذِّئْبَ عَلَى غَنَمِهِ وَلَكِنَّكُمْ تَسْتَعْجِلُونَ
hadithঅনুবাদ: হযরত খাব্বাব ইব্ন আরাত (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূল (সা.) এর নিকটে গেলাম তখন তিনি ক্বাবা শরীফের ছায়ায় বসে আরাম করছিলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন না এবং দোয়া করবেন না? (আমরাতো মার খেতে খেতে শেষ হয়ে গেলাম)। আমাদের কথা শুনে রাসূল (সা.) বললেন, তোমাদের আগে যারা এই পৃথিবীতে দ্বীনের দা‘ওয়াত দিতে এসেছিল তাদেরকে (সমাজ শক্তি-রাষ্ট্র শক্তি) ধরত, তাদের জন্য জমিনে গর্ত খনন করা হত, এরপর সে গর্তে তাদেরকে গেড়ে দিত, এরপর করাত আনা হত, সে করাত তার মাথার উপরে রাখা হত, এরপর করাত চালিয়ে জিবিত মানুষটাকে চিরে দ্বিখন্ডিত করে ফেলা হত। এর পরেও তাদেরকে একচুলও আল্লাহর দ্বীন থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে লোহার চিরুনী দিয়ে তাদের শরীরের হাড় থেকে মাংস আলাদা করে ফেলা হত, এর পরেও তাদেরকে দ্বীন থেকে সারানো সম্ভব হয়নি। (ও খাব্বাব শোন!) আমি আল্লাহর নামে কসম করে বলছি, এমন এক সময় আসবে যখন সানা থেকে হাদরামাউত পর্যন্ত মানুষ চলবে, এ মানুষ গুলোর মনের মধ্যে আল্লাহর ভয় ছাড়া আর কোন ভয় থাকবে না। আর মেষ পালের জন্য বাঘের ভয় ছাড়া কোন ভয় থাকবে না। বরং তোমরা বড্ড তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ আল-বুখারী)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!
উপরোক্ত হাদীসটি চরম দুঃখ-কষ্ট ও নির্যাতনে সাহাবায়ে কেরামের মনোবল ও ঈমানকে চাঙ্গা রাখতে রাসুলুল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুনিয়েছেন।বর্ণনা করেছেন, পূর্ববর্তী নবি-রাসুলদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা। যেন সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে শানিত করে। ইসলামের জন্য আত্মদানের রসদ খুঁজে পায় উম্মতে মুসলিমা। সাথে সাথে অদূর ভবিষ্যতে ইসলামের বিজয় আসবে, শান্তি- শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে সমাজের প্রতিটি স্থরে,এমন অনুপ্রেরণা দিতেই নবীজি উক্ত হাদিসটি ব্যক্ত করেছিলেন। সুতরাং এ থেকে নারীদের মাহরাম ছাড়া একাকী ভ্রমণ করা প্রমাণিত হয় না।