بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
দরূদ পাঠকারীদের সুসংবাদ প্রদানে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু
তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন- একদিন হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এলেন। তখন তার চেহারায় আনন্দের আভা দেখা যাচ্ছিল। এসেই বললেন, হজরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসেছিলেন এবং বলে গেলেন- হে মুহাম্মদ!
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আপনি কি এতে সন্তুষ্ট হবেন না যে,
আপনার উম্মতের কেউ আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে আমি তার ওপর ১০ বার
রহমত বর্ষণ করবো। কেউ একবার সালাম পেশ করলে তার প্রতি সালাম পেশ করবো ১০ বার। আল্লাহ
আমাদেরকে বেশি বেশি দরুদ পাঠের তওফিক দিন। (নাসাঈ)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামাতের
দিন সেই ব্যক্তিই আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে যে আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ করে।
(তিরমিজি)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতকে সতর্ক
করে দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তির উপস্থিতিতে আমার নাম উচ্চারিত হবে,
কিন্তু আমার প্রতি দরূদ পাঠ করবে না, সে বড় কৃপণ।
(তিরমিজি)
অপর বর্ণনায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি
আমার প্রতি একবার দরূদ পাঠ করে। আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাযিল করেন, এবং তার দশটি গোনাহ (ছগিরা) মাফ করা হয়, ও তার দশটি মর্যাদা
বৃদ্ধি করা হয়। (নাসাঈ ,মিশকাত)
দরূদ পড়া আল্লাহর নির্দেশ। কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ
তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর রাসুলের প্রতি দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দরূদ পড়ার নির্দেশ
দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
কুরআনুল কারিমে দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা
ঘোষণা করেন-
إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ
عَلَى ٱلنَّبِىِّ ۚ يَٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ صَلُّوا۟ عَلَيْهِ
وَسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবির প্রতি সালাত (রহমত) প্রেরণ
করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবির জন্য সালাত তথা রহমতের দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি বেশি
বেশি সালাম পাঠাও।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)
জুমআর দিন মুমিন মুসলমানের জন্য সেরা পাথেয় হচ্ছে বেশি
বেশি দরূদ পড়া। এমনিতেই দরূদ পাঠকারীর জন্য রয়েছে সুপারিশের ঘোষণা। হাদিসের একাধিক
বর্ণনায় তা প্রমাণিত।
উম্মু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সা.) বলেছেনঃ
من صلى عليَّ حين يصبح عشرا وحين يمسي عشرا
أدركته شفاعتي يوم القيامة
“যে ব্যক্তি সকালে দশ বার ও সন্ধ্যায় দশ বার আমার
উপর সালাত পাঠ করবে, সে কিয়ামতের দিন আমার শাফা’আত লাভ করবে।”
(মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১২০, সহীহুত তারগীব ১/৩৪৫, যাকারিয়্যা, আল-ইখবার, পৃ. ১৫৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিভিন্ন হাদীসে বেশী বেশী দরুদ পাঠ করার প্রতি বিশেষভাবে
গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রশ্নেবর্ণিত হাদীসটির ব্যাপারে কিছু কিছু আলেম দূর্বলতার
কথা বললেও অনেক উলামায়ে কেরাম হাদীসটিকে আমলযোগ্য বলেছেন। আর ফজিলতের ক্ষেত্রে এমন
হাদীসের উপর আমল করাতে কোন সমস্যা নেই।